ভাষাংশ
রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর
-এর
রচনাবলী
রচনাবলী সূচি
চিত্রাঙ্গদা
ভূমিকা
প্রভাতের আদিম আভাস অরুণবর্ণ আভার আবরণে।
এই
নাট্যকাহিনীতে আছে—
প্রথমে প্রেমের বন্ধন মোহাবেশে,
পরে
তার মুক্তি সেই কুহক হতে
সহজ সত্যের
নিরলংকৃত মহিমায়॥
মণিপুররাজের
ভক্তিতে তুষ্ট হয়ে শিব বর দিয়েছিলেন যে তাঁর বংশে কেবল পুত্রই জন্মাবে। তৎসত্ত্বেও
যখন রাজকুলে চিত্রাঙ্গদার জন্ম হল তখন রাজা তাঁকে পুত্ররূপেই পালন করলেন। রাজকন্যা
অভ্যাস করলেন ধনুর্বিদ্যা, শিক্ষা করলেন যুদ্ধবিদ্যা, রাজদণ্ডনীতি।
অর্জুন
দ্বাদশবর্ষব্যাপী ব্রহ্মচর্যব্রত গ্রহণ করে ভ্রমণ করতে করতে এসেছেন মণিপুরে। তখন এই
নাটকের আখ্যান আরম্ভ।
মোহিনী মায়া এল,
এল যৌবনকুঞ্জবনে।
এল হৃদয়শিকারে,
এল গোপন পদসঞ্চারে,
এল স্বর্ণকিরণবিজড়িত অন্ধকারে।
পাতিল ইন্দ্রজালের ফাঁসি,
হাওয়ায় হাওয়ায় ছায়ায় ছায়ায়
বাজায় বাঁশি।
করে বীরের বীর্যপরীক্ষা,
হানে সাধুর সাধনদীক্ষা,
সর্বনাশের বেড়াজাল
বেষ্টিল চারি ধারে।
এসো সুন্দর নিরলংকার,
এসো সত্য নিরহংকার—
স্বপ্নের দুর্গ হানো,
আনো, আনো মুক্তি আনো—
ছলনার বন্ধন ছেদি
এসো পৌরুষ-উদ্ধারে॥