য
আন্তর্জাতিক ধ্বনিলিপি
:
ɟɔ
ইউনিকোড:
u+09AF
বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{|
বর্ণ
|
বর্ণচিহ্ন |
লিখিত প্রতীক
|
প্রতীক
|
সঙ্কেতচিহ্ন
|
যোগাযোগ |
বিমূর্তন
|
বিমূর্ত
সত্তা
|
সত্তা
|}
সমার্থকশব্দসমূহ
(synonyms):
য, অন্তঃস্থ য।
এই বর্ণের নাম
-য
।
বাংলা বর্ণমালার
সপ্তত্রিংশ (৩৭)
বর্ণ,
ব্যঞ্জনবর্ণের
২৬ সংখ্যক
বর্ণ।
য-এর লিপি পরিচিতি
অন্যান্য বাংলা লিপির মতই
ব্রাহ্মীলিপি
থেকে য উদ্ভূত হয়েছে।
খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় শতাব্দীর ভিতরে এই বর্ণটির
চিহ্ন ছিল অনেকটা ত্রিশূল বা নোঙরের মতো।
খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে এই বর্ণটি অনেকটা ইংরেজি ডব্লিউ
বর্ণের আকার ধারণ করেছিল।
কোন কোন পাঠে তা আবার ইংরেজি ইউ বর্ণের মতো পাওয়া যায়।
নিচের ছকে
ব্রাহ্মীলিপিতে
য বর্ণটির ক্রমবিবর্তন দেখানো হলো।
কুষাণলিপিতে (১০০-৩০০ খ্রিষ্টাব্দ) য-বর্ণটি খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় প্রথম শতাব্দীর ব্রাহ্মীলিপি মতো ছিল। এর একটি প্রকরণের আকার ছিল ইংরেজি ওয়াই-বর্ণের মতো। বিবর্তনের ধারায় এই প্রকরণটিই গুপ্তলিপিতে (৪০০-৫০০ খ্রিষ্টাব্দ) গৃহীত হয়েছিল। নিচের চিত্রে ব্রাহ্মীলিপি থেকে গুপ্তলিপি পর্যন্ত ক-বর্ণের রূপান্তরের নমুনা দেখানো হলো―
কুটিললিপিতে
এই বর্ণটি বিভিন্ন রূপ নিলেও এর কোনো না কোনো প্রকরণে আধুনিক য-এর আভাষ পাওয়া
গিয়েছিল।
১০ম-১১শ খ্রিষ্টাব্দে এর আকার আধুনিক য-এর রূপ নিয়েছিল।
পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন লিপিকারদের হাতে এর আকার একটু-আধটু পাল্টালেও মূল অবয়ব
প্রায় একই ছিল।
নিচের ছকে এই বর্ণটির ক্রমবিবর্তনের নমুনা দেখানো হলো।
য-যুক্ত যুক্তবর্ণ
অন্য বর্ণের সাথে য-ফলা
মূলত অন্য ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে যুক্তবর্ণই তৈরি করে। এছাড়া অন্য যুক্তবর্ণের সাথে
যুক্ত হয়ে ভিন্নতর যুক্তবর্ণের সৃষ্টি করে।
ব্যঞ্জনবর্ণের
সাথে য-যুক্ত হলে, তাকে য ফলা বলা হয়। এর ধ্বনি চিহ্ন
।
এই চিহ্নটি ব্যঞ্জনবর্ণের পরে যুক্ত হয়। যেমন- ক্+য=ক্য
কিছু ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে
ব্যবহৃত
বটে, কিন্তু তা এ্যা ধ্বনির চিহ্ন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন-ঘ্যাগ, ছ্যাবলা,
ট্যারা, ঢ্যামনা, হ্যাঙলা
এই
বিচারে যুক্তবর্ণ হিসেবে য-কে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। ভাগ দুটির একটি এ্যা
ধ্বনিমূলক
চিহ্ন। অপরটি হলো য-ফলা।
য-যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের তালিকা
ক্য [ক+য্]: বাক্য খ্য [খ্+য]: মুখ্য গ্য [গ্+য]: ভাগ্য চ্য [চ্+য]: বাচ্য জ্য [জ্+য]: ভাজ্য ট্য [ট্+য]: নাট্য ঠ্য [ঠ্+য]: পাঠ্য ড্য [ড্+য]: জাড্য ঢ্য [ঢ্+য]: ধনাঢ্য ণ্য [ণ্+য]: গণ্য ত্য [ত্+য]: সত্য থ্য [থ্+য]: তথ্য দ্য [দ্+য]: গদ্য ধ্য [ধ্+য]: মধ্য |
