বিশ্বলোকের গল্প
প্রিক্যাম্বরিয়ান পর্ব
তৃতীয় অধ্যায়। দ্বিতীয় ভাগ। তৃতীয় অংশ
স্টেনিয়ান অধিযুগ
(১২০ থেকে ১০০ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)

মেসোপ্রোটারোজোয়িক যুগ-এর তৃতীয় অধিযুগ যুগ। গ্রিক stenos শব্দের অর্থ হলো সংক্ষিপ্ত বা সরু। এর বাংলা হতে পারে 'সংক্ষিপ্ত অধিযুগ'। এই অধিযুগের স্থায়ীত্বকাল বেশ অল্প সময় ছিল বলে, এর এইরূপ নামকরণ করা হয়েছে। এই অধিযুগে নানা ধরনের অধঃক্ষেপ ও আগ্নেয় উপাদান দিয়ে তৈরি হয়েছিল নানা ধরনের শিলা । পরে এই শিলা ও অন্যান্য উপাদানের সমন্বয়ে ভূস্তর তৈরি হয়েছিল।

জীবজগতের ক্রমবিবর্তনের ধারা
আগের অধিযুগের
শৈবাল ব্যাপকভাবে সাগরজলে ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়াটি এই অধিযুগেও সচল ছিল। এর পাশাপাশি প্লান্টি রাজ্যের অন্তর্গত উন্নতর উদ্ভিদের ক্রমবিকাশের ধারাটিও সচল ছিল।

সারা বছর পর্যাপ্ত সূর্যের আলো থাকে এমন সাগরজলের উপরিভাগে  আদিম প্রাক্-প্রাণকেন্দ্রিক কোষ-ভিত্তিক শৈবালগুলো দলবদ্ধভাবে বাস করা শুরু করেছিল। এর ফলে সাগর জলে বিশাল শৈবালক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়েছিল। এর ভিতরে থাকতো আদিম ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস এবং বাইকোন্টা পোডিয়াটা  থাকের ইউনিকোন্টা জাতীয় জীব। সব মিলিয়ে যে জৈব দল তৈরি হয়েছিল, বিজ্ঞানীরা তার নাম দিয়েছেন প্লাঙ্কটন (Plankton)। মূলত প্লাঙ্কটন হলে সমুদ্রে ভাসমান ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া, আর্কিয়া, শৈবাল, ক্ষুদ্রাকার এককোষী ও বহুকোষী উদ্ভিদ ও প্রাণীর দলগত পরিচিয়। জৈবসত্তার প্রকৃতি অনুসারে প্লাঙ্কটনকে নানা ভাবে ভাগ করা হয়। যেমন

এই সময় আগের অধিযুগের সৃষ্ট বাইকোন্টা পোডিয়াটা  থাকের ইউনিকোন্টা জাতীয় জীব এদের সাগর জলে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। এদের ভিতরে বাইকোন্টা থাকের নানা ধরনের শৈবালের বিকাশ অব্যাহত ছিল। অন্যদিকে ১৪০ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে আবির্ভুত ইউনিকোন্টা ও  ভারিসুকালা জীবকুল থেকে নতুন ধারার প্রজাতিসমূহ বিকশিত হচ্ছিল।

প্রায় ১০৩.১-১০০ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে ইউনিকোন্টা দুটি ধারায় বিভাজিত হয়ে গিয়েছিল। এই ধারা দুটি হলো- ওবাজোয়া ও এ্যামিবোজোয়া। ১০০ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে ইউনিকোন্টাদের কিছু কিছু প্রজাতির ভিতর দেহের পরিবর্তন করার ক্ষমতার জন্ম হয়। এরা কখনো কখনো দেহের কোনো অংশ বর্ধিত করে অঙ্গুলির মতো ক্ষণপদ তৈরি করা শুরু করেছিল। এই ক্ষণপদের দ্বারা এরা চলাচল করা এবং খাদ্যগ্রহণের কাজ করতে পারতো। এই সূত্রে সৃষ্টি হয়েছিল আবির্ভুত হয় এ্যামিবোজোয়া থাকের জীব। মূলত এ্যামিবা নামক একোষী জীবের আদি-জীব ছিল সেকালের এ্যামিবোজোয়া থাকের জীবগুলো।

অবশিষ্ট ওবাজোয়া থাক থেকে উদ্ভব হয়েছিল ছত্রাক ও অন্যান্য জীব। এই কারণে ওবাজোয়া থাককে মানুষের উদ্ভবের একটি আদিম ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।


সূত্র :
http://essayweb.net/geology/timeline/mesoproterozoic.shtml
http://en.wikipedia.org/wiki/Mesoproterozoic