শুদ্ধসারং
সমপ্রকৃতির রাগ :
শ্যাম কল্যাণ
উত্তর ভারতীয় সঙ্গীত পদ্ধতিতে
কল্যাণ
ঠাটের অন্তর্গত রাগ বিশেষ।
এর রাগাঙ্গ
সারং।
প্রাচীন গ্রন্ধাদিতে শুদ্ধ সারং-এর নাম পাওয়া যায় না। তবে সারং নামটি পাওয়া যায়।
প্রাচীন সারং-এর ব্যবহৃত স্বর স র ম হ্ম প ণ ন। ধৈবত বিহীন প্রাচীন রাগটিই বর্তমানে
শুদ্ধ সারং হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমানে এর সাথে যুক্ত হয়েছে শুদ্ধ ধৈবতের ঈষৎ
প্রয়োগ।
মারিফুন্নাগমাতে উল্লেখ আছে- সঙ্গীত পারিজাতের সূত্র
উল্লেখপূর্বক বলা হয়েছে-
'সঙ্গীত পারিজাতেও
সারংএ দুই মধ্যম ও দুই নিখাদ প্রয়োগের উল্লেখ আছে- কিন্তু এ মতটিও প্রচলিত নয়'। এ
থেকে ধারণা করা যায়-
মারিফুন্নাগমাত রচনাকালে (বিংশ শতাব্দীর প্রথম-দ্বিতীয় দশকে) এই
রাগটিতে উভয় মধ্যম ও উভয় নিষাদের ব্যবহার অপ্রচলিত ছিল। মারিফুন্নাগমাতের
মতে এই রাগে কড়ি মধ্যম ব্যবহারের ফলে যে নতুন রূপ লাভ করে, তার নাম 'কামোদশ্রী।
আবার এই রাগে তীব্রমধ্যম ব্যবহারের পাশাপাশি গান্ধার ও ধৈবত বর্জন করলে, তা
সুর সারং রাগে পরিণত হয়। যদিও মারিফুন্নাগমাত-এ কড়ি মধ্যম-এর ব্যবহারকে সঙ্গত ধরা
হয় নি। কিন্তু এর চাল অংশে এবং লক্ষণগীতে কড়ি মধ্যমের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে বরোদায় ভাতেখণ্ডেজির রচিত হিন্দুস্থানী সঙ্গীত পদ্ধতি
(একাদশ খণ্ড)-তে বলা হয়েছে, এই রাগের গান্ধার বর্জিত।
এই রাগে ধৈবত প্রবল প্রবল এবং এই স্বরটি মধুমাদ সারং থেকে শুদ্ধ সারংকে পৃথক করে
দেয়। দক্ষিণ ভারতীয় সঙ্গীত পদ্ধতিতে উভয় মধ্যম ব্যবহারের রীতি আছে।
আরোহণ: স, র ম প, ন র্স
অবরোহণ :
র্স, ধ ণ প, ম র স
ঠাট
কাফি
জাতি : ঔড়ব-ঔড়ব (গ বর্জিত)।
বাদীস্বর : ঋষভ
সমবাদী স্বর: পঞ্চম
অঙ্গ : পূর্বাঙ্গ
প্রধান।
সময় : দিবা দ্বিতীয়
প্রহর।
পকড়
: প্, ন্ স র র, জ্ঞ জ্ঞ, মর স রস
- তথ্যসূত্র:
- মারিফুন্নাগমাত।
রাজা নওয়াব আলী খান। অনুবাদ মকসুদুর রহমান হিলালী। বাঙলা একাডেমী বর্ধমান
হাউস। ঢাকা। পৃষ্ঠা: ২৮২-২৯৩।
- রাগ-রূপায়ণ।
(প্রথম খণ্ড) সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তী। জেনারেল প্রিন্টার্স
য়্যান্ড পাব্লিশাসার্স প্রাইভেট লিমিটেড।
১৫ এপ্রিল ১৯৮৩। পৃষ্ঠা: ১৪৪-১৪৫
- নজরুল যখন বেতারে। আসাদুল হক। [বাংলাদেশ শিল্পকলা
একাডেমী, ঢাকা, চৈত্র ১৪০৫, মার্চ ১৯৯৯] পৃষ্ঠা: ১৪২
- হিন্দুস্থানী সঙ্গীত পদ্ধতি
(একাদশ খণ্ড)। বিষ্ণুনারায়ণ ভাতখণ্ডে।
সম্পাদনা ধরিত্রী রায় এবং
অসীমকুমার চট্টোপাধ্যায়। [দীপায়ন কলিকাতা, বৈশাখ ১৩৯৯। [পৃষ্ঠা: ৩০৮]