এমারেল্ড থিয়েটার
১৮৮৭-১৮৯৬
খ্রিষ্টীয় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে প্রতিষ্ঠিত একটি নাট্যমঞ্চ
ও নাট্যদল।
৬৮ নম্বর বিডন স্টিটে গুর্মুখ
রায়
স্টার থিয়েটারের যে বাড়ি তৈরি করেছিলেন,
পারিবারিক এবং স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি তা বিক্রয় করে দেন। বাড়িটি কিনেছিলেন-
অমৃতলাল মিত্র. দাসচরণ নিয়োগী, হরিপ্রসাদ বস ও অমতলাল বসু।
১৮৮৭ এই স্টার থিয়েটার দারুণ আর্থক সংকটে পড়ে। এই অবস্থায়
ধনকুবের মতিলাল শীলের নাতি গোপাল লাল শীল থিয়েটার করার সখে কৌশলে
স্টার থিয়েটারে
জমি কিনে নেন এবং স্টারের স্বত্বাধিকারীদের উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া দেন। ফলে বাধ্য
হয়ে তাঁরা ত্রিশ হাজার টাকায় এই থিয়েটার বাড়ি গোপাল শীলের কাছে হস্তান্তর করেন।
স্টারের স্বত্বাধিকারীরা বাড়িটি বেচলেও
'স্টার' নামটি বিক্রয় করেন
নি। তাই গোপাল শীল এর
নতুন নাম দেন 'এমারেল্ড থিয়েটার'।
অন্যদিকে
স্টার থিয়েটারের স্বত্বাধিকারীরা
হাতীবাগানে নতুন স্টার থিয়েটার
চালু করেন।
গোপাললাল বাড়িটির অধিকার পাওয়ার পর, তা সংস্কার করান।
তিনি পুরানো গ্যাসের আলো বাতিল করে ডায়নামো
বসিয়ে
বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা করেন। নতুন
এই নাট্যশালায় কেদার চৌধুরী। তিনি একাধারে
ম্যানেজার, নাট্যকার ও পরিচালক।
এই সময় এই দলে উল্লেখযোগ্য অভিনেতা-অভিনেত্রী ছিলেন-
অর্ধেন্দুশেখর, ধর্মদাস সুর, রাধামাধৰ কর, মতিলাল সুর, মহেন্দ্রলাল বসু,
ক্ষেত্রমণি, বনবিহারিণী, কিরণশশী প্রমুখ।
১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ৮ অক্টোবর এমারেল্ড উদ্বোধন হয়েছিল
কেদার চৌধুরীর লেখা 'পাণ্ডব
নির্বাসন' নাটক দিয়ে। দৃশ্যপট ও সাজসজ্জার দায়িত্ব পাল
করেছিলেন জহরলাল ধর এবং সুকুমারী ও শশিভৃষণ দেব।
এই বছরের ২৬ অক্টোবর
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'বউ
ঠাকুরানীর হাট' উপন্যাসের নাট্যরূপ 'রাজা বসন্ত রায়'
মঞ্চস্থ হয়। নাট্যরূপ দিয়েছিলেন কেদার চৌধুরী
এবং এর আগেই ন্যাশনাল থিয়েটারে ১৮৮৬
খ্রিষ্টাব্দের ৩ জুলাই অভিনীত হয়েছিল। এরপর মঞ্চস্থ হয় আনন্দকানন, মদনভষ্ম
প্রভৃতি নাটক। সব মিলিয়ে এই বছরে এমারেল্ড আর্থিকভাবে সুবিধা
করতে ব্যর্থ হয়। তাই গোপাল শীল কেদার চৌধুরীর পরিবর্তে
গিরিশচন্দ্রকে
ম্যানেজার হিসেবে নিয়ে আসেন।
গিরিশচন্দ্র
প্রথমে সম্মত না হলেও, পরে
স্টার থিয়েটারের স্বত্বাধিকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেই
তিনি এমারেন্ডে যোগ দিলেন।
গিরিশ এমারেন্ডে যোগ দিয়েছিলেন ৫ বছরের
চুক্তিতে। এই চুক্তি অনুসারে
গিরিশচন্দ্র
২০ হাজার টাকার বোনাস এবং মাসিক ৩৫০ টাকা বেতন পাবেন।
বোনাসের এই টাকা থেকে ১৬ হাজার টাকা
স্টার থিয়েটারকে বিনাশর্তে দিয়ে দেন নতুন বাড়ি
তৈরির জন্য।
