শ্রবণ নমুনা:
বিষয়: রবীন্দ্রসঙ্গীত
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:প্রথম যুগের উদয়দিগঙ্গনে
পাঠ ও পাঠভেদ:

         ভূমিকা
প্রথম যুগের উদয়দিগঙ্গনে
        প্রথম দিনের উষা নেমে এল যবে
প্রকাশপিয়াসি ধরিত্রী বনে বনে
        শুধায়ে ফিরিল সুর খুঁজে পাবে কবে॥
এসো এসো সেই নবসৃষ্টির কবি
নবজাগরণযুগপ্রভাতের রবি

গান এনেছিলে নব ছন্দের তালে
তরুণী উষার শিশিরস্নানের কালে
        আলো-আঁধারের আনন্দবিপ্লবে॥
 
সে গান আজিও নানা রাগরাগিণীতে
শুনাও তাহারে আগমনীসঙ্গীতে
        যে জাগায় চোখে নূতন-দেখার দেখা।
যে এসে দাঁড়ায় ব্যাকুলিত ধরণীতে
বননীলিমার পেলব সীমানাটিতে,
        বহু জনতার মাঝে অপূর্ব একা।
অবাক আলোর লিপি যে বহিয়া আনে
নিভৃত প্রহরে কবির চকিত প্রাণে,
নব পরিচয়ে বিরহব্যথা যে হানে
        বিহ্বল প্রাতে সঙ্গীতসৌরভে
                দূর আকাশের অরুণিম উৎসবে॥

          নবজাতক/'উদ্বোধন'

প্রথম যুগের উদয় দিগঙ্গনে
        প্রথম দিনের ঊষা নেমে এল যবে
প্রকাশ-পিয়াসি ধরিত্রী বনে বনে
        শুধায়ে ফিরিল সুর খুঁজে পাবে কবে॥
আমি বুঝি সেই নবসৃষ্টির কবি
নবজাগরণ যুগ-প্রভাতের রবি
,
গান এনেছিনু নব ছন্দের তালে
তরুণী ঊষার শিশির স্নানের কালে,
        আলো আঁধারের আনন্দ বিপ্লবে॥
 
সে গান আজিও নানা রাগ রাগিণীতে
শুনাই তাহারে আগমনী সঙ্গীতে
        যে জাগায় চোখে নূতন দেখার দেখা।
যে এসে দাঁড়ায় ব্যাকুলিত ধরণীতে
বন নীলিমার পেলব সীমানাটিতে,
        বহু জনতার মাঝে অপূর্ব একা।
                অবাক্ আলোর লিপি যে বহিয়া আনে
                নিভৃত প্রহরে কবির চকিত প্রাণে,
                নব পরিচয়ে বিরহব্যথা যে হানে
                        বিহ্বল প্রাতে সঙ্গীত সৌরভে
                        দূর আকাশের অরুণিম উৎসবে ॥
১৩।১০।৩৮
শান্তিনিকেতন

প্রবাসী (জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৭ বঙ্গাব্দ), ২২১ পৃষ্ঠায় গানটি 'কষ্টিপাথর' অংশে 'উদ্বোধন' শিরোনামে এই গানটি প্রকাশিত হয়। এই পাঠটি বর্তমান পাঠের চেয়ে কিছুটা ভিন্নতর। পত্রিকায় প্রকাশিত এই পাঠটি নিচে দেওয়া হলো।
 

            উদ্বোধন
    শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

শুকতারকার প্রথম প্রদীপ হাতে
অরুণ-আভাস-জড়ানো ভোরের রাতে
আমি এসেছিনু তোমারে জাগাব বলে
            তরুণ আলোর কোলে,

 

যে জাগার জাগে পূজার শঙ্খধ্বনি,
বনের ছায়ায় লাগায় পরশমণি,

        যে জাগায় মোছে ধরার মনের কালি
                মুক্ত করে সে পূর্ণ মাধুরী-ডালি


জাগে সুন্দর জাগে নির্মল জাগে আনন্দময়ী

               
জাগে জড়ত্বজয়ী।
  জাগো সকলের সাথে
        আজি এ সুপ্রভাতে
  বিশ্বজনের প্রাঙ্গণতলে লহ আপনার স্থান

        তোমার জীবনে সার্থক হোক
                নিখিলের আহ্বান।

এই পাঠটি সম্পর্কে রবীন্দ্ররচনাবলী চতুর্বিংশ খণ্ডের (বিশ্বভারতী, ‌বৈশাখ ১৩৯৩) ৪৬৬ পৃষ্ঠায়- উল্লেখ আছে

"...'উদ্বোধন' কবিতাটির যে পাঠ সাময়িক পত্রে প্রকাশিত হইয়াছিল তাহা অপেক্ষাকৃত সংক্ষিপ্ত ছিল। উক্ত পাঠ অনুসারে, নিম্নোদ্ধৃত নূতন চারিটি ছত্রের অনুবৃত্তিস্বরূপ নবজাতকে মুদ্রিত পাঠের শেষ একাদশ ছত্র (পৃষ্ঠা ৭) পড়িতে হইবে

              শুকতারকার প্রথম প্রদীপ হাতে

              অরুণ-ভাস-জড়ানো ভোরের রাতে

              মি এসেছিনু তোমারে জাগাব ব'লে

                            তরুণ লোর কালে

কবিতাটির আরম্ভের কুড়িটি ছত্র, রবীন্দ্রসদনে-রক্ষিত পাণ্ডুলিপি অনুসারে, ১৯৩৮ সালের ১৩ অক্টোবর তারিখে শান্তিনিকেতনে স্বতন্ত্র কবিতা কারে প্রথম লিখিত হইয়াছিল বলিয়া মনে হয়। সে কারে উহা দ্বিতীয় সংস্করণ গীতবিতান-এর 'ভূমিকা' রূপে মুদ্রিত হইয়াছিল।''


সর্বশেষ সংস্করণ : ১৭ পৌষ ১৩২৪ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬ বঙ্গাব্দ