ন্য [ন্+য]: অন্য প্য [প্+য]: প্রাপ্য ফ্য [ফ্+য]: শব্দ নাই ব্য [ব্+য]: নব্য ভ্য [ভ্+য]: সভ্য ম্য [ম্+য]: রম্য য্য [য্+য]: ন্যায্য র্য [র্ +য]: র্-এর য-যুক্ত হলে, তা রেফযুক্ত হয়ে যায়। যেমন: সূর্য। ল্য [ল্+য]: কল্য শ্য [শ্+য]: বৈশ্য ষ্য [ষ্+য]: শিষ্য স্য [স্+য]: শস্য হ্য [হ্+য]: সহ্য |
যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে
য-ফলা
একটি ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে য-ফলার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে
যুক্তবর্ণের সাথে এ্যা ধ্বনির বিচারে
চিহ্ন ও য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন-
ক্+ট্+এ্যা :অক্ট্যান্ট =এ্যা ধ্বনি তৈরি করে।
ক্+ষ্+য: সাক্ষ্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ক্+ষ্+ম্+য: সৌক্ষ্ম্য= য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
গ্+ধ্+য : বাগ্বৈদগ্ধ্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়গ্+ন্+য : অগ্ন্যুৎপাত = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
গ্+র্+য : অগ্র্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ঙ্+ক্+য : অঙ্ক্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ঙ্+ঘ্+য : অলঙ্ঘ্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ট্+র্+য : ট্র্যাজিডি = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ণ্+ঠ্+য : কণ্ঠ্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ণ্+ড্+য : অখণ্ড্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ত্+ম্+য : দৌরাত্ম্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ত্+র+য : বৈচিত্র্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
দ্+ব্+য : দ্ব্যঙ্গুল = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ন্+ত্+য : অন্ত্যজ = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ন্+ত্+র্+য : স্বাতন্ত্র্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ন্+দ্+য : অনিন্দ্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ন্+ধ্+য : সন্ধ্যা = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়প্+ল্+এ্যা : প্ল্যাটফর্ম =এ্যা ধ্বনি তৈরি করে।
ফ্+ল্+এ্যা : ফ্ল্যাটবাড়ি =এ্যা ধ্বনি তৈরি করে।
ব্+ল্+এ্যা : ব্ল্যাক =এ্যা ধ্বনি তৈরি করে।
র্+ঢ্+য : দার্ঢ্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়র্+ণ্+য : ঘূর্ণ্যমান = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
র্+ত্+য : অমর্ত্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়র্+থ্+য : সামর্থ্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