১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ নভেম্বর গিরিশ এমারেল্ডের
ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেছিলেন।
তিনি রবীন্দ্রনাথ এবং কেদার চৌধুরীর পূর্ব অভিনীত
নাটকগুলি বন্ধ করে দেন। এর পরিবর্তে তিনি
'নীলদর্পণ' নাটক দিয়ে গিরিশ এখানে কাজ শুরু করলেন। তারপরে
মঞ্চস্থ করেন সীতাহরণ, দীনবন্ধুর নবীন তপস্থিনী, গিরিশের মায়াতরু।
এর ভিতরে শেষের দুটি নাটক
খুবই জনসমাদর লাভ করেছিল।
প্রতাপ জহুরির
ন্যাশনাল থিয়েটারে
থাকার সময়,
গিরিশচন্দ্র
অনেকটা দায়ে পড়ে নাটক লিখেছিলেন। এবারে তিনি এমারেল্ডকে
বাঁচানোর জন্য নাটক রচনা শুরু করেছিলেন। এই সময়ের যে সকল উল্লেখযোগ্য নাটক মঞ্চস্থ
হয়েছিল, সেগুলো হলো- 'সীতার বনবাস'
বঙ্কিমচন্দ্র
চট্টোপাধ্যায়ের
মৃণালিনী উপন্যাসের নাট্যরূপ এবং
মধুসূদন
দত্তের মেঘনাদবধ কাব্যের নাট্যরূপ,
নিজের নাটক 'পূর্ণচন্দ্র' করলেন। এ সকল নাটকের মাধ্যমে
এমারেল্ড জনন্দিত হয়ে উঠেছিল। এই সময়েই
গিরিশচন্দ্রের
সঙ্গে অর্ধেনদুশেখর মুস্তাফিও যুক্ত হলেন।
আবর নবীন তপস্বিনী
নাটক মঞ্চস্থ হয়েছিল। এই নাটকে জলধরের ভূমিকায় অর্ধেন্দু
অনবদ্য অভিনয় করেছিলেন। এই সময়ের অন্যান্য নাটকের ভিতরে ছিল-
দীনবন্ধু মিত্রের 'নীলদর্পণ” ও 'জামাইবারিক'।
জনসমাদর পেয়েছিল
মধুসূদন
দত্তের দুটি প্রহসন
'একেই কি বলে সভ্যতা' ও 'বুড়ো শালিখের ঘাড়ে রৌ'।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের
উপন্যাস আনন্দমঠ, মৃণালিনী, বিষবৃক্ষ,
কৃষ্ণকান্তের উইল-প্রভৃতির নাট্যরূপ অভিনীত হয়ে হয়েছিল সাফল্যের
সাথে। ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ সেপ্টেম্বর অর্ধেন্দুশেখর এমারেল্ড ছেড়ে চলে যান।
১৮৮৭-৮৮ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে অভিনীত হয়েছিল পাণ্ডব নির্বাসন (কেদার চৌধুরী), রাজা বসন্ত রায় (বৌঠাকুরানীর হাট উপন্যাসের নাট্যরূপ : কেদার চৌধুরী), আনন্দকানন
(লক্ষ্মীনারায়ণ চক্রবর্তী), সীতার বনবাস
(গিরিশচন্দ্র), সীতাহরণ
(গিরিশচন্দ্র),, মায়াতরু
(গিরিশচন্দ্র),,
পূর্ণচন্দ্র (গিরিশচন্দ্র),
বিষাদ (গিরিশচন্দ্র), নীলদর্পণ
(দীনবন্ধু
মিত্র), নবীন তপস্বিনী
(দীনবন্ধু
মিত্র) বুড়ো শালিখের ঘাড়ে রৌ
(মধুসূদন
দত্ত), একেই কি বলে সভ্যতা
(মধুসূদন
দত্ত), তুলসীলীলা (অতুলকৃষ্ণ
মিত্র), নন্দ বিদায় (অতুলকৃষ্ণ
মিত্র), গাধা ও তুমি (অতুলকৃষ্ণ
মিত্র) ।
এমারেল্ডের এই রমরমা অবস্থায় থাকা সত্বেও, অজানা কারণে
গোপাল লাল এমারেল্ড ছেড়ে দিয়েছিলেন।
১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি ইজারা দিয়েছিলেন
মতিলাল সুর, পণ্ডিত হরিভূষণ ভট্টাচার্য, পুর্ণচন্দ্র
ঘোষ, ব্রজনাথ মিত্রের কাছে। গোপাললালের
চলে যাওয়ার পর, গিরিশের সঙ্গে গোপাললালের চুক্তি
আর কার্যকরী রইলো না। ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩ ফেব্রুয়ারি
