বঙ্গাল
উত্তর ভারতীয় সঙ্গীতশাস্ত্রে বর্ণিত বিলাবল ঠাট অন্তর্গত একটি রাগ বিশেষ। 

এ রাগটি বঙ্গদেশে প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত ছিল। খ্রিষ্টীয় ৬৫০ থেকে ১২৫০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে রচিত চর্যাগীতি-র  ৪৩সংখ্যক পদে ভুসূকুপাদানাম পদ সহজ মহাতরু ফরিঅ এ'-এর শিরোদেশে এই রাগের উল্লেখ আছে। প্রাক্‌চৈতন্যযুগে রচিত বাংলা সাহিত্যের ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ পুঁথির রাধাবিরহ খণ্ডের ১৪তম পদ গায়নের জন্য নির্দিষ্ট রাগটি হল বঙ্গাল। এরপর বাংলা গানে বঙ্গাল রাগের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় নি। এমন কি বাংলার নিজস্ব বিষ্ণুপুরী ঘরানাতে এই রাগের বন্দীশ রচিত হয় নি। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে কাজী নজরুল ইসলাম এই রাগে একটি গান বেঁধেছিলেন। গানটি হলো-

        আয় মা চঞ্চলা মুক্তকেশী শ্যামা কালী  [তথ্য]

জগৎ ঘটক-কৃত স্বরলিপি-সহ এই গানটি প্রকাশিত হয়েছিল- ভারতবর্ষ পত্রিকার, মাঘ ১৩৪৪ (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ১৯৩৮) সংখ্যায়।[ নমুনা] আওরঙ্গজেবের রাজত্বকালে পূর্ব ভারতের সুবেদার ফকিরউল্লাহর রচিত ‘রাগদর্পণ’- গ্রন্থের দ্বিতীয় অধ্যায়ে রাগ ভৈরবের পত্নী বঙ্গালী ও পুত্র বঙ্গাল-এর উল্লেখ রয়েছে। ত্রয়োদশ শতকে শার্ঙ্গদেবের ‘সঙ্গীতরত্নাকর’ বঙ্গাল রাগের উল্লেখ রয়েছে। এই রাগের বিষয়ে একটি উপাখ্যান পাওয়া যায়, তা হলো কিন্নরী নামক এক বীণাবাদক অজ্ঞতার বশবর্তী হয়ে বঙ্গাল রাগে পঞ্চম স্বরে বেশিক্ষণ অবস্থান করতেন। তিনি বীণায় এবং বাঁশীতে নির্ভুল বঙ্গাল রাগবাদনের প্রক্রিয়া উল্লেখ করেছে। সপ্তদশ শতাব্দীতে পণ্ডিত সোমনাথ তাঁর ‘রাগবিবোধ’-এ বঙ্গালের উল্লেখ করেছেন।
আরোহণ: স র, গ ম, প র্স
অবরোহণ: র্স ন ধ ম গ র স
ঠাট: বিলাবল [
জাতি: ঔড়ব-ঔড়ব।