বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম:
যাক্ না নিশি গানে গানে জাগরণে
তাল : দাদরা/কাহারবা
যাক্ না নিশি গানে গানে জাগরণে
আজকে গানের বান এসেছে আমার মনে॥
মন ছিল মোর পাতায় ছাওয়া
হঠাৎ এলো দখিন্ হাওয়া
পাতার কোলে কথার কুঁড়ি ফুট্লো অধীর হরষণে॥
সেই কথারই মুকুলগুলি সুরের সুতোয় গেঁথে গেঁথে,
কা'রে যেন চাই পরাতে কাহারে চাই কাছে পেতে।
জানি না সে কোন্ বিজনে
নিশীথ জেগে এ গান শোনে
না-দেখা তার চোখের চাওয়ায় আবেশ জাগায় মোর নয়নে॥
-
ভাবসন্ধান:
নবযৌবনের ভাবাবেগে নরনারীর মনে জেগে ওঠে স্বপ্নের নায়ক-নায়িকার অনুভব। তাকে
ঘিরে রচিত হয় স্বপ্নের প্রেমময় জগত। তারই অলীক-ভাবাবেগে কোনো মুহূর্ত হয়ে ওঠে
স্বপ্নরঙিন। এই নাটকের নায়িকার মনের এমনি একটি উচ্ছ্বসিত, উদ্বেলিত মূহুর্ত
মূর্তমান হয়ে উঠেছে এই গানে। কোনো এক স্বপ্নময় রাতে নায়িকার মনে জেগে উঠেছে
প্রেমময় সঙ্গীতানন্দ। তাই সে রাতের ঘুম তুচ্ছ করে বিভোর হয়ে রয়েছে
প্রেমসঙ্গীতের অমিয় অনিন্দ্য আনন্দে।
অন্তরাতে পাই নায়িকার নবযৌবনের প্রথম প্রেমানুভুতি আবির্ভাবের মনোদর্শন।
নবযৌবনার মনে ছিল সবুজ-সজীব প্রাণবন্ত জীবনপত্রে ঢাকা প্রেমকুঁড়ি। সেখানে
বসন্তের হাওয়ায় সে অনুভব করে নবযৌবনের স্পর্শ। সে স্পর্শে তাঁর সজীব জীবনপাত্রের
ভিতরে প্রস্ফুটিত হয়ে উঠেছে নব-যৌবনের আনন্দপুষ্প।
সঞ্চারিতে পাই নবযৌবনার প্রেমপুষ্পের সঞ্চয়নের অনুভব। সুরের সুতায় সে তার মনের
সকল বাসনাসঞ্চারিত পুষ্পের মালা গাঁথে কোনো এক না দেখা স্বপ্ননায়কের জন্য। তাকে
সে চেনে না, তবু তাকেই সে পরাতে চায় তার স্বপ্নে প্রেমপুষ্পমালিকা। সে মনে মনে
ভাবে, হয়তো সে গোপন প্রেমিক তার সঙ্গীত-শ্রবণের আনন্দে একাকী নির্ঘুম রাত্রি
কাটায়। সেই না দেখা প্রেমিকের চোখে যে প্রেমঘন আবেশের সঞ্চার হয়, তার ছোঁওয়া
লাগে নবযৌবনার স্বপ্নমদির চোখে।
- রচনাকাল ও স্থান:
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।
১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর (আশ্বিন-কার্তিক ১৩৪৬) মাসে
এইচএমভি গানটি
প্রথম রেকর্ড করেছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল- ৪০ বৎসর ৪ মাস।
- রেকর্ড:
-
এইচএমভি [অক্টোবর ১৯৩৯ (আশ্বিন-কার্তিক ১৩৪৬)। শিল্পী: রত্নমালা সেন। রেকর্ডটি বাতিল হয়েছিল]
-
এইচএমভি [ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ (মাঘ-ফাল্গুন ১৩৫৫)। রেকর্ড নম্বর ২৭৯৮৫। শিল্পী: তুষারকণা পাল (এম.এসসি)। সুর: নিতাই ঘটক।]
- মঞ্চ:
অর্জুন-বিজয়
(নাটক)। নাট্যকার: দেবেন্দ্র রাহা। পরিচালনা: শরৎচন্দ্র
চট্টোপাধ্যায়। প্রথম মঞ্চস্থ-
মিনার্ভা থিয়েটার [৭ ডিসেম্বর ১৯৪০ (শনিবার,
২১ অগ্রহায়ণ ১৩৪৭)]। শিল্পী: হরিমতী (সুচিত্রা'র চরিত্রের গান)।
- পত্রিকা:
ভারতবর্ষ।
[২৭শ বর্ষ-২য় খণ্ড-২য় সংখ্যা। মাঘ ১৩৪৬ (নভেম্বর-ডিসেম্বর
১৩৩৯)। গান। কথা: নজরুল ইসলাম। সুর ও স্বরলিপি শ্রীনিতাই ঘটক। পৃষ্ঠা:
২৩৫-২৩৬]। পত্রিকার ২৩৫ পৃষ্ঠায় মুদ্রিত স্বরলিপির নিচে লেখা আছে "এই গান
খানি কