ভাবসন্ধান: পরম করুণায় পরমসত্তার কাছে পরমশান্তি লাভের জন্য ভক্তের
প্রার্থনা এই গানে উপস্থাপিত হয়েছে। করুণাপ্রার্থীর ভক্তের এই আত্মনিবেদন
ধ্যানলোকের। যেন ভক্ত ধ্যানলোকের গভীর স্তরে এসে পৌঁছেছেন পরমসত্তার দ্বারে।
যতটা ভক্তির দ্বারা পর্মসত্তাকে পাওয়া যায়, ভক্ত মনে করেন সেখানে তাঁর অপূর্ণতা
রয়েছে। তাই তিনি পরম করুণাময়ের কাছে নিজেকে ভক্তিশূন্য হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন
করেছেন। ভক্তির অপূর্ণতা পূরণের জন্যই করুণাময় প্রভুর কাছে তাঁর প্রথম নিবেদন।
ভক্ত মনে করেন, বিশ্বাস ও ভক্তির নিরিখে পরমসত্তার মহিমান্বিত পতাকা বহনের
যোগ্যতা তাঁর নেই। শক্তিবিহীন অশক্ত হাতে তিনি এই পতাকা বহন করার চেষ্টা করেছেন
মাত্র। তাই পরমসত্তার কাছে তাঁর দ্বিতীয় নিবেদন, যেন তিনি তাঁর মহিমান্বিত পতাকা
বহনের শক্তি দান করে- পতাকা বহনের গৌরব দান করেন। ভক্তের তৃতীয় প্রার্থনা যেন
তিনি জীবনের অস্তলগ্নে পরমসত্তার মহিমাকে সূর্যের জ্যোতির মতো চারিদিক ছড়িয়ে
দিতে যেতে পারেন। ভক্তের কামনা, যেন তাঁর করুণায় তাঁর হৃদয় হয়ে ওঠে সাঁঝে-আকাশে পূর্ণিমা চাঁদের
জ্যোছনার মতো। পরম করুণাময়ের কৃপায় তাঁর জ্ঞানহীন অন্ধকার হৃদয় রঞ্জিত হোক
পর্মসত্তার প্রতি প্রেমের জ্যোছনাসম আলোকবন্যায়।
রচনাকাল ও স্থান:
গানটির সুনির্দিষ্ট রচনাকাল পাওয়া যায় না। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের জুন (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪১)
মাসে, এইচএমভি প্রথম এই গানটির রেকর্ড প্রকাশ করে।
শিল্পী ছিলেন গণি মিঞা (ধীরেন্দ্রনাথ
দাস)। এই সময়
নজরুল ইসলামের
৩৫ বৎসর ১
মাস।
গ্রন্থ: নজরুল-সংগীত সংগ্রহ [রশিদুন্ নবী সম্পাদিত। কবি নজরুল
ইন্সটিটিউট। তৃতীয় সংস্করণ দ্বিতীয় মুদ্রণ, আষাঢ় ১৪২৫। জুন ২০১৮। গান সংখ্যা
১২০০।