নাইক্ষ্যাংছড়ি

চট্টগ্রাম [বাংলাদেশ] বিভাগের বান্দরবান জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। ভৌগোলিক অবস্থান ২১°২৪'৪৪'' উত্তর দ্রাঘিমাংশ ৯২°১০'৫২'' পূর্ব অক্ষাংশ এর উত্তর-পূর্বে আলীকদমলামা উপজেলা, উত্তরে লামা রামু উপজেলা, পশ্চিমে চকরিয়া রামু এবং উখিয়া উপজেলা দক্ষিণ-পূর্বে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ অবস্থিত।

প্রশাসন
১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে এই নাইক্ষ্যাংছড়ি থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে থানাকে বান্দরবান জেলার উপজেলায় পরিণত করা হয়। এই উপজেলাটি মোট নাইক্ষ্যংছড়ি সদর, বাইশারী, ঘুমধুম, দোছড়ি ও সোনাইছড়ি।

সংসদীয় আসন: ৩০০ পার্বত্য বান্দরবান।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই উপজেলায় ছিল- ১টি ডিগ্রী কলেজ, ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫টি দাখিল মাদ্রাসা, ৩টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

দর্শনীয় স্থান:
এই উপজেলার প্রধান সৌন্দর্য হলো এর অরণ্যবেষ্টিত পাহাড় আর প্রাকৃতিক ঝর্নাসমূহ।
১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের পশ্চিমে মহাজনঘোনা এলাকা (লেকেরপাড়) পাহাড়ের চূড়ায় কৃত্রিম বাধঁ দিয়ে হ্রদ গড়ে তোলা হয়। এ হ্রদটিকে ঘিরে গড়ে ওঠেছে 'উপবন পর্যটন কেন্দ্র'। এই হ্রদের উপর রয়েছে একটি ঝুলন্ত সেঁতু। এছাড়া দেশের এক মাত্র বৃহৎ গয়াল প্রজনন কেন্দ্র এই উপজেলায় অবস্থিত।

ইতিহাস
উখিয়ার উল্লেখযোগ্য তেমন প্রাচীন ইতিহাস নেই। পাহাড় এবং গভীর অরণ্যের জন্য এই অঞ্চল মূলত দুর্গম ছিল। এই কারণে এই অঞ্চলে লোকবসতিও তেমন গড়ে উঠেন। যতদূর জানা যায়, এই দুর্গম অঞ্চলে প্রথম বসতি স্থাপন করেছিল মার্মা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ। এরা স্থানীয় একটি পাহাড়ের নাম দিয়েছিল নাঞাটং। উল্লেখ্য নাঞা অর্থ দেবতা বা ভুত আর টং অর্থ হলো পাহাড়। মার্মাদের বিশ্বাস ছিল যে- ওই পাহাড়ে দেবতা বা ভুত থাকে। আর এর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের নাম দিয়েছিল নাঞাস্চং। মার্মা ভাষায় স্চং শব্দের অর্থ হলো খাল। এই কারণে এই খালের নাম হয়েছিল  নাঞাস্চং (দেবতার বা ভুতের খাল)। অনেকে মনে করেন যে, নাঞাটং বা নাঞাস্চং থেকে নাইক্ষ্যং শব্দটির উৎপত্তি হয়েছিল।

এক সময় এই অঞ্চল আরাকান অঞ্চলের অধীনস্থ ছিল। তাই আরকানের রাজনৈতিক উত্থানপতনের সাথে এই উপজেলা গভীরভাবে সম্পর্কিত।
     [দেখুন  আরাকান রাজ্য]

তথ্যসূত্রঃ
১. http://naikhongchhari.bandarban.gov.bd/