বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: আমি পথ-মঞ্জরি ফুটেছি আঁধার রাতে
আমি পথ-মঞ্জরি ফুটেছি আঁধার
রাতে
গোপন অশ্রু-সম রাতের নয়ন-পাতে॥
দেবতা চাহে না
মোরে
গাঁথে না
মালার ডোরে
অভিমানে তাই ভোরে শুকাই শিশির-সাথে॥
মধুর সুরভি ছিল আমার পরান ভরা,
আমার কামনা ছিল মালা হয়ে ঝ'রে
পড়া।
ভালোবাসো পেয়ে
যদি
আমি কাঁদিতাম
নিরবধি,
সে-বেদনা ছিল ভালো, সুখ ছিল সে কাঁদাতে॥
- ভাবার্থ: পথ-পাশে অবহেলিত পুষ্পমঞ্জরীর অকৃতার্থ আকাঙ্ক্ষার কথা এই গানে
উপস্থাপিত হয়েছে। যদিও এই গানের 'পথমঞ্জরী' শব্দটিতে কবি এই গানের রাগ 'পটমঞ্জরী'র
ইঙ্গিত রেখেছেন, কিন্তু গানের অবশিষ্ট অংশে এই রাগে কোনো লক্ষণ প্রকাশ করা হয় নি।
এই বিচারে এ গানটি হয়ে উঠেছে শুধুই অপাঙ্ক্তেয় 'পথমঞ্জরী'র বেদনার গান।
এই পথমঞ্জরীর আকাঙ্ক্ষা ছিল, সে মালা হয়ে কোনো দেবতার পায়ে অর্ঘ হয়ে নিবেদিতা হবে।
প্রেমহীন অবহেলিতা এই পথমঞ্জরী রাতের আঁধারে প্রস্ফুটিত হয়ে- বিরহিণী প্রেমিকার
অভিমান বিজড়িত গোপন অশ্রুর মতো, নির্ঘুম রাতের চোখের পাতায় আর্দ্র করে জেগে থাকে।
অবশেষে ভোরের শিশিরের সাথে তাঁর অভিমানী অশ্রু শুকিয়ে যায় সঙ্গোপনে।
পথমঞ্জরীর মধুর সৌরভ ছিল পরান ভরা, কামনা ছিল সফল প্রেমের মালা হয়ে আত্মনিবেদনে শেষে
নিঃশেষিত হওয়ার। কিন্তু তার সে কামনা নিষ্ফল হয়েছে। সে মনে করে, যদি ভালোবাসা পেয়েও
আঘাত আসতো, তাহলে সে বেদনা নিয়ে না হয়, সারাজীবন কেঁদে কাটতে পারতো। তার কাছে
মনে হয়েছে- না পাওয়ার এই বেদনার চেয়ে ক্ষণিক পাওয়ার আনন্দটা অনেক বেশি গভীর ছিল।
- রচনাকাল ও স্থান:
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।
১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ জুলাই (সোমবার ১১ শ্রাবণ ১৩৪৩) নজরুলের
সাথে টুইন রেকর্ড কোম্পানির চুক্তি হয়। এই চুক্তি তালিকায় এই
গানটি ছিল। এই সময় নজরুলের বয়স
ছিল ৩৭ বৎসর ২ মাস।
- বেতার:
হারামণি-
-১০। রাগ-পটমঞ্জরী। কলকাতা বেতার কেন্দ্র। বুধবার, ৭ আগষ্ট ১৯৪০।
২২ শ্রাবণ ১৩৪৭। সান্ধ্য অধিবেশন। ৭.১৫-৭. ৩৪ মিনিট। শিল্পী:
কাজী নজরুল ইসলাম
।
সূত্র: বেতার জগৎ। ১২শ বর্ষ, ১৫শ সংখ্যা। অনুষ্ঠানসূচী। পৃষ্ঠা:
৮২২
- পত্রিকা:
ভারতবর্ষ।
[ভাদ্র ১৩৪৫ সংখ্যা (আগষ্ট-সেপ্টেম্বর ১৯৩৮)]। স্বরলিপিকার:
জগৎ ঘটক। পাদটীকায়
পটমঞ্জরী রাগের পরিচিতি দেওয়া হয়েছে
[নমুনা]
-
রেকর্ড:
- রেকর্ড কোম্পানির সাথে চুক্তি [২৭ জুলাই ১৯৩৬ (সোমবার
১১ শ্রাবণ ১৩৪৩)]
- টুইন [ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭ (মাঘ-ফাল্গুন ১৩৪৩)]। এফটি ৪৭৭৭। শিল্পী:
পূর্ণজ্যোতি ভট্টাচার্য।
এর জুড়ি গান: জানি পাব না তোমায় হে প্রিয় আমার [তথ্য]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
- সুরকার:
কাজী নজরুল ইসলাম
- পর্যায়: