স্বায়ম্ভূব মনু
মার্কেণ্ডয়
পুরাণ মতে–
ব্রহ্মা
বিভিন্ন ধরনের প্রাণসত্তার সৃষ্টি করার পরও প্রজাবৃদ্ধি হচ্ছে না দেখে তিনি অত্যন্ত
রাগান্বিত হন। এরপর ফলে মনের ক্ষুব্ধদশা থেকে অর্ধ নারী-নরদেহ উৎপন্ন হয়। এরপর
ব্রহ্মা
এই সত্তাকে নারী ও পুরুষে বিভক্ত হতে বলেন।
ব্রহ্মার
আদেশে
এরা নারী ও পুরুষ সত্তায় বিভাজিত হলেন।
ব্রহ্মা
পুরুষ সত্তাকে পূর্ণাঙ্গ
পুরুষের রূপ দিলেন এবং নাম রাখলেন স্বায়ম্ভূব মনু। পক্ষান্তরে নারী সত্তাকে
পূর্ণাঙ্গ নারীতে পরিণত করলেন এং নামকরণ কলেন শতরূপা। স্বায়ম্ভূব মনু
শতরূপাকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করলেন। শতরূপার গর্ভে দুটি পুত্র সন্তান (প্রিয়ব্রত
এবং উত্তালপাদ) এবং দুটি কন্যা (ঋদ্ধি ও প্রসূতি) জন্মলাভ করে। [সৃষ্টির কথা,
মার্কেণ্ডেয় পুরাণ, এ. মুখার্জী অ্যান্ড, কোম্পানী প্রাইভেট লিমিটেড মাঘ ১৩৮৭]
বায়ু পুরাণের ২৬তম আধ্যায়ের ১২-২৬ শ্লোকে বলা হয়েছে-
ব্রহ্মা আদিতে ওঙ্কার ধ্বনি সৃষ্টি করেন। এরপর চার মুখ থেকে ১৪টি
স্বরবর্ণ নির্গত হয়েছিল। এর ভিতরে অকার ছিল প্রথম স্বরধ্বনি। আর
এই ধ্বনি থেকেই উৎপন্ন হয়েছিল শুক্লবর্ণের আদিমনু
বা
স্বায়ম্ভুব মনু।
এই
পুরাণের
'স্বায়ম্ভূব মন্বন্তরের কথা' অংশে এঁদের পুত্র সংখ্যা ১০ জন উল্লেখ
করা হয়েছে। কথিত আছে ইনি মনু-সংহিতা নামক গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।
মহাভারতের মতে, ব্রহ্মা
ব্রহ্মাণ্ডের ভিতরে অবস্থানের
সময় কয়েকজন আদিপুরুষ
তৈরি করেছিলেন। এঁর ভিতরে স্বায়ম্ভূ মনু ছিলেন।
'প্রথমতঃ এই বিশ্বসংসার কেবল ঘোরতর অন্ধকারে আবৃত ছিল। অনন্তর সমস্ত বস্তুর বীজভূত এক অণ্ড প্রসূত হইল। ঐ অণ্ডে অনাদি, অনন্ত, অচিন্তনীয়, অনির্ব্বচনীয়, সত্যস্বরূপ, নিরাকার, নির্ব্বিকার, জ্যোতির্ময় ব্রহ্ম প্রবিষ্ট হইলেন। অনন্তর ঐ অণ্ডে ভগবান্ প্রজাপতি ব্রহ্মা স্বয়ং জন্ম পরিগ্রহ করিলেন। তৎপরে স্থাণু, স্বায়ম্ভব মনু, দশ প্রচেতা, দক্ষ, দক্ষের সপ্ত পুৎত্র, সপ্তর্ষি, চতুর্দ্দশ মনু জন্মলাভ করিলেন।
[সূত্র: মহাভারত। (কালীপ্রসন্ন সিংহ অনূদিত,) অনুক্রমণিকাধ্যায়।..সৃষ্টিবর্ণন ]