মনু
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে–
ইনি
ব্রহ্মার মন থেকে উদ্ভূত হয়েছিলেন।
মনু
{√মন্
(মনে
ধারণ করা)
+
উ,
কর্তৃবাচ্য},
এই অর্থে ইনি
মনু হিসাবে চিহ্নিত।
প্রায় চার হাজার
যুগে
ব্রহ্মার একদিন।
চার হাজার বৎসরে এক কল্প হয়।
এইরূপ এক দিনে বা এক কল্পে ১৪ জন মনু জন্মগ্রহণ করেন।
এক এক মনুর অধিকারে থাকা সময়কে মনন্তর বলে।
এইরূপ এক মন্বন্তরে সপ্তর্ষিগণ,
দেবগণ,
ইন্দ্র ও
মনু-পুত্ররা জন্ম গ্রহণ করেন।
দেবতাদের হিসাবে ৮ লক্ষ ৫২ বৎসরে এক মন্বন্তর,
আর
মানুষের হিসাবে- ৩০ কোটি ৬৭ লক্ষ ২০ হাজার বৎসরে এক মন্বন্তর।
মন্বন্তর শেষ হলে- মনু,
দেবতা,
সপ্তর্ষিগণ,
ইন্দ্র,
মনুর
পুত্ররা বিলুপ্ত হন।
[স্বায়ম্ভূব মন্বন্তরের কথা, মার্কেণ্ডেয় পুরাণ, এ. মুখার্জী অ্যান্ড, কোম্পানী
প্রাইভেট লিমিটেড মাঘ ১৩৮৭]
মহাভারতের মতে, ব্রহ্মা ব্রহ্মাণ্ডের ভিতরে অবস্থানের সময় কয়েকজন আদিপুরুষ তৈরি করেছিলেন। এঁর ভিতরে চতুর্দ্দশ মনু জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
'প্রথমতঃ এই বিশ্বসংসার কেবল ঘোরতর অন্ধকারে আবৃত ছিল। অনন্তর সমস্ত বস্তুর বীজভূত এক অণ্ড প্রসূত হইল। ঐ অণ্ডে অনাদি, অনন্ত, অচিন্তনীয়, অনির্ব্বচনীয়, সত্যস্বরূপ, নিরাকার, নির্ব্বিকার, জ্যোতির্ময় ব্রহ্ম প্রবিষ্ট হইলেন। অনন্তর ঐ অণ্ডে ভগবান্ প্রজাপতি ব্রহ্মা স্বয়ং জন্ম পরিগ্রহ করিলেন। তৎপরে স্থাণু, স্বায়ম্ভব মনু, দশ প্রচেতা, দক্ষ, দক্ষের সপ্ত পুৎত্র, সপ্তর্ষি, চতুর্দ্দশ মনু জন্মলাভ করিলেন।
[সূত্র: মহাভারত। (কালীপ্রসন্ন সিংহ অনূদিত,) অনুক্রমণিকাধ্যায়।..সৃষ্টিবর্ণন ]
এক কল্পে যে ১৪ জন মনু আবির্ভূত হন, তাঁরা হলেন- স্বায়ম্ভুব, স্বরোচিষ, উত্তম, তামস, রৈবত, চাক্ষুস, বৈবস্বত বা সত্যব্রত, সাবর্ণি, দক্ষসাবর্ণি, ব্রহ্মসাবর্ণি, ধর্মসাবর্ণি, রুদ্রসাবর্ণি, দেবতাসাবর্ণি ও ইন্দ্রসাবর্ণি। মৎস্যপুরাণ মতে- ১৪ জন মনুর ভিন্নতর নাম পাওয়া যায়। এই ১৪ জন মনুর নাম হলো- স্বায়ম্ভূব, স্বরোচিষ, উত্তম, তামস, রৈবত, চাক্ষুষ, বৈবস্বত বা সত্যব্রত, সাবর্ণি, রোচ্য, ভৌত্যাঃ, মেরুসাবর্ণি, ঋভু, ঋতুধামা, বিষ্কক্সেন।
মূলত প্রতিকল্পে একবার করে
আসেন। কল্পভেদে এঁরা ভিন্ন ভিন্ন নামে চিহ্নিত হন।
মনু পরিচিতি :
স্বায়ম্ভব মনু