কপর্দ
বানান বিশ্লেষণ: ক্++প্+অ+র্+দ্+অ
উচ্চারণ:
[.পোর্‌দ্.দো] [
kɔ.pord̪.d̪o]

.পোর্‌দ্.দোক্ [অর্ধ-বিবৃত ক উচ্চারিত হবে। এর পর্দ-এর র্দ অংশ র-ফলার জন্য দ্বিত্ব হবে। ফলে, পর্দ হবে পর্দ্‌.দো। মধ্যবর্তী প ধ্বনি পো হওয়ায় উচ্চারিত হবে পোর্‌দ। অবশিষ্ট দ ধ্বনি ওকারান্তো হবে।]

শব্দ-উৎস: সংস্কৃত पर्द्द (কপর্দ্দ)>বাংলা কপর্দ
রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ:
(গঙ্গাজল) +পৃ  (পূরণ করা)+ বিচ্ (ভাবার্থে)=কপর্ +দ (প্রদান)

পদ: বিশেষ্য

১. ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { | জটা | চুল | দেহাবরক | প্রাকৃতিক আবরক | প্রাকৃতিক লক্ষ্যবস্তু | সমগ্র | দৈহিক লক্ষ্যবস্তু | দৈহিক সত্তা | সত্তা |}

অর্থ: মহাদেব বা শিবের জটা


প্রাচীন ভারতে অবিবাহিত মেয়েরা দীর্ঘ চুলকে চারটি ভাগে ভাগ করে সূক্ষ্ণবেণী রচনা করতো। পরে এই চারটি বেণী আবার একত্রিত করে একটি একক বেণী রচনা করতো। এই বড় বেণীকে বলা হতো কপর্দ্দ। এর অপর নাম ছিল চতুষ্কাপর্দ্দ। সে সময়ে পুরুষরাও দীর্ঘ চুল রাখতো। সন্ন্যাসী ও ঋষিদের মাথার লম্বা চুল জট বেধে চতুষ্কাপর্দ্দ দশাপ্রাপ্ত হতো। সেই সূত্রে পুরুষদের এই জটাকে কপর্দ্দ বলা হতো। এই সূত্রে হিন্দু পৌরাণিক দেবতা
মহাদেব-এর মাথার জটক কপর্দ্দ বলা হয়।

 

. ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { গ্যাস্ট্রোপোডা | মোলাস্কা | অমেরুদণ্ডী প্রাণী | প্রাণী | জীবসত্তা | জীবন্তবস্তু | দৈহিক-লক্ষ্যবস্তু | দৈহিক সত্তা | সত্তা |}
অর্থ: মোলাস্কা পর্বের এক প্রকার সামুদ্রিক প্রাণী। এই প্রাণীর শক্ত খোলসকে কপর্দ্দ বলা হয়। [দেখুন: কড়ি (জীববিজ্ঞান)]
সমার্থক শব্দাবলি: কড়ি, কপর্দ।


৩.
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {| বিনিময়-মাধ্যম | মানদণ্ড | অভিসম্বন্ধ | নির্দেশক | সঙ্কেতচিহ্ন | যোগাযোগ | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্ত | সত্তা |}

অর্থ : এমন কোনো মাধ্যম, যার দ্বারা সকল দ্রব্যের বিনিময় মান নির্ধিরত হয় এবং ওই মাধ্যমের মান সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়। ফলে ওই বিনিময় মাধ্যম সঞ্চয়ের বাহন হিসেবে কাজ করে। সুনির্দিষ্ট একটি দেশের বিচারে এই মাধ্যমের মান রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্ধারিত থাকে। প্রাচীন ভারতে মোলাস্কা পর্বের কপর্দ নামক প্রাণীর খোলসকে দ্রব্য বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতো। কালক্রমে মুদ্রার অপর নাম হয়ে দাঁড়ায় কপর্দ।
              দেখুন : মুদ্রা (অর্থনীতি)

সমার্থক শব্দাবলি: অর্থ, কড়ি, কপর্দ, মুদ্রা, টঙ্ক, টাকা।