র্+দ্+য : সৌহার্দ্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়র্+ধ্+য : অবরার্ধ্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
র্+ব্+য : আনুপূর্ব্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ল্+ক্+য : যাজ্ঞবল্ক্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ল্+প্+য : অকল্প্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ষ্+ট+য : বৈশিষ্ট্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ষ্+ঠ্+য : কণ্ঠ্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ষ্+ণ্+য : ঔষ্ণ্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ষ্+ম্+য : ঔষ্ম্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
স্+ট্+এ্যা : স্ট্যাম্প =এ্যা ধ্বনি তৈরি করে।
স্+ত্+য : অগস্ত্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
স্+থ্+য : স্বাস্থ্য = য-ফলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
য-এর উচ্চারণ
এটি প্রশস্ত দন্তমূলীয় তালব্য ধ্বনি (Dorso-Alveolar, Palatal), ঘোষ, অল্পপ্রাণ ও স্পর্শ বর্ণ।
স্বাধীনভাবে উচ্চারণযোগ্য রূপ হলো- য্ +অ=য। সমতুল্য উচ্চারণ জ-এর মতো [শ্রবণ নমুনা]
য-যুক্ত বর্ণের উচ্চারণ বিধি।
য
নিজের সাথে যুক্তবর্ণ তৈরি করে, যেমন- শয্যা।
কিন্তু অন্যবর্ণের পূর্বে বসে না।
ব্যঞ্জনবর্ণের
সাথে য-যুক্ত হলে, তাকে য ফলা বলা হয়। এর ধ্বনি চিহ্ন
।
এই চিহ্নটি ব্যঞ্জনবর্ণের পরে যুক্ত হয়। যেমন-
ক্+য=ক্য
বাংলা বর্ণমালায় স্বরবর্ণের তালিকায় তীর্যক- এ ধ্বনির জন্য কোনো চিহ্ন নেই।
এই ধ্বনি প্রকাশ করার জন্য এ্যা বা অ্যা ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে
চিহ্নটি
কোনো য-ফলা অর্থে ব্যবহৃত হয় না। এ্যা বা অ্যা পুরোটুকু পৃথক চিহ্ন হিসেবে
বিবেচিত হয়। উল্লেখ্য এ ধ্বনির অপর রূপ হলো এ্যা। তাই এক্ষেত্রে অ্যা
চিহ্নের চেয়ে এ্যা চিহ্ন ব্যবহার করাই উচিৎ।
য-ফলা-যুক্ত ধ্বনিচিহ্ন শব্দের আদি-মধ্য-অন্ত্যে দেখা যায়। এই তিনটি
অবস্থান অনুসারে য-ফলা উচ্চারণে ভিন্নতা সৃষ্টি করে। যেমন-
আদ্য-য ফলা বিধি
শুধু
য-ফলা-যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি শব্দের আদিতে থাকলে, স্বাভাবিকভাবে এ্যা
ধ্বনি তৈরি করে। তবে সকল বর্ণের সাথে এরূপ য-ফলাযুক্ত ধ্বনি শব্দের
আদিতে পাওয়া যায় না। শব্দের আদিতে শুধু য-ফলা-যুক্ত ৬টি
ব্যঞ্জনবর্ণ পাওয়া যায়। এগুলো হলো চ, ত, ন, ব, স এবং হ ।
যেমন- চ্যবন, ত্যক্ত, ন্যস্ত, ব্যক্ত, স্যমন্তক, হ্যস্তন।
উল্লেখ্য, পৃথকভাবে দ-এর সাথে শুধু য-ফলা না বসলে, দ্বি শব্দ
সন্ধির নিয়মে দ্ব্য হয়। যেমন- দ্ব্যঙ্গুল, দ্ব্যর্থ, দ্ব্যশীতি,
দ্ব্যহ।
য-ফলা-যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি শব্দের পরের বর্ণের সাথে ই-কার বা ঈকার
থাকলে, আদ্যবর্ণের উচ্চারণ এ-ধ্বনিতে পরিণত হবে। যেমন- ব্যতিক্রম,
ব্যতীত ইত্যাদি।
