চেন্নাই
ভারত প্রজাতন্ত্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ু'র রাজধানী এবং রাজ্যের প্রধান শহর। ‌‌

চেন্নাইয়ের পার্শ্ববর্তী অঞ্চল খ্রিষ্টীয় প্রথম শতাব্দী থেকেই একটি প্রশাসনিক, সামরিক, এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ গড়ে উঠেছিল। সে সময় এই অঞ্চলটি বিভিন্ন ঐতিহাসিক দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। মূলত  বিশেষভাবে এই অঞ্চল শাসিত হয়েছে পল্লব, চোল, পাণ্ড্য এবং বিজয়নগর সাম্রাজ্যের দ্বারা। খ্রিষ্টীয় ২য় থেকে ৯ম শতাব্দী পর্যন্ত  পল্লব রাজ্যের অধীনে চেন্নাইয়ের অংশবিশেষ নিয়ে গড়ে উঠেছিল মাইলাপোর শহর। এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল পল্লব রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর।

১৫২২ খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগিজরা চেন্নাইয়ের নিকটবর্তী সাও তোমে
(São Tomé) নামে একটি বন্দর নির্মাণ করেছিল। এই সময় আর্মেনিয়ানরাও এই অঞ্চলে বসবাস করতো। ১৬১২ খ্রিষ্টাব্দে এই অঞ্চলটি ওলন্দাজদের হাতে যায়, যারা শহরের উত্তরে অবস্থিত পুলিকটের কাছে ঘাঁটি স্থাপন করে।

১৬৩৯ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজরা ওলন্দাজ শাসকের অনুমতি নিয়ে সেন্ট জর্জ দুর্গ নির্মাণ করে। পরবর্তী সময়ে এই দুর্গটি তাদের ঔপনিবেশিক আবাসের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়। ১৬৪০ খ্রিষ্টাব্দে ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি বঙ্গোপসাগের তীরে মাদ্রাজপত্তমের জেলেপল্লীতে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান চালু করে। ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি তাদের বসতির নামকরণ করেছিল মাদ্রাজ। তখন এই দূর্গের দক্ষিণে চেন্নাপত্তনম নামে একটি গ্রাম ছিল। কিন্তু স্থানীয় লোকদের কাছে এই চেন্নাপত্তনম ও মাদ্রাজকে- চেন্নাপত্তনম বা চেন্নাপুরি হিসেবে উল্লেখ করতেন।

ইংরেজদের আগমনের আগে থেকেই এই অঞ্চল হাতে বোনা সুতি কাপড়ের জন্য বিখ্যাত ছিল। ইংরেজরা বাণিজ্যের সুযোগ সুবিধা দেখিয়ে, বহু তাঁতিকে দুর্গের কাছে বসতি স্থাপনের আমন্ত্রণ জানায়। এছাড়া এরা একটি কাপড়ের কারখানাও স্থাপন করে।

১৬৫২ খ্রিষ্টাব্দে  সেন্ট জর্জ দূর্গ-কেন্দ্রিক প্রশাসনকে প্রেসিডেন্সি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ১৬৬৮ থেকে ১৭৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পর্যন্ত মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি দক্ষিণ ভারতের অন্যতম প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে কাজ করে। ১৮০১ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে ইংরেজরা মাদ্রাজকে তাদের প্রশাসনিক ও বাণিজ্যিক রাজধানীতে পরিণত করে১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই শহরের নাম ছিল মাদ্রাজ। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে এই শহরের নাম পরিবর্তন করে চেন্নাই করা হয়।