বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
পাত্রখানা
যায় যদি যাক ভেঙেচুরে
পাঠ ও পাঠভেদ:
পাত্রখানা যায় যদি যাক ভেঙেচুরে—
আছে অঞ্জলি মোর, প্রসাদ দিয়ে দাও-না পূরে ॥
সহজ সুখের সুধা তাহার মূল্য তো নাই,
ছড়াছড়ি যায় সে-যে ওই যেখানে চাই—
বড়ো-আপন কাছের জিনিস রইল দূরে।
হৃদয় আমার সহজ সুধায় দাও-না পূরে ॥
বারে বারে চাইব না আর মিথ্যা টানে
ভাঙন-ধরা আঁধার-করা পিছন-পানে।
বাসা বাঁধার বাধঁনখানা যাক-না টুটে,
অবাধ পথের শূন্যে আমি চলব ছুটে।
শূন্য-ভরা তোমার বাঁশি সুরে সুরে
হৃদয় আমার সহজ সুধায় দাও-না পূরে ॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: [RBVBMS 111] [নমুনা]
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: এই গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। এই গানটির মূল পাঠ পাওয়া যায়, রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি
RBVBMS 111
-র
১২৯
পৃষ্ঠায়। কিন্তু এর সাথে
রচনাকাল বা স্থানের উল্লেখ নেই।
এই পাণ্ডুলিপির ১২৭ পৃষ্ঠায় 'The
Lamp is trimmed'
কবিতাটির সাথে তারিখ উল্লেখ আছে
'৩১
জানুয়ারি [১৮ মাঘ]'।
এই বিচারে
ধারণা করা যায় গানটি ১৮ই মাঘের পরে রচিত।
এই সময়
রবীন্দ্রনাথের
বয়স ছিল ৫৬ বৎসর ৯-১০ মাস।
আবার এই পাণ্ডুলিপির
৮৪ পৃষ্ঠায় পাওয়া যায়, 'আজি
বিজন ঘরে নিশীথরাতে আসবে যদি শূন্যহাতে' গানটি। পাণ্ডুলিপি অনুসারে ধারণা করা যায়,
আলোচ্য গানটি 'আজি
বিজন ঘরে...' আগে রচিত। সীতাদেবী তাঁর পূণ্যস্মৃতি গ্রন্থে
(বিশ্বভারতী, অগ্রহায়ণ ১৪২২, পৃষ্ঠা ১২৭) এই গানটি সম্পর্কে লিখেছেন—
"শ্রীপঞ্চমীর দিন [৩ ফাল্গুন শুক্রবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি] ছেলেরা দল বাঁধিয়া সুরুলে বনভোজন করিতে চলিল। রবীন্দ্রনাথও বিকালে সেখানে যাইবেন শুনিয়া আমরা মেয়ের দলও উৎসাহ করিয়া চলিলাম।... তাহার পর কবি যেখানে বসিয়া ছিলেন সেইখানে গিয়া উপস্থিত হইলাম। তিনি আমাদের আকস্মিক আবির্ভাবে কিঞ্চিৎ বিস্মিত হইয়াছিলেন বোধ হয়, যাহা হউক, হাসিমুখেই বসিতে বলিলেন। নিজের দুই-একটি কবিতা পড়িয়া শুনাইলেন, তাহার পর শুরু হইল গানের পালা। পণ্ডিত ভীমরাও শাস্ত্রী কয়েকটি হিন্দী গান করিলেন, তাহার পর 'ফাল্গুনী' উজাড় করিয়া বসন্তের গান চলিল। 'আজি বিজন ঘরে নিশীথরাতে আসবে যদি শূন্যহাতে' গানটি কবি সেইদিনই রচনা করিয়াছিলেন বোধ হয়, সর্বশেষে সেই গানটি তিনি একলা গাহিয়া শুনাইলেন।"
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, তাঁর
গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচী গ্রন্থে গানটির রচনাকাল উল্লেখ করেছেন-
আশ্বিন ১৩২৫। এই বিচারে গানটির রচনাকালের সময়
রবীন্দ্রনাথের
বয়স ছিল ৫৭ বৎসর ৫ মাস।
[রবীন্দ্রনাথের
৫৭ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সে রচিত গানের তালিকা]
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
গীতপঞ্চাশিকা (বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩২৫)। ৪৬ সংখ্যক গান।
দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ (বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ)। ১৩২৫ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত 'গীতপঞ্চাশিকা' থেকে গৃহীত হয়েছিল। পৃষ্ঠা: ৫৬৪-৫৬৫। [নমুনা: প্রথমাংশ, শেষাংশ]
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ ( (বিশ্বভারতী, মাঘ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)। প্রার্থনা ৫। পৃষ্ঠা: ৪১। [নমুনা]
অখণ্ড, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দ)। পর্যায়: পূজা ৯৬। উপবিভাগ: প্রার্থনা-৫। পৃষ্ঠা: ৪৪-৪৫।
স্বরবিতান ষোড়শ
(১৬,
গীতপঞ্চাশিকা।
আশ্বিন
১৪১৩)
খণ্ডের ৪৬ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ১৫৮-৬১।
প্রকাশের কালানুক্রম:
১৩২৫ বঙ্গাব্দে গানটি
গীতপঞ্চাশিকা
নামক গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত
হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল।
১৩৩৮
বঙ্গাব্দে প্রকাশিত গীতবিতানের দ্বিতীয় খণ্ডের
প্রথম
সংস্করণে গানটি 'গীতপঞ্চাশিকা
' থেকে গৃহীত হয়। এরপর
১৩৪৮ বঙ্গাব্দে গানটি গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয়
সংস্করণে পূজা পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়। ১৩৮০
বঙ্গাব্দের পৌষ মাসে
অখণ্ড গীতবিতানের তৃতীয় এবং সর্বশেষ সংস্করণে গানটি
পূজা
পর্যায়ের ৯৬ সংখ্যক গান অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
স্বরবিতান ষোড়শ (১৬, গীতপঞ্চাশিকা। আশ্বিন ১৪১৩) খণ্ডে গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিটি ৩।৩ মাত্রা ছন্দে 'দাদরা' তালে নিবদ্ধ।
রাগ: ভৈরবী। তাল: দাদরা। [রবীন্দ্রসংগীত : রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। (প্যাপিরাস, ডিসেম্বর, ২০০৬)। পৃষ্ঠা: ৬৪ ]
রাগ:
ভৈরবী। তাল:
দাদরা।
[রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী,
জুলাই ২০০১, পৃষ্ঠা:
৫৭।]
[ভৈরবী রাগে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
[দাদরা
তালে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
গ্রহস্বর: দা।
লয়: মধ্য।