য-ফলা-যুক্ত বর্ণের সাথে আকার (া) থাকলেও তার উচ্চারণ এ্যা হয়। মূলত এই উচ্চারণটি স্বরধ্বনি 'এ্যা'-এর প্রতিনিধিত্ব করে। সেই কারণে প্রথমবার শোনা আদ্য এ্যা ধ্বনি যুক্তশব্দও কেউ লিখতে গেলে য-ফলার সাথে আকার যুক্ত করে দেন। তাই শব্দের আদিতে এ্যা ধ্বনির বানানটা 'আকার-যুক্ত য-ফলা' স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হতে পারে। অবশ্য ণ, য় জাতীয় যে সকল বর্ণ সাধারণত শব্দের আদিতে ব্যবহৃত হয় না, সে সকল বর্ণের সাথে আকারযুক্ত য-ফলার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় না। তাই তৎসম ও অ-তৎসম মিলে এর দীর্ঘ তালিকা তৈরি হতে পারে। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে প্রতিটি ব্যঞ্জনবর্ণের একক এবং এর সাথে সম্পর্কিত যুক্তবর্ণের একটি করে উদাহরণ দেওয়া হলো।
ক্যামেলিয়া, ক্ষ্যান্ত, খ্যাতি, গ্যাস, ঘ্যাগ, চ্যাংরা, ছ্যাবলা, জ্যান্ত, ঝ্যাঁটা, ট্যারা, ট্র্যাজিডি, ঠ্যাঙ, ড্যাবড্যাবে, ঢ্যামনা, ত্যাগ, থ্যাৎলা, দ্যাবা, ধ্যান, ন্যায়, প্যান্ট, প্ল্যাটফর্ম, ফ্যান, ফ্ল্যাট, ব্যাকুল, ব্ল্যাক, ভ্যান, ম্যাজিক, ল্যাংড়া, শ্যামা, ষ্ট্যাম্প, স্যান্তামি, হ্যাদারাম।
য-ফলা-যুক্ত বর্ণের সাথে আকার (া) ছাড়া অন্য কারচিহ্ন যুক্ত থাকলে, তা যুক্ত কারচিহ্নের ধ্বনিকেই অনুসরণ করবে। যেমন−
চ্যুত, জ্যেঠা, জ্যৈষ্ঠ, জ্যোতি, জ্যৌৎস্না ইত্যাদি।
শব্দের মধ্য য ফলার উচ্চারণ বিধি
বাংলাতে শব্দের মধ্যে ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে য-ফলা থাকলে, উক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণ দুই বার হয়। তবে অল্পপ্রাণ ও মহাপ্রাণ ধ্বনির বিচারে এই উচ্চারণ প্রকৃতির পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন-
অল্পপ্রাণ ব্যঞ্জনধ্বনির দ্বিত্বরূপ: ক, গ, চ, জ, ট, ড, ণ, ত, দ, ন, প, ব, ম, য, ল, শ, ষ, স এর ক্ষেত্রে মূল ধ্বনির দ্বিত্ব হয়। এবং শেষ ধ্বনিটি ওকারান্ত হয়। যেমন-
ক্য (ক্. কো): বাক্যনবাব [বাক্.কো. ন.বাব্]
গ্য (গ্.গো): ভাগ্যহারা [ভাগ্.গো. হা.রা]
চ্য (চ্.চো): প্রাচ্যদেশ [প্রাচ্.চো.দেশ্]
জ্য (জ্.জো): রাজ্যলাভ [রাজ্.জো.লাভ্]
ট্য (ট্.টো): নাট্যশালা [নাট্.টো.শা.লা]
ড্য (ড্.ডো): জাড্যরূপ [জাড্.ডো.রূপ্]
ণ্য (ন্.নো): গণ্যমান্য [গোন্.নো.মান্.নো]
ত্য (ত্.তো): ব্রাত্যজন [ব্রাত্.তো.জন্]
দ্য (দ্.দো): বিদ্যমান [বিদ্.দো.মান্]
ন্য (ন্.নো): মান্যবর [মান্.নোবর্]
প্য (প্.পো): প্রাপ্যসম্পদ [প্রাপ্.পো.সম্.পোদ্]
ব্য (ব্.বো): নব্যধনী [নোব্.বো. ধো.নি]
ম্য (ম্.মো): ভ্রাম্যমান [ভ্রাম্.মো.মান্]
য্য (জ্.জো): ন্যায্যদাবি [ন্যজ্.জো.দা.বি]
ল্য [ল্.লো]: কল্যবর্ত [কোল্.লো.বর্ত্.তো]
শ্য [শ্.শো]: কাশ্যপ [কাশ্.শোপ্]
ষ্য [শ্.শো]: শিষ্যগণ [শিশ্.শো.গন্]
স্য [শ.শো]:
শস্যরাশি [শোশ্.শো.রা.শি]
ব্যতিক্রম:
অব্যয়। এর উচ্চারণ অব্.ব্যায়্ হয় না। বাংলাতে এর উচ্চারণ অব্.বয়্। এই
