থানচি
চট্টগ্রাম [বাংলাদেশ] বিভাগের বান্দরবান জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।

মার্মা শব্দ থাইন চৈ-এর অর্থ হলো- বিশ্রাম স্থান। ধারণা করা হয়, ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের আগে নৌপথে চলাচলকারীরা এই স্থানে এসে বিশ্রাম নিতেন। সেই সূত্রে এই মার্মারা অঞ্চলকে থাইন চৈ বলতো। পরে এই স্থানটির নাম থানচি হয়েছে।

ভৌগোলিক অবস্থান: ২১°২৫'-২১°৫৭' উত্তর অক্ষাংশ ৯২°২০'-৯২°৪১' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। বান্দরবান জেলা সদর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৮৫ কিলোমিটার। এর উত্তর-পূর্বে
রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলা, উত্তরে রুমা উপজেলা, পশ্চিমে লামা, আলীকদম উপজেলা, মিয়ানমারের রাখাইন ও চীন প্রদেশ, দক্ষিণে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশঅবস্থিত।

আয়তন: ১০২০.৮২ বর্গকিলোমিটার।

নদনদী ও খাল বিল: এই উপজেলার ভিতর দিয়ে সাঙ্গু নদী প্রবাহিত হয়েছে। এছাড়া এই উপজেলায় রয়েছে সাঙ্গু নদীর উপনদী রেমাক্রী খাল।


জনসংখ্যা ও জাতি সত্তা: ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই উপজেলার জনসংখ্যা ২৭,৫৮৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৫,৩৪১ জন এবং মহিলা ১২,২৪৫ জন। মোট জনসংখ্যার ৭.৬৫% মুসলিম, ২.২৬% হিন্দু, ৫৪.৬৮% বৌদ্ধ, ২৬.৭৫% খ্রিস্টান এবং ৮.৬৬% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। এ উপজেলায় মার্মা, চাকমা, খেয়াং, ত্রিপুরা, খুমী, খিও, ম্রো ও বম উপজাতি গোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

উপাসনালয়: এই উপজেলায় রয়েছে ২টি মসজিদ, ২টি মন্দির, ৩১টি বিহার এবং ২৯টি গীর্জা রয়েছে।

অর্থকরী ফসল:
তিল, ভুট্টা, চিনা বাদাম, সরিষা, মসূর, আলু, মিষ্টি আলু, বারমাসি শিম, ঢেরস, বেগুন, পাহাড়ী মরিচ ইত্যাদি। মসল্লা জাতীয় ফসলের মধ্যে যেমন- আদা, হলুদ, পেঁয়াজ, রসুন, তেজপাতা, ধনিয়া, মরিচ, বিলাতি ধনিয়া ইত্যাদি।

প্রাকৃতিক সম্পদ: বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, বাঁশ, বেত, পাথর বালি ইত্যাদি।
প্রাণিজ সম্পদ: গরু, ছাগল, হরিণ, ভাল্লুক, বানর, শুকর, গয়াল, হাতি, নেকড়ে বাঘ, চিতা বাঘ, ইত্যাদি।

যোগাযোগ:
থানচি উপজেলার সাথে প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম বাস। বান্দরবানের সাথে এই উপজেলার সাথে প্রধান সড়ক হল বান্দরবান-থানচি সড়ক। রাস্তাটি পাকা এবং এর দৈর্ঘ্য ৩৩ কিলোমিটার।

প্রশাসন: বর্তমানে এই উপজেলাটিতে ৪টি ইউনিয়ন রয়েছে। এগুলো হলো- রেমাক্রী, তিন্দু, থানচি সদর ও বলিপাড়া।

ইতিহাস: মার্মা জনগোষ্ঠী প্রধান এই এলাকা প্রাচীন আরাকান রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে বার্মা-ব্রিটিশ যুদ্ধের পর থানচি এলাকা ব্রিটিশ ভারতের রাকান রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দের রেগুলেশান-১ অনুসারে থানচি পার্বত্য চট্টগ্রামের অংশে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে এই অঞ্চল, পূর্ব-পাকিস্তানের ইউনিয়ন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর  ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে থানচি থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে এই থানাকে উপজেলায় পরিণত করা হয়।

সংসদীয় আসন: ৩০০ পার্বত্য বান্দরবান। ভোটার সংখ্যা ১৪০০০।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: ০২টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

দর্শনীয় স্থান:


তথ্যসূত্রঃ