শান্তিদেব ঘোষ
(১৯১০-১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দ)
লেখক ও গবেষক, কণ্ঠশিল্পী, নৃত্যশিল্পী ও অভিনেতা।

১৯১০ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মে (১৩১৭ বঙ্গাব্দের ২৪ বৈশাখ), ব্রিটিশ ভারতের পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের চাঁদপুরের নিকটনর্তী বাজাপ্তি গ্রামে (বর্তমান বাংলাদেশ-এর চাঁদপুর জেলায় অবস্থিত), শান্তিদেব ঘোষ জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম কালীমোহন ঘোষ, মায়ের নাম মনোরমা দেবী।

তাঁর পিতা কালীমোহন ঘোষকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে গ্রামোন্নয়নের কাজে নিযুক্ত করেছিলেন। পরে তিনি তাঁকে শান্তিনকেতন-এ এনে সেখানেই গ্রাম সংস্কারের কাজে নিযুক্ত করেন। কালীমোহন যখন সপরিবারে শান্তিনিকেতন আসেন, তখন শান্তিদেবের বয়স ছিল ৬ মাস। তখন তাঁর নাম ছিল শান্তিময়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর নাম পালটে "শান্তিদেব" রাখেন।

শৈশবে শান্তিদেবের পড়াশোনা শুরু করেন শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মবিদ্যালয়ে। এখানে তিনি রবীন্দ্রনাথ দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে সংগীত, নৃত্য ও অভিনয় শেখেন এবং এই সকল বিষয়ে তিনি বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেন। হিন্দুস্থানি সংগীত শেখেন ভীমরাও শাস্ত্রীর কাছে।

১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শিক্ষক হিসেবে বিশ্বভারতীতে যোগ দেন। পরে তিনি বিশ্বভারতীর সংগীত ভবনে রবীন্দ্রসংগীত ও নৃত্য বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হয়েছিলেন।
১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে ইলা ঘোষের সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়।
১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে সংগীতভবনের পরিচালকের দায়িত্ব নেন।
১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে সংগীতভবনের অধ্যক্ষ হন|
১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আকাশবাণী কলকাতার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর, তিনি
রবীন্দ্রসংগীত ও নৃত্যের প্রধান অধ্যাপকের দায়িত্ব পান।
১৯৫৬-৬০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভারতের সংগীত-নাটক অকাদেমির প্রকাশনা সমিতির সদস্য হন।
১৯৬৪-৬৮ ও ১৯৭১-৭৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করেন।

সম্মাননা ও পুরস্কার

১৯৭৭: সংগীত-নাটক অকাদেমির ফেলোশিপ।
১৯৮০: সংস্কৃতি জগতে অসামান্য অবদানের জন্য সুরেশচন্দ্র স্মৃতি আনন্দ পুরস্কার।
১৯৮৪: পদ্মভূষণ সম্মান।
১৯৮৪: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সম্মান "দেশিকোত্তম"।
১৯৯১: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডি. লিট.
এছাড়া বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডি. লিট. প্রদান করেছিল এবং কলকাতার রবীন্দ্রচর্চাকেন্দ্র থেকে তিনি "রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য" উপাধি পেয়েছিলেন।

প্রকাশিত গ্রন্থ