গিরিশচন্দ্র
এমারেল্ডে ত্যাগ কর
স্টার থিয়েটারে
যোগদান করেন। ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে অর্ধেনদুশেখর
আবার এমারেল্ডে যোগদান করেন। এই সময় তিনি “বকেশ্বর”
প্রহসনে বক্রেশ্বরের ভূমিকায় অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন।
তারপরেই এমারেল্ড আবার আর্থিক সঙ্কটে পড়ে যায়। তাই ১৮৮৯
খ্রিষ্টাব্দের ৮ এপ্রিল, গোপাললাল
পুনরায় এমারেল্ডের দায়িত্ব নেন। তিনি ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত
অভিনয় বন্ধ রাখলেন। রঙ্গমঞ্চের ভিতরকার এবং থিয়েটারের আর সব দিকের
অবস্থা গুছিয়ে নিয়ে পুনরায় অভিনয় চালু করলেন।
১৮৮৯
খ্রিষ্টাব্দের ২৭ শে এপ্রিল এমারেল্ডে পরিচালক হিসেবে যোগ
দিয়েছিলেন নাট্যকার মনোমোহন বসু ।
৪ মে এমারেল্ডে ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন নাট্যকার কেদার
চৌধুরী। এর ফলে এমারেল্ডে নাট্যকার হিসেবে রইলেন মনোমোহন বসু,
অতুলকৃষ্ণ মিত্র এবং কেদার চৌধুরী। এই বছরের ৩ নভেম্বর
তিনি এই পদ ত্যাগ করে, এমারেল্ড থেকে চলে যান।
১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই
জানুয়ারি বিজনেস ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন অতুলকৃষ্ণ মিত্র। ১৭ই
জুন 'রাজা ও রানী'র অভিনীত হয়েছিল।
১৮৮৯-৯০ খ্রিষ্টাব্দে এমারেল্ডে অভিনীত নাটকগুলো ছিল-বক্কেশ্বর
(অতুলকৃষ্ণ মিত্র), ভাগের মা গঙ্গা পায় না (অতুলকৃষ্ণ
মিত্র), ষণ্ড, বুড়ো বাঁদর (অতুলকৃষ্ণ মিত্র), আনন্দকুমার (পুলিশ এই নাটকটির অভিনয় কয়েক রাত্রির
পর বন্ধ করে দেয়), নবীন তপস্বিনী
(দীনবন্ধু
মিত্র), রাজা ও রানী (রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর, ১৭ জুন ১৯৯০)।
১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে এমারেল্ডের
আর্থিক অবস্থা আবার খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এরা পুরনো
নাটকগুলির অভিনয়ের মাধ্যমে টিকে থাকার সংগ্রাম করছিল।
১৮৯৩-এর ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে অতুল মিত্র এবং মহেন্দ্রলালবাবু 'লেসি' হন।
ধারদেনা করে তারাও অভিনয় চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। না পেরে শেষ পর্যন্ত
অর্ধেন্দুশেখর মুস্তাফিকে 'লেসি এবং মতিলাল সুরকে
ম্যানেজার বানানো হয়। এরপর থকে
অর্ধেন্দুশেখর নিজ মালিকানায় এমারেন্ড থিয়েটার চালাতে থাকেন।
সেই সাথে অর্ধেনদুশেখর নাট্যশিক্ষক ও অভিনেতা
হিসেবে বিশেষ সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
১৮৯৪-এর ২২ সেপ্টেম্বর অতুল মিত্রের “মা” অভিনীত হয়। এই নাটকের
মাধ্যমে মৃতপ্রায় এমারেল্ড আবার
সজীব হয়ে ওঠে। এরপর বৈকুঠনাথ
বসুর 'মান' ডিসেম্বর, ১৮৯৪), রাজা বসন্ত রায় (জানুয়ারি, ১৮৯৫), আবুহোসেন
(গিরিশ, জানুয়ারি ১৮৯৫) মঞ্চস্থ হওয়ার পর এমারেল্ড
