অলকানন্দা নদী
ভারতের
একটি অন্যতম নদী
গঙ্গার
প্রধান জলধারার উৎস।
উৎপত্তি:
হিমালয়ের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত শত পন্থ হিমবাহ এবং ভাগিরথী খড়ক হিমবাহের সঙ্গমস্থলে
অলকানন্দা উৎপন্ন হয়েছে। এই নদীর উৎস-অঞ্চলের উচ্চতা প্রায় ৩,৮৮০ মিটার (১২,৭৩০ ফুট)।
উৎস স্থল থেকে নদীটি মানা গ্রামের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে
সরস্বতী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। উভয় নদীর মিলিত স্রোত বদ্রিনাথ উপত্যাকার
হনুমানচট্টিতে প্রবেশ করেছে। এখানে এই নদীর সাথে মিলিত হয়েছে ঘৃত গঙ্গার সাথে। এরপর
নদীটি পাণ্ডুকেশর পর্যন্ত সরু পথ ধরে প্রবাহিত হয়েছে। এরপর এই নদীটি পাঁচটি জলধারার
সাথে হয়েছে। এই মিলিত স্থানগুলোকে প্রয়াগ হিসেবে অভিহিত হয়ে থাকে। একত্রে এদের বলা
হয় পঞ্চপ্রয়াগ। এগুলো হলো-
- বিষ্ণুপ্রয়াগ:
এই প্রয়াগে পাণ্ডুকেশর থেকে প্রবাহিত অলকানন্দ ধৌলিগঙ্গা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে।
হিন্দু পৌরাণিক দেবতা
বিষ্ণুর নামানুসারে
এই প্রয়াগের নামকরণ করা হয়েছে। ধৌলিগঙ্গা
নদীটি উৎস স্থল থেকে ২৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ৩০°৩৩'৪৫''
উত্তর ৭৯°৩৪'৩১'' পূর্বে
ভৌগোলিক স্থানাঙ্কে অলকানন্দের সাথে মিলিত হয়েছে।
- নন্দপ্রয়াগ:
বিষ্ণুপ্রয়াগ থেকে প্রবাহিত অলকানন্দ
এই প্রয়াগে নন্দাকিনী নদীর সাথে মিলিত
হয়েছে। এই প্রয়াগের ভৌগোলিক অবস্থান ৩০°১৯'৫৬''
উত্তর ৭৯°১৮'৫৫''। উল্লেখ্য,
বিষ্ণুর অবতার
কৃষ্ণ
প্রতিপালিত হয়েছিল নন্দের কাছে। নন্দপত্নী যশোদা
কৃষ্ণকে আপন পুত্র হিসাবেই পালন করেন। এই নন্দের নামে এই
প্রয়াগের নামকরণ করা হয়েছে।
- কর্ণপ্রয়াগ:
নন্দপ্রয়াগ থেকে প্রবাহিত অলকানন্দ এই প্রয়াগে পিণ্ডার নদীর সাথে মিলিত
হয়েছে। এই প্রয়াগের ভৌগোলিক অবস্থান ৩০°১৫'৪৯''
উত্তর ৭৯°১২'৫৬''। মহাভারতে বর্ণিত সূর্য ও
কুন্তী
দেবীর সন্তান
কুন্তী দেবীর
কর্ণের
নামানুসারে এই প্রয়াগের নামকরণ করা হয়েছিল।
- রুদ্রপ্রয়াগ: কর্ণপ্রয়াগ থেকে প্রবাহিত অলকানন্দ এই প্রয়াগে
মন্দাকিনী নদীর সাথে মিলিত
হয়েছে। এই প্রয়াগের ভৌগোলিক অবস্থান ৩০°১৭'১৬''
উত্তর ৭৮°৫৮'৪৩''।
মহাদেবের অপর নাম রুদ্র। এই রুদ্রের নামে এই প্রয়াগের নামকরণ করা হয়েছিল।
- দেবপ্রয়াগ: রুদ্রপ্রয়াগ থেকে প্রবাহিত অলকানন্দ এই প্রয়াগে
ভাগীরথী নদীর সাথে মিলিত
হয়েছে। উল্লেখ্য,
ভাগীরথী নদী
উৎপন্ন হয়েছে গঙ্গোত্রী হিমবাহ।
অলকানন্দা
এবং
ভাগীরথী
নদীর মিলিত
ধারা গঙ্গা নামে প্রবাহিত হয়েছে।
এই প্রয়াগের ভৌগোলিক অবস্থান ৩০°০৮'৪৩'' উত্তর ৭৮°৩৫'৫২''।