বিদুর
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { পৌরাণিক সত্তা | কাল্পনিকসত্তা | কল্পনা | সৃজনশীলতা | দক্ষতা | জ্ঞান | মনস্তাত্ত্বিক বিষয় | বিমূর্তন | বিমূর্ত-সত্ত | সত্তা |}

হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে  অণীমাণ্ডব্য-ঋষির শাপে স্বয়ং ধর্ম বিদুররূপে জন্মগ্রহণ করেন।

ব্যাসদেবের  ঔরসে এবং বিচিত্রবীর্যর প্রথমা স্ত্রী'র শূদ্রা দাসীর গর্ভে ইনি জন্মগ্রহণ করেন। ইনি অত্যন্ত ধর্মশীল, ধীমান, সূক্ষদর্শী ছিলেন ভীষ্ম বিদুরকে সন্তানের মতো করে প্রতিপালিত করেন ভীষ্মের তত্ত্বাবধানে ইনি ধনুর্বেদ, গজশিক্ষা, নীতিশাস্ত্র, ইতিহাস, পুরাণ প্রভৃতিতে শিক্ষিত হয়ে উঠেছিলেন ব্রাহ্মণের ঔরসে শূদ্রা জননীর গর্ভে জন্মেছিলেন বলে, রাজ্যে তাঁর কোন অধিকার ছিল না ধৃতরাষ্ট্র পাণ্ডুর বিবাহের পরপরই ভীষ্ম রাজা দেবকের শূদ্রা স্ত্রীর গর্ভজাতা কন্যার সাথে বিদুরের বিবাহ দিয়েছিলেন

ইনি ধৃতরাষ্ট্রের মন্ত্রী ছিলেন তারপরেও ইনি ধৃতরাষ্ট্রের অধর্মকে কখনও প্রশ্রয় দেননি দুর্যোধনের জন্মের সময় দুর্লক্ষণ দেখে ইনি ধৃতরাষ্ট্রকে এই সন্তান পরিত্যাগ করতে বলেছিলেন এই উপদেশে ধৃতরাষ্ট্র কান দেন নি এঁর সহায়তার ফলেই জতুগৃহ-ষড়যন্ত্র থেকে পাণ্ডবেরা রক্ষা পেয়েছিলেন ধৃতরাষ্ট্র দ্রুপদপুরী থেকে কুন্তী ও দ্রৌপদীসহ পঞ্চপাণ্ডবকে হস্তিনাপুরে আনার জন্য বিদুরকে প্রেরণ করেছিলেন

যুধিষ্ঠিরের সাথে শকুনির পাশা খেলাকে  স্থগিত রাখার জন্য দুর্যোধনকে পরামর্শ দিয়েছিলেন কিন্তু দুর্যোধন সে কথায় কর্ণপাত করেন নি দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণকালে বিদুরকে সর্বাপেক্ষা বিচলিত দেখা যায় ইনি বাক্যের দ্বারা এই কাজে বাধা দেওয়ার প্রবল চেষ্টা করে ব্যর্থ হন পরে বিদুরের পরামর্শেই ধৃতরাষ্ট্র এই বিবাদ মিটিয়েছেন পাণ্ডবেরা বনে গেলে ধৃতরাষ্ট্র ভয়ে এঁর কাছে পরামর্শ প্রার্থনা করলে- ইনি পাণ্ডবদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বলেন অবশ্য বিদুরে সে পরামর্শ ধৃতরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত  গ্রহণ করেন নি।  কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পূর্বে ধৃতরাষ্ট্রকে বিভিন্নভাবে যুদ্ধ করার সংকল্প থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর ইনি পনের বত্সর ধৃতরাষ্ট্রের সাথে পাণ্ডবদের আশ্রয়ে বসবাস করেছেন এরপর ইনি ধৃতরাষ্ট্র ও অন্যান্যদের সাথে বানপ্রস্থ অবলম্বন করে কঠোর তপস্যায় প্রবৃত্ত হন সেখানেই ইনি যোগাবলম্বনে দেহত্যাগ করেন

[মহাভারত। আদিপর্ব, সপ্তাধিকশততম অধ্যায়। বিদুরের পূর্ব্বজন্ম-মাণ্ডব্য উপাখ্যান। মাণ্ডব্যের শূলবেধ]