আর্থিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থায় চলে গিয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে তা
স্থায়ী হলো না। অর্ধেনদুশেখর নাট্যাভিনয় যতটা ভালো
ছিলেন, থিয়েটার ব্যবসায় ততটাই খারাপ ছিলেন। ফলে অভিনয়গুলি প্রচুর দর্শক আকর্ষণ করলেও, শুধু
প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অনভিজ্ঞতার
কারণে কিছুদিনের মধ্যেই এমারেল্ড আর্থিক অনটনে
পড়ে যায়।
ফলে নিরুপায় হয়ে
অর্ধেনদুশেখর এমারেন্ড থিয়েটারের মালিকানা হস্তান্তর বি. ডি. কোম্পানীর মালিক বেনারসী দাসের
কাছে হস্তান্তর করেন। ১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দের
১০ নভেম্বর, বেনারসী দাস মালিকানা
লাভ করেন। তিনি প্রথমেই থিয়েটারের আর্থিক দুরবস্থা থেকে
উদ্ধার করেন। তিনি অর্ধেন্দুশেখর ম্যানেজার ও নাট্যশিক্ষক ও অভিনেতা
রাখেলন এবং তাঁর মাধ্যমে এমারেন্ড আবার নবোদ্যমে চালু হলো।
নতুন মালিকাধীন এমারেল্ডের প্রথম নাটক ছিল
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের
উপন্যাসের
'কপালকুণ্ডলা'র নাট্যরূপ। এই বছরের
উল্লেখযোগ্য নাটক ছিল রমেশচন্দ্র দত্তের উপন্যাস 'বঙ্গবিজেতা'র নাট্যরূপ (১৪
ডিসেম্বর),
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুররে'খ্যাতির বিড়ম্বনা।
অবশ্য এই প্রহসনটি 'দুকড়ি দত্ত' নামে মঞ্চস্থ হয়েছিল।
এছাড়া ছিল
ক্ষীরোদপ্রসাদের
ফুলশয্যা, কপালকুগুলার নাট্যরূপ ও অতুল মিত্রের পুরনো নাটক
'ভাগের মা গঙ্গা পায় না'।
১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ ফেব্রুয়ারি,
'কপালকুণ্ডলা'
ও 'ভাগের মা গঙ্গা পায় না' অভিনীত হওয়ার পর এমারেল্ড থিয়েটার বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর ২০শে জুন এই থিয়েটার বাড়ি ভাড়া নিয়ে এখানে খোলা হয়
'সিটি থিয়েটার'।
১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে সিটি থিয়েটার বন্ধ হয়ে গেলে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয় ক্লাসিক
থিয়েটার।
সূত্র:
- গিরিশ রচনাবলী। সাহিত্য সংসদ। কলিকাতা। ১৯৬৯।
- বঙ্গীয় নাট্যশঠালার
ইতিহাস। ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ মন্দির, ১৩৪৬
-
বাংলা থিয়েটারের ইতিহাস।
দর্শন চৌধুরী। পুস্তক বিপনী
কলকাতা ১৯৯৫।
- বাংলা থিয়েটারের গান। শ্রীরাজ্যেশ্বর মিত্র। ইন্দিরা সংগীত-শিক্ষায়তন।
১৯৮২।
- বাংলা থিয়েটারের পূর্বাপর। নৃপেন্দ্র সাহা। তূণ প্রকাশ। ১৯৯৯।
- বাংলা নাটকের ইতিবৃ্ত্ত। হেমেন্দ্র নাথ
দাশগুপ্ত
-
বাংলা নাটকের ইতিহাস। অজিতকুমার ঘোষ
- বাংলা নাট্য সাহিত্যের ইতিহাস। আশুতোষ ভট্টাচার্য
- বাংলা নাট্যসাহিত্যের পূর্ব্ব-কথা। শ্রীশরচ্চন্দ্র ঘোষাল। নারায়ণ [পৌষ ১৩২১ বঙ্গাব্দ]
- বাংলা নাটকের বিবর্তন। সুরেশচন্দ্র মৈত্র। মুক্তধারা। ১৯৭১