বিষয়: নজরুল সঙ্গীত
শিরোনাম: খোদার প্রেমের
শরাব পিয়ে বেহুঁশ হয়ে রই প'ড়ে
খোদার প্রেমের শরাব পিয়ে বেহুঁশ হয়ে রই প'ড়ে
ছেড়ে' মস্জিদ আমার মুর্শিদ এলো যে এই পথ ধ'রে
(হায়)॥
দুনিয়াদারির শেষে আমার নামাজ রোজার
বদ্লাতে
চাইনে বেহেশ্ত্ খোদার কাছে নিত্য মোনাজাত ক'রে॥
কায়েস যেমন লাইলী লাগি' লভিল মজনু খেতাব
যেমন ফরহাদ শিরির প্রেমে হ'ল দিওয়ানা বেতাব।
বে-খুদীতে মশ্গুল্ আমি তেমনি মোর খোদার তরে॥
- ভাবার্থ: গানটি সুফি দর্শনে শরাব হলো- আল্লার ধ্যানে মাতোয়ারা হওয়ার
উপকরণ। খোদাকে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় সুফি কবি আল্লার ধ্যানে পার্থিব জ্ঞান হারিয়ে
বেঁহুশ (জ্ঞানহারা) হয়ে যান। সত্য ও ন্যায়ের পথে থেকে আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার
জন্য বেঁহুশ দশাকে সুফিবাদীরা বলেন -ফানা-ফিল্লাহ'। এই বেঁহুশ দশায় সাধক জ্যোতির্ময়
আল্লার সান্নিধ্য পান। এই পথ ধরেই প্রথাগত মসজিদের প্রার্থনা ছেড়ে- তাঁর মুরশিদ (আধ্যত্মিক
শিক্ষাগুরু) আসেন। সাধারণ ধার্মিকরা নামাজ-রোজা পূণ্যের মাধ্যমে খোদার কাছে মৃত্যুর
পর বেহেশতে যাওয়ার প্রার্থনা করে। সুফি কবি শুধুই আল্লার সান্নিধ্য চান, তাই তাঁর
কাছে পরকালে কোনো কিছু পাওয়ার লোভ নেই।
খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর নাজদি বেদুইন কবি কায়েস ইবনুল মুলাওয়া এবং তার প্রেমিকা
লায়লা বিনতে মাহদীর প্রেমনির্ভর লোকগাঁথা। লাইলি-পরবর্তী সময়ে লায়লা আল আমিরিয়া নামে
পরিচিত হন। আর কায়েস পরিচিত হন মজনু নামে। এই গানের সুফি কবি আল্লার প্রেমে পাগল
নামে অভিহিত হতে চান।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের
১৫ অক্টোবর (শনিবার ২৯ আশ্বিন ১৩৩৯), 'জুলফিকার'
নামক গীতি-গ্রন্থে
গানটি প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল। এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৩ বৎসর ৪ মাস।
- গ্রন্থ:
- জুলফিকার
- প্রথম সংস্করণ। ১৫ অক্টোবর ১৯৩২ (শনিবার ২৯ আশ্বিন ১৩৩৯)। ১৬ সংখ্যক গান।
মাঢ় মিশ্র।
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। চতুর্থ খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ
১৪১৪, মে ২০০৭। জুলফিকার। ১৬ সংখ্যক গান। পাহাড়ী-কার্ফা। পৃষ্ঠা: ৩০০-৩০১।
- রেকর্ড:
টুইন। মে ১৯৩৪ (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৪১) এফটি ৩২১৭।
আব্বাসউদ্দীন আহমদ।
[নমুনা]
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
সুধীন দাশ।
নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি তৃতীয় খণ্ড(নজরুল ইন্সটিটিউট)। ১১ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ৬৪-৬৬]
[নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ভক্তি (ইসলামী গান)
- সুরাঙ্গ:
গজল
- রাগ: মাড়
(মাঢ়)
- তাল:
কাহারবা
- গ্রহস্বর: পা