হিরাম কক্স, ক্যাপ্টেন
Captain Hiram Cox
(১৭৬০-১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দ)


ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন সেনা কর্মকর্তা এবং ব্রিটিশ কূটনীতি। এর নামানুসারে বাংলাদেশের কক্সবাজারের নামকরণ করা হয়েছে।

ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির 'অধ্যাদেশ ১৭৭৩'-এর সূত্রে ওয়ারেন হেস্টিং বঙ্গদেশের গভর্ণর হিসেবে নিয়োগ পান। এই সময় তিনি কোম্পানির বঙ্গদেশের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তের পালোংকিতে সুপারেন্টেন্টট হিসেবে নিয়োগ পান। এই সময় এ অঞ্চলের নাম ছিল পালোংকি। উল্লেখ্য, এর প্রাচীন নাম ছিল বাকোলি।

১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দে বার্মার রাজা ভোদপায়া আরাকান রাজ্য আক্রমণ করেন। এই সময় হাজার হাজার আরাকানী পালিয়ে বাঁকখালি নদীর তীরবর্তী রামু এবং পালোংকিতে অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিল। এই সময় ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষ থেকে হিরাম কক্স শরনার্থীদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন।

তিনি প্রতি পরিবারকে ২.৪ একর জমি এবং ছয় মাসের খাদ্য-সামগ্রী প্রদান করা হয়েছিল। এ সময় ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স পালোংকিতে একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করেন। স্থানীয়দের কাছে এটি কক্স সাহেবের বাজার পরিচিতি লাভ করেছিল। পরে জায়গাটির নাম কক্সবাজার। এই কাজ শেষ করার পূর্বেই তিনি ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর বাঁকখালির তীরে হিরাম কক্সকে সমাহিত করা হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের সে সমাধি বাঁকখালি নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

কূটনীতিবিদ হিসেবে তিনি কিছুদিন বার্মাতে কাজ করেছিলেন। তিনি এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য ছিলেন।  তিনি  এশিয়াটিক সোসাইটির সাময়িকী এশিয়াটিক রিচার্সে এশিয়ার সংস্কৃতির উপর পাণ্ডিত্যপূর্ণ নিবন্ধ লিখেছিলেন। এ ছাড়া তিনি আরাকান শরণার্থী এবং স্থানীয় রাখাইনদের মধ্যে বিদ্যমান সংঘাত নিরসনের চেষ্টা করেন। তিনি দাবার চারজন খেলোয়াড়ের খেলার উৎপত্তি সম্পর্কিত একটি তত্ত্ব প্রকাশ করেছিলেন। কক্স-ফোর্বস তত্ত্ব নামে পরিচিত।
 

সূত্র: