সত্য
বানান বিশ্লেষণ: স্+অ+ত্+য
উচ্চারণ:
ʃot̪.t̪o
(শোত্. তো)
শব্দ-উৎস:
সংস্কৃত সত্য>
বাংলা সত্য
রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ:
সৎ +
য (যৎ)
পদ :
বিশেষ্য
-
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{ঘটিততথ্য
| জ্ঞানতথ্য |
জ্ঞান |
অভিজ্ঞা |
মনস্তাত্ত্বিক ঘটনা |
বিমূর্তন |
বিমূর্ত সত্তা |
সত্তা |
}
- অর্থ:
সত্য হলো
−
ঠিক যা তা-ই। এখানে 'যা' হলো- সত্তার পূর্ণ পরিচয়। এই 'পূর্ণ পরিচয়' হলো একটি সত্তার কাছে অন্য সত্তার আবিষ্কৃত সর্বশেষ পরিচয়। সত্তার পরিচয় লাভের ভিতর দিয়ে বিশ্বাস জন্মে। আর বিশ্বাসের ভিতর দিয়ে সত্যের উদ্ভব হয়।
যেভাবেই হোক, মানুষের মনে যখন কোনো অনুভূতির জন্ম তখন, তা গ্রহণ করে তার 'আমি' নামক সত্ত্বা। এই অনুভূতি হলো একটি তথ্যের আদি স্তর এবং একটি মনস্তাত্ত্বিক ঘটনা। ইন্দ্রিয়সমূহের কাজ হলো−তার আওতাধীন তথ্যাদি তার বিভাগের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ ডিভাইসের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এই ডিভাইসের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে 'আমি' উজ্জীবিত হয়। এই উজ্জীবনের সূত্রেই 'আমি'র 'উপলব্ধি' নামক অনুভূতির জন্ম নেয়। এই 'উপলব্ধি' মস্তিষ্কের স্মৃতিভাণ্ডারে সংরক্ষিত হয়। উপলব্ধির দ্বারা প্রতিটি অনুভূতিকে জানা হয়, আর এই জানাটা স্মৃতিতে রক্ষিত হয়।
মানুষ তার ইন্দ্রিয় দ্বারা যখন কোনো কিছু অনুভব করে, তখন তার কাছে নতুন কিছু তথ্য
প্রকাশিত হয়। এটাকে বলা যায় আদি বা প্রাথমিক অনুভব। এই অনুভবের ভিতর যে ক্ষুদ্র
জ্ঞানের সৃষ্টি হয়, তাই হলো প্রাথমিক জ্ঞান বা অভিজ্ঞা। অভিজ্ঞা মানুষের
স্মৃতিভাণ্ডারে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তথ্য হিসেবে সংরক্ষিত থাকে। আর
বহুবিধ অভিজ্ঞার সুসমন্বয়ে সৃষ্টি হয় জ্ঞান। তাই জ্ঞানের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞা
হলো ক্ষুদ্রতম মৌলিক উপাদান। আর জ্ঞানের উচ্চতর স্তর হলো
প্রজ্ঞা।
মানুষ যখন জ্ঞানের চর্চা করে, তখন তার মস্তিষ্কে জন্ম নেয় অজস্র নতুন নতুন তথ্য । জ্ঞান চর্চার ভিতর দিয়ে মানুষের মনে অভিজ্ঞতার জন্ম হয়। আবার এই তথ্য এবং অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে তৈরি হয় নতুন তথ্য। এই তথ্যটিই হলো- জ্ঞানতথ্য। মূলত কোনো বিদ্যমান বা ঘটিত বিষয় সম্পর্কে জ্ঞানতথ্যের খণ্ডিতরূপ। ঘটিততথ্যের মধ্য দিয়ে এমন একটি চূড়ান্ত জ্ঞানের উন্মেষ ঘটে, যা হয়ে ওঠে সত্য। এক কথায়- 'ঠিক যা তাই'।
- সমার্থক শব্দাবলি:ঠিক যা তাই, যথার্থ, সত্য ,
হক।