নজরুল সঙ্গীত
প্রেম পর্যায়ের গানের তালিকা

সাধারণভাবে সঙ্গীতের প্রেম পর্যায় গান বলতে বুঝায়- নরনারীর আসঙ্গললীপ্সার সাথে সম্পর্কিত গান। প্রেম শব্দের ব্যাপ্তী বহুতর। এই শব্দের মূলে রয়েছে ক্রিয়ামূল- প্রী (প্রীতিভাব)। এই ক্রিয়ামূলের সাথে অ (ক) প্রত্যয় যুক্ত হয়ে তৈরি হয়েছে প্রিয়। আর এই প্রিয় শব্দটি ইমন্ (ইমনিচ্) তদ্ধিত প্রত্যয় যোগে তৈরি হয়েছে প্রেম।

প্রীতির ভাবের সূত্রে বা প্রেম শুধু নরনারীর মধ্যেও ঘটে না। হতে পারে- ঈশ্বর প্রেম, স্বদেশপ্রেম, জীবপ্রেম ইত্যাদি অনেক কিছু। সঙ্গীত-জগতে 'প্রেম পর্যায়' হলো- একটি সাঙ্গীতিক পারিভাষিক  শব্দ। তাই সঙ্গীতের ক্ষেত্রে 'প্রেম' শব্দের ভিতরে অন্য কোনো অর্থ খোঁজার অবকাশ নাই।

একসময় প্রেম পর্যায়ের গানকে আধুনিক গান, কাব্যগীতি ইত্যাদি নামে অভিহিত করা হয়েছে। ভাষা ও সঙ্গীতের ক্রমবিকাশের ধারায় একটি সময়সীমার মধ্যে বাণী ও সুরের বিকাশের সাধারণ নাম আধুনিক। এই আধুনিক হলো সৃজনশীলতার ধারায় প্রাচীন থেকে নতুনের যাত্রাপথের  সর্বশেষ দশায় উত্তোরণের একটি পর্যায়। তাই আজ যা আধুনিক, বিবর্তনে ধারায় তাই হয়ে যাবে পুরানো। বাংলা সাহিত্য ও সঙ্গীতের ধারায় পঞ্চকবিদের রচিত গানকে পুরানো গান হিসেবে আখ্যায়িত করা না হলেও- এঁদের সমকালীন সঙ্গীতকে সাধারণভাবে বাংলা গান হিসেবেই উল্লেখ করা হয়। সুতরাং কাজী নজরুল ইসলামের কোনো কোনো গানের পরিচয় দেওয়া হয়েছিল আধুনিক গান। তাঁর এই গানের  আধুনিকতা সুরের না বাণীর তার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। যদি প্রেমের গানই আধুনিক হয়, তাহলে ভাবের বিচারে প্রেমের বিষয়টিই আধুনিক। নাকি নজরুল প্রেমকে যেভাবে উপস্থাপন করেছিলেন তা ছিল নবতর? এর সমাধান পাওয়া যায় না। তাছাড়া আধুনিক গান শুধু প্রেমেরই হবে এমন কোনো অঙ্গীকার আছে কি?

দ্বিতীয় সমস্যা হলো- নজরুলের কাব্যগীতি পরিচয়ের গান। উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, কাব্য, কাব্যনাট্যম গীতিনাট্য কাব্যগীতি ইত্যাদি সবই হলো সাহিত্যের কাঠামো ভিত্তিক শ্রেণিগত নাম। এর বিষয় হতে পারে স্বদেশ, ভক্তি, প্রকৃতি ইত্যাদি। এরকমই বিশেষ বিষয় হলো প্রেম। তাই সঙ্গীতজগতের প্রেমের গান হলো- নরনারীর পিরিতের (প্রীতি) গান।

খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে ভরত তাঁর নাট্যশাস্ত্রের  'রসবিকল্প' (ষষ্ঠ অধ্যায়)-এর  ৪৬ শ্লোকে উল্লেখ করেছেন- সুখবহুল, প্রিয় বস্তুযুক্ত, ঋতু, মালা প্রভৃতির সেবক ও নরনারীর প্রেমযুক্ত রস শৃঙ্গার নামে অভিহিত হয়। শৃঙ্গারের প্রধান দুটি স্থান হলো- সম্ভোগ ও বিপ্রলম্ভ। নাট্যশাস্ত্রের এগুলোর বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়।

রসের বিচারে প্রেমের গান মাত্রেই শৃঙ্গার রসের গান। এ সকল গানের নর-নারীর মনোবিকারের প্রকাশ ঘটে বিরহ, করুণা, অভিমান, আঘাত, ঈর্ষা ইত্যাদি। তাই নজরুলের প্রেমবিষয়ক গানগুলোকে কয়েকটি উপবিভাগে ভাগ করা হয়েছে।

প্রেম: অভিমান

  1. কত ফুল তুমি পথে ফেলে দাও [তথ্য]
  2. কেন আসিলে ভালোবাসিলে [তথ্য]
  3. কথার কুসুমে গাঁথা [তথ্য]
  4. নীলাম্বরী শাড়ি পরি' নীল যমুনায় কে যায় [তথ্য]
  5. যখন আমার গান ফুরাবে [তথ্য]

প্রেম ও সঙ্গীত


সূত্র: