বন-কুন্তল এলায়ে বন-শবরী ঝুরে সকরুণ সুরে।
বিষাদিত ছায়া তার চৈতালি সন্ধ্যার চাঁদের মুকুরে ॥
চপলতা বিসরি' যেন বন-যৌবন
বিরহ-ক্ষীণ আজি উদাস উন্মন,
তোলে না ঝঙ্কার আর ঝরা পাতার মর্মর নূপুরে॥
যে কুহু কুহরিত মধুর পঞ্চমে বিভোর ভাবে,
ভগ্ন কণ্ঠে তার থেমে যায় সুর করুণ রেখাবে।
কোন্ বন-শিকারির অকরুণ তীর
আলো হ'রে নিল ওই উজল আঁখির -
ফেলে যাওয়া বাঁশি তা'র অঞ্চলে লুকায়ে —
গিরি-দরি-প্রান্তরে খোঁজে সে নিঠুরে॥
'এই রাগিণীতে এলায়িত কুন্তলা বিরহিণী বন-শবরী রূপ অরণ্যাশ্রয়ী লইয়া ফুটিয়া ওঠে বলিয়া ইহার নাম "বনকুন্তলা"। আরোহীতে পঞ্চম ধৈবত অবলম্বন করিয়া স্থিতি বলিয়া ভূপালী হইতে ইহা স্বতন্ত্র শোনায়। আরোহীতে র্সানাধাপা, গা রা সা রা- ইহার প্রধান রূপ, ইহাতেই ইহার অরণ্যাশ্রয়ী করুণ-রূপ ফুটে উঠে।'গানটির স্থায়ীতে পাওয়া যায়, বিরহবিধূর করুণ রস। রাগের বিরহ-করুণ রসের প্রকাশ ঘটেছে বনচারিণী শবরকন্যার বিলাপ এবং সকরুণ সুরে।। শবরকন্যার ব্যথিত মনের বিষাদিত ছায়া চৈতালি সন্ধ্যার চাঁদের আভাকে ম্লান করে দিয়েছে। অশান্ত-যৌবনের চপলতা বিসর্জন দিয়ে আজ সে বিরহ-বিষাদে ম্লান। সে আনমনা উদাস। এখন আর তার পায়ের চপল আঘাতে শুকনো পাতার মর্মর ধ্বনি নূপুর নিক্কনের মতো ঝঙ্কার তোলে না।