আন্তর্জাতিক ধ্বনিলিপি :
ইউনিকোড: u+0995
বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {| বর্ণ | বর্ণচিহ্ন | লিখিত প্রতীক | প্রতীক | সঙ্কেতচিহ্ন | যোগাযোগ | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্ত | সত্তা |}
সমার্থকশব্দসমূহ (synonyms): :

বর্ণ-পরিচিতি :
এই বর্ণের নাম -ক বাংলা বর্ণমালার ১২শ বর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণের প্রথম বর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণের পাঁচটি বর্গের প্রথম বর্গের শ্রেণী পরিচিতি মূলক নাম: ক-বর্গ এবং এই বর্গের প্রথম বর্ণ

এর মূল ধ্বনি ক্
অ-ধ্বনি যুক্ত হওয়ার পর এর চিহ্ন দাঁড়ায় ক
এটি জিহ্বামূলীয়, অঘোষ, অল্পপ্রাণ ও স্পর্শ বর্ণ কণ্ঠমূল থেকে উচ্চারিত হয় বলে- এটি সাধারণভাবে কণ্ঠ বর্ণ নামেও চিহ্নিত হয়ে থাকে

শ্রবণ নমুনা


ক-এর লিপি পরিচিতি
অন্যান্য বাংলা লিপির মতই ব্রাহ্মীলিপি থেকে ক-বর্ণটি উদ্ভূত হয়েছে ব্রাহ্মীলিপিতে এই বর্ণটি ছিল অনেকটা যোগ চিহ্নের মতোখ্রিষ্টীয় তৃতীয় শতাব্দী থেকে প্রথম শতাব্দী পর্যন্ত এই যোগ চিহ্নটি অল্পবিস্তর বিকৃত হয়েছে মাত্রনিচের চিত্রে ব্রাহ্মীলিপিতে ক-বর্ণটির বিবর্তনের রূপ দেখানো হলো

কুষাণলিপিতে (১০০-৩০০ খ্রিষ্টাব্দ) দেখা যায় যোগচিহ্নের অনুভূমিক রেখাটির উভয় প্রান্ত ভূমির দিকে আনত হয়েছে গুপ্তলিপিতে (৪০০-৫০০ খ্রিষ্টাব্দ) অনুভূমিক রেখাটির উভয় প্রান্ত ভূমির দিকে আনত অবস্থায় রয়েছে এবং উলম্বরেখাটির নিম্নপ্রান্ত বাম দিকে বেঁকে গেছেনিচের চিত্রে ব্রাহ্মীলিপি থেকে গুপ্তলিপি পর্যন্ত ক-বর্ণের রূপান্তরের নমুনা দেখানো হলো

এরপর আমরা পাই খ্রিষ্টীয় ৬ম-৯ম শতাব্দীতে পাই কুটিললিপিআদি কুটিললিপিতে এই বর্ণটি আধুনিক ক-বর্ণের রূপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছিলখ্রিষ্টীয় ১৩শ ও ১৬শ শতাব্দীতে এই বর্ণটির চিহ্ন কিছুটা অন্যরকম হলেও, শেষ পর্যন্ত কুটিললিপির আদ্য ক-বর্ণটির মতই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেনিচের চিত্রে কুটিললিপি থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত ক-এর ক্রমবিবর্তনের রূপটি দেখানো হলো  

 

আধুনিক বানান রীতি অনুসারে এই বর্ণটির সাথে যে রীতিতে স্বরবর্ণ যুক্ত হয়, তা হলো-

ক +আ =কা  ক +ই=কি  ক+ঈ=কী  ক +উ=কু   ক +ঊ=কূ
ক +ঋ=কৃ   ক +এ =কে  ক +ঐ=কৈ  ক +ও =কো  ক +ঔ=কৌ

ক-এর সাথে যখন অন্য ব্যঞ্জনবর্ণ যুক্ত হয়, তখন কখনো কখনো উভয় বর্ণই পাশাপাশি বসে যুক্ত ধ্বনি সৃষ্ট করে। যেমন-চাকরানি। এখানে- চাক্ ও রানি যখন একত্রে উচ্চারিত হয় তখন ক্ এবং র যুক্তধ্বনি সৃষ্টি করে। কিন্তু কোনো পৃথক বর্ণচিহ্ন দ্বারা প্রকাশ পায় না। আবার কখনো কখনো উভয় ধ্বনি যুক্ত হলে একটি পৃথক ধ্বনিচিহ্ন দ্বারা প্রকাশ পায়। যেমন- ক্ +ষ= ক্ষ। এখানে ক্ষ একটি পৃথক বর্ণ চিহ্ন। এই বিচার আমরা যে সকল পৃথক চিহ্ন পাই, সে গুলো হলো

ংক = অংক     ংক্য =অংক্য ঃক =অন্তঃকরণ
ক +ক =ক্ক। অক্কা    ক +ট=ক্ট। অক্টোবর ক+ট+য =ক্ট্য। অক্ট্যান্ট
ক্‌+ত= রক্ত  ক্ +ত্ +র= ক্ত্র। বক্ত্র  ক্‌+ব =ক্ব। পক্ব
ক্‌+ম=ক্ম। রুক্মিণী   ক্ +য = ক্য। বাক্য ক্ +র= ক্র। বক্র
ক্‌+ল= ক্ল। শুক্ল ক্ +ষ= ক্ষ। ক্ষয়  ক্ +ষ্ +ণ= ক্ষ্ণ। তীক্ষ্ণ
ক্ +ষ্ +ব= ক্ষ্ব। ক্ষ্বেলন  ক্‌+ষ্ +ম= ক্ষ্ম। লক্ষ্মী

ক্‌+ষ্ +ম্ +য= ক্ষ্ম্য। সৌক্ষ্ম্য

ক্ +ষ্ +য=ক্ষ্য। সাক্ষ্য  ক্‌+স=ক্স। পক্স ঙ্ +ক= ঙ্ক। অঙ্কন  
ঙ্ +ক্ +য= ঙ্ক্য। অঙ্ক্য ঙ্ +ক্ +ষ= ঙ্ক্ষ। আকাঙ্ক্ষা ত্ +ক=ৎক। উৎকট 
ত্ +ক্ +ষ= ৎক্ষ। উৎক্ষেপ র্ +ক=র্ক। শর্করা ল্‌+ক= ল্ক। উল্কা 
ল্ +ক্ +য= ল্ক্য। যাজ্ঞবল্ক্য  ষ্ +ক= ষ্ক। শুষ্ক ষ্ +ক্ +র= ষ্ক্র। নিষ্ক্রিয়  
স্ +ক= স্ক। স্কন্দ  

স্ +ক্ +র= স্ক্র। স্ক্রুপ

 

বাংলা ভাষায় 'ক' বর্ণটি পৃথকভাবে রূপতাত্ত্বিক উপকরণ হিসেবে এবং অর্থের বিচারে ব্যবহৃত হয়। যেমন

অর্থের বিচারে ক
১. বিশেষ্য।

. সংস্কৃত কোষ>প্রাকৃত কোস>বাংলা কোহ>কোহা>কোআ>ক।
বিশেষ্য

৩. সংস্কৃত কতি> প্রাকৃত কই> বাংলা কয়,
বিশেষণ

রূপতাত্ত্বিক উপকরণের বিচারে ক
১. ক-আদি গণ
. ক। কথা বলা অর্থে  বাংলাতে ক্রিয়ামূল হিসেবে বিবেচিত হয়। দেখুন : ক [ক্রিয়ামূল]
৩.
-প্রত্যয়
৪. ক-বিভক্তি