কুষাণলিপি
বানান বিশ্লেষণ: ক্+উ+ষ্+আ+ন্+অ+ল্+ই+প্+ই
উচ্চারণ:
ku.ʃan.li.pi
(কু.শান্.লি.পি)
শব্দ-উৎস:
সংস্কৃত
কুষাণ>
বাংলা
কুষাণ+
সংস্কৃত
লিপি>বাংলা লিপি
রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ: কুষাণ নামক লিপি/
কর্মধারয় সমাস
পদ:
বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{
লিখন পদ্ধতি |
রচনা |
লিখিত যোগাযোগ |
যোগাযোগ |
বিমূর্তন |
বিমূর্ত-সত্তা |
সত্তা | }
প্রাচীন ভারতের লিপি বিশেষ।
ব্রাহ্মীলিপির
একটি সংস্করণ। খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০ অব্দ থেকে ১০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই
ব্রাহ্মীলিপি
ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে নানাভাবে পরিবর্তিত হয়ে বিভিন্ন লিপির সৃষ্টি করেছিল। মৌর্য যুগের শেষে
এই লিপিটি খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০-১৮৫ অব্দ) প্রচলিত ছিল।
মৌর্যবংশের রাজত্বের শেষের দিকে একাধিক রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। এদের ভিতরে মগধে
শুঙ্গ বংশীয়রা
প্রতিষ্ঠিত হলেও, মগধ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দাক্ষিণাত্যে
সাতবাহন রাজবংশের
(খ্রিষ্টপূর্ব ২৭ থেকে ১৯৬ খ্রিষ্টাব্দ) নৃপতিরা স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। এর ভিতরে স্বল্প সময়ের জন্য
কান্ব রাজবংশ
(খ্রিষ্টপূর্ব ৭৩-২৮ অব্দ)-এর শাসনকাল পাওয়া যায়। এই সময় দেশীয় রাজাদের কোন্দলের ফলে, ভারতে একক শক্তিশালী সাম্রাজ্য গড়ে উঠে নি। এই সুযোগে
বিদেশীরা ভারতবর্ষে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে। এর ভিতরে উল্লেখযোগ্য ছিল ব্যাক্ট্রীয় গ্রিক, শক, পহ্লব,
কুষাণ।
এই সব বিদেশীদের মধ্যে কুষাণরা শক্তিশালী শাসক হিসেবে স্থিতি লাভ করেছিল। এই
কুষাণ
আমলে
ব্রাহ্মীলিপির
সামান্য পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনের ধারাকে কুষাণলিপি নামে অভিহিত করা হয়। এই ধারার সময়কাল ধরা হয়,
১০০ থেকে ৩০০ খ্রিষ্টাব্দ।
৪০০ থেকে ৪৫০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে ভারতবর্ষের গুপ্তবংশীয় রাজাদের রাজত্বকালে, সারা
উত্তর ভারতে কুষাণলিপি বিবর্তিত হয়ে যে রূপ পায় তাকেই গুপ্তলিপি বলা হয়। মূলত
গুপ্তলিপিটি হলো একটি কল্পিত নাম। গুপ্তরাজাদের আমলে সংস্কৃত ভাষার গ্রন্থাদি এই
লিপিতে লেখা হতো। এর নমুনা পাওয়া গেছে মধ্য ভারত এবং মধ্য প্রদেশের বিভিন্ন পাত্রের
গায়ে। মূল গুপ্তলিপিতে ছিল ৫টি স্বরবর্ণ এবং ৩২টি
ব্যাঞ্জনবর্ণ। এই লিপি লেখা হতো বাম থেকে ডান দিকে। এই মূল লিপি থেকে মোট চারটি
লিপি তৈরি হয়েছিল। এই ভাগগুলো হলো‒পূর্বাঞ্চলীয়, পশ্চিমাঞ্চলীয়, দক্ষিণাঞ্চলীয় ও মধ্যাঞ্চলীয়। গুপ্তলিপির পরিবর্তন যা ঘটেছিল তা
কিছু রেখার হেরফের মাত্র। যেমন গুপ্তবংশীয় রাজা সমুদ্রগুপ্তের সময় এলাহাবাদ অঞ্চলে
এই লিপির যে নমুনা পাওয়া গেছে, তাতে হ্রস্ব ইকারের দুটি বিন্দুর আগে একটি রেখা ছিল।
দক্ষিণ রীতিতে এই রেখা কিছুটা বক্রতা লাভ করেছিল।
নিচে
ব্রাহ্মীলিপি
থেকে কুষাণলিপি এবং কুষাণলিপি থেকে গুপ্তলিপির উত্তরণের পর্যায়ক্রমিক কিছু নমুনা দেখানো হলো।
অ |
|
আ |
|
ই |
|
উ |
|
ঊ |
|
এ |
|
ক |
|
খ |
|
গ |
|
্ঘ |
|
ঙ |
|
চ |
|
ছ |
|
জ |
|
ঝ |
|
ঞ |
|
ট |
|
ঠ |
|
ড |
|
ঢ |
|
ণ |
|