উত্তর ভারতীয় সঙ্গীতশাস্ত্রে বর্ণিত
মিশ্র প্রকৃতির রাগ। দক্ষিণ ভারতে গোবিন্দাচার্যের এর মেল-নাম
বকুলাভরণ্ম, বেঙ্কটমখীর মেল-নাম বসন্তভৈরব। নামের দিক থেকে বসন্ত মুখারী হলেও- বসন্ত রাগের সাথে এর কোনো মিল নেই।
যদিও একে কেউ কেউ একে ভৈরব ঠাটের রাগ বলে
থাকেন। কিন্তু এই রাগের পূর্বাঙ্গে রয়েছ
ভৈরবের 'স ঋ গ ম' এবং
উত্তরাঙ্গে রয়েছে
ভৈরবীর
'প দ ণ র্স'-এর স্বরবিন্যাস। এই কারণে
মারিফুন্নাগমাত-এ একে মিশ্র মেল রাগ বলা হয়েছে। এর চলনে
ভৈরব মতো হলেও ঋষভ এবং ধৈবত আন্দোলিত হয় না।
ভৈরবের শুদ্ধ নিষাদের পরিবর্তে এই রাগে কোমল নিষাদ ব্যবহৃত হয়।
মারিফুন্নাগমাত-এই রাগের
সমবাদী স্বরের উল্লেখ করা হয় নি। এই গ্রন্থে এই রাগে ঝাঁপতালে নিবদ্ধ একটি
লক্ষণগীত দেওয়া হয়েছে। এই লক্ষণগীত এবং বর্ণনা অংশ অনুসারে এই রাগের যে পরিচয় পাওয়া
যায়, তা হলো-
আরোহণ:
স ঋ গ ম প দ ণ র্স
অবরোহণ:
র্স ণ দ প, ম গ ঋ স
জাতি: সম্পূর্ণ্-সম্পূর্ণ।
বাদীস্বর: ধৈবত
সময়:
প্রাতঃকাল
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে এই রাগটি অপ্রচলিত হয়ে পড়েছিল। কাজী নজরুল ইসলাম ও সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তী
হারানো রাগের অন্বেষণ করে, তা প্রচারের জন্য কলকাতা বেতারকেন্দ্র থেকে
হারামণি
নামক একটি ধারাবাহিক
অনুষ্ঠান শুরু করেছিলেন। এই অনুষ্ঠানের তৃতীয় অধিবেশনে এই রাগটি উপস্থাপন করা
হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে নজরুলের রচিত এই রাগে সুরোপিত একটি গান প্রচারিত হয়েছিল। গানটি
হলো- বসন্ত মুখর আজি
[তথ্য]
নজরুলের হস্তাক্ষরে এই রাগের যে বিবরণ পাওয়া যায়, তা হলো-
[নজরুলের
হস্তলিপি]
আরোহী:
স ঋ গ ম প দ ণ র্স
অবরোহী:
র্স ণ দ প, ম গ ঋ স
বাদীসুর
:ধৈবত
সমবাদী সুর: রেখাব
বর্ণ বা জাতি: সম্পূর্ণ্।
গাহিবার সময়:
সকাল
মন্তব্য: ভৈঁরো ও ভৈরবীর সংমিশ্রণে ইহার সৃষ্টি। এই জন্য ইহার গান্ধার
তীব্র ও অন্যান্য স্বর ভৈরবীর ন্যায় কোমল।
সূত্র:
- মারিফুন্নাগমাত। রাজা নওবাব
আলী খান। অনুবাদ: মক্সুদুর রহমান হিলালী। বাংলা একাডেমী. বর্ধমান হাউস, ঢাকা।
শ্রাবণ ১৩৭৪, জুলাই ১৯৬৭। পৃষ্ঠা: ১৮৫-১৮৬।
- The Indian Listener
22
november 1939-
Vol-IV-23
। ১৩ ডিসেম্বর। পৃষ্ঠা: ১৫৫৯।