লামা
চট্টগ্রাম [বাংলাদেশ] বিভাগের বান্দরবান জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।

লামা শব্দটির উৎপত্তি নিয়ে মতভেদ আছে। কোনো কোনো মতে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক শব্দ 'লামা'দের অর্থ হলো- 'ভাটি অঞ্চল'। পার্বত্য নদী মাতামুহুরী নদীর ভাটিতে এই অঞ্চল অবস্থিত বলে এর এরূপ নামকরণ করা হয়েছিল। অন্য মতে- লামামুখ এলাকায় আহলামা নামক এক সম্ভ্রান্ত মার্‌মা পরিবার বাস করতো। এই পরিবারের প্রভাব প্রতিপত্তিতে স্থানীয় লামাখাল, লামা বাজার ইত্যাদির নামকরণ করা হয়েছিল। কালক্রমে এই সূত্রে এই অঞ্চলের নাম লামা হয়েছে।

ভৌগোলিক অবস্থান: বান্দরবান সদর উপজেলা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৯২ কিলোমিটার। এর ভৌগোলিক অবস্থান ২১°৪৬'৩০'' উত্তর অক্ষাংশ  ৯২°১২' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। এর দক্ষিণে নাইক্ষ্যাংছড়ি উপজেলা, দক্ষিণ-পূর্বে আলীকদম উপজেলা, পূর্বে থানচি ও রুমা উপজেলা, উত্তরে
বান্দরবান সদর উপজেলা ও চট্টগ্রাম জেলার লোহাগড়া উপজেলা এবং পশ্চিমে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা।

আয়তন: ৬৭১.৮৪ বর্গ কিলোমিটার।

প্রশাসন: ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে এই লামা থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে থানাকে উপজেলায় পরিণত করা হয়।
এই উপজেলাটি মোট ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এগুলো হলো-  গজালিয়া, লামা সদর, ফাঁসিয়াখালী, আজিজনগর, সরই, রূপসীপাড়া এবং ফাইতং।

জনসংখ্যা: ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে জনগণনা অনুসারে এই উপজেলার জনসংখ্যা ১,১৩,৪১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫৮,৯০৪ জন এবং মহিলা ৫৪,৫০৯ জন। মোট জনসংখ্যার ৭০.৫২% মুসলিম, ০.৩১% হিন্দু, ১৯.৬৬% বৌদ্ধ এবং ৯.৫১% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। এ উপজেলায় মার্মা, ত্রিপুরা, মুরং, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা ও খেয়াং উপজাতির বসবাস রয়েছে

সংসদীয় আসন: ৩০০ পার্বত্য বান্দরবান।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই উপজেলায় ছিল- ১টি ডিগ্রী কলেজ, ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫টি দাখিল মাদ্রাসা, ৩টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

ইতিহাস
লামার উল্লেখযোগ্য তেমন প্রাচীন ইতিহাস নেই। পাহাড় এবং গভীর অরণ্যের জন্য এই অঞ্চল মূলত দুর্গম ছিল। এক সময় এই অঞ্চল আরাকান অঞ্চলের অধীনস্থ ছিল। তাই আরকানের রাজনৈতিক উত্থানপতনের সাথে এই উপজেলা গভীরভাবে সম্পর্কিত।
     [দেখুন  রাকান রাজ্য]


তথ্যসূত্রঃ
১. http://lama.bandarban.gov.bd/