গণফোরাম
সূত্র: বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন
http://www.ecs.gov.bd/Bangla

নিবন্ধন নম্বর

০২৪

নিবন্ধন তারিখ

১৩/১১/২০০৮

প্রতীক

উদীয়মান সূর্য

প্রতীক নমুনা

সভাপতি

ড. কামাল হোসেন

সাধারণ সম্পাদক

মোস্তফা মোহসীন মন্টু

কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা

ইডেন কমপ্লেক্স, ২/১-এ, আরামবাগ, ঢাকা-১০০০

ফোন

৭১৯৪৮৯৯

ফ্যাক্স

৭১৯৩৯৯১

ইমেইল

gonoforumbd@yahoo.com

গণফোরাম  
বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দল।

১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের ৬ ডিসেম্বর গণ-আন্দোলনের মুখে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হন। পরে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে এবং সমর্থনে তিন দফা রূপরেখা অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তারিখে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে বিএনপি (১৪২টি) সর্বাধিক আসনে জয়লাভ করে। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে আসন পেয়েছিল ৮৮টি। জামায়েত-ই-ইসলামীর সমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করে। মূলত এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সামরিক শাসন মুক্ত হয়।

নির্বাচনের পর, শেখ হাসিনা নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ আনলেও ড. কামাল হোসেন তখন বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। এর জের ধরে ড. কামাল হোসেন দলীয় নেতকর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। কিন্তু দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেয়া এক চিঠিতে ড. হোসেন নির্বাচনে পরাজয়ের পেছনে দলীয় কোন্দল এবং অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কথা তুলে ধরেন। এর ফলে তার এবং শেখ হাসিনার মধ্যকার দূরত্ব অনেকটা প্রকাশ্য হয়ে উঠে।

১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে ড: কামাল হোসেন গণতান্ত্রিক ফোরামের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, ড. মোজাফফর আহমেদ, প্রফেসর রেহমান সোবহান, প্রফেসর জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী,ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামসহ আরো অনেকে। এই গণতান্ত্রিক ফোরাম নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে বেশ অস্বস্তি ছিল। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হবার পরেও কেন ড. হোসেন গণতান্ত্রিক ফোরাম গঠন করলেন সেটি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। এই সময় কামাল হোসেন  গণতান্ত্রিক ফোরামকে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেন।
 
১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ এবং ২০ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে কাউন্সিলে জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। কিন্তু দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যের পদ থেকে বাদ পরেন ড: কামাল হোসেন।

১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দের অগাস্ট মাসের শেষে  গণতান্ত্রিক ফোরামের তিন-ব্যাপী জাতীয় মহাসম্মেলন আহবান করে। ২৯ আগষ্ট কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেন। তাঁর পদত্যাগের চিঠি দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়। এ সম্মেলনের মাধ্যমে ২৯ আগস্ট রাজনৈতিক দল গণফোরাম গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়। এর ভিতর দিয়ে আওয়ামী লীগের অতি ক্ষুদ্র একটি অংশ পৃথক হয়ে যায়।

১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৫শে ফেব্রুয়ারি  ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, এই দলটি ১০৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, মোট ভোট পেয়েছিল ৫৪,২৫০টি ভোট।

২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই দলটি ১৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, মোট ভোট পেয়েছিল ৮৪৯৪টি ভোট।

২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে, ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট মাসে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। এই ঐক্যফ্রন্ট গঠনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিকল্পধারা  বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। ওই সময়ে এর সাথে জোটে যুক্ত হয়েছিল ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যমঞ্চ ও
নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী’র তরিকত ফেডারেশন। ডিসেম্বর মাসে এ ফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যায় তরিকত ফেডারেশন। এর কিছুদিন পর বেরিয়ে যান ড. কামাল হোসেন। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনর আগে বি চৌধুরী আওয়ামী লীগের সঙ্গে এক মঞ্চে উঠলেও জোটে স্থান হয়নি তার।

২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই দলটি ৩৮টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, মোট ভোট পেয়েছিল ৭২৯১১টি ভোট।

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় একাদশ জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনের জন্য পুনরায় জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার চেষ্টা করে। এই বছরের ১৩ই অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে আহ্বায়ক করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন জোটের ঘোষণা করা হয়। এই সময় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এর নেতারা ৭ দফা দাবী এবং ১১ দফা লক্ষ্য তুলে ধরেন। তবে মতপার্থক্য থাকায়
বিকল্পধারা  বাংলাদেশ দল ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যায়।

এই নির্বাচনে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন- জামাতের অংশভাগী হ‌ওয়ার জন্য। এছাড়া সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার, পুলিশবাহিনীকে অশালীন বাক্যে অপমান করা জন্য নিন্দিত হন। এই দলটি ঐক্যফ্রন্টের অংশ হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে ২টি আসন লাভ করেছিল।


সর্বশেষ তথ্য সংযোজন: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।