বিচারে হয় অব্যয়ীভায় সমাস।
মহাপ্রাণ ব্যঞ্জনধ্বনির দ্বিত্বরূপ: মহাপ্রাণ বর্ণের সাথে য-ফলা যুক্ত হলে, মূল ধ্বনির পূর্বের অল্পপ্রাণ আগে উচ্চারিত হয়, পরে মূল মহাপ্রাণ ধ্বনি ওকারান্ত হয়ে উচ্চারিত হয়। যেমন- প বর্গের চতুর্থ মহাপ্রাণ ধ্বনি ভ। এর পূর্ববর্তী অল্পপ্রাণ ধ্বনি ব। তাই ভ্য এর উচ্চারণ হবে 'ব্.ভো'। যেমন সভ্য শব্দের উচ্চারণ হবে- শোব্.ভো। এই জাতীয় উচ্চারণ প্রযোজ্য হবে- খ, ঘ, ছ, ঝ, ঠ, ঢ, থ, ধ, ফ, ভ-এর ক্ষেত্রে। উদাহরণ-
খ্য [ক্.খো]: মুখ্যমন্ত্রী [মুক্.খো. মোন্.ত্রি]
ঘ্য [গ্.ঘো]: অর্ঘ্যপাত্র [অর্গ্.ঘো.পাত্.ত্রো]
ছ্য [চ্.ছো]: শব্দ পাওয়া যায় নাই।
ঝ্য [জ্.ঝো]: শব্দ পাওয়া যায় নাই
ঠ্য [ট্.ঠো]: পাঠ্যসূচি [পাট্.ঠো.সু.চি]
ঢ্য [ড্.ঠো]: আঢ্যকুলীন [আড্.ঢো.কু.লিন্]
থ্য [ত্.থো]: তথ্যবিভ্রাট [তোত্.থো.বিব্.ভ্রাট্]
ধ্য [দ্.ধো]: মধ্যবর্তী [মোদ্.ধো.বোর্ত্.তি]
ফ্য [প্.ফো]: শব্দ পাওয়া যায় নাই।
ভ্য
[ব্.ভো]: সভ্যতা [শোব্.ভো.তা]
যুক্তবর্ণের সাথে য-ফলা: যে কোনো যুক্তবর্ণের সাথে য-ফলা থাকলে,
শেষ বর্ণের উচ্চারণ ওকারান্ত হয়। এক্ষেত্রে ওই বর্ণটির দ্বিত্ব উচ্চারণ
হয় না। যেমন-
সাক্ষ্য [সা+ক্+ষ্+য]= শাক্.খো
হ্য-এর বিধি: হ-এর সাথে য ফলা যুক্ত হলে, জ-এর ধ্বনি আগে উচ্চারিত হয়। ফলে প্রাথমিকভাবে এর উচ্চারণ হয়- জ্.জো। কিন্তু শেষের জো-ধ্বনির সাথে হ যুক্ত হয় মহাপ্রাণ ঝ উচ্চারিত হয়। যেমন
সহ্য=
শোজ্.জো-হ> শোজ্.ঝো
শব্দের আদ্য
ধ্বনিতে শব্দের মধ্য য ফলার প্রভাব
শব্দের আদিতে যদি শুধু
অ-কার যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি থাকে (যেমন ক, খ, গ, ইত্যাদি), তাহলে পরবর্তী
য-ফলার প্রভাবে তা ওকারান্ত হয়। যেমন-
নব্য [নোব্.বো]
গদ্য [গোদ্.দো]
সদ্য [শোদ্.দো]
সভ্য [শোব্.ভো]
ইত্যাদি
কিন্তু শব্দের আদিতে অ ধ্বনি যদি না-বোধক হয়, এবং শব্দের আদ্য স সাথে অর্থে থাকে, তাহলে, আদ্য অ- 'ও'-এর মতো হয় না। যেমন-
অ (না-বোধক)
অন্যুন [অন্.নু.নো]
অব্যবস্থা [অব্.ব্যা.বোস্ থা]
ইত্যাদি
স (সাথে অর্থে)
সব্যথ (শ.ব্যাথ্):
ব্যথাযুক্ত
শব্দের অন্ত্যে
ব্যবহৃত আকারযুক্ত য-ফলার উচ্চারণ
শব্দের আদি বা মধ্যবর্তী স্থানে আকারযুক্ত য-ফলা এ্যা ধ্বনি তৈরি করলেও,
শব্দের শেষে যদি আকারযুক্ত য-ফলা আ ধ্বনি তৈরি করে। যেমন-
ব্যাখ্যা: ব্যাক্.খা
কন্যা: কোন্.না
বন্যা: বোন্.না
শয্যা:
শোজ্.জা
যুক্তবর্ণের
সাথে য-ফলা: যে কোনো যুক্তবর্ণের সাথে য-ফলা থাকলে, শেষ বর্ণের সাথে যে
ব্যঞ্জনধ্বনি ধ্বনি থাকেই তারই উচ্চারণ হয়। এক্ষেত্রে ওই বর্ণটির দ্বিত্ব
উচ্চারণ হয় না। যেমন-
অগ্ন্যুৎপাত [অ+গ্+ন্+য্+উ+ৎ+পাত্]=
অগ্.নুৎপাত্
য- প্রত্যয়
১. সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয়
য,
য (ক্যপ),
য (ণ্যৎ),
য (যঙ্),
য (যৎ)
২.
সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়
য (যক),
য (যৎ),
য (ষ্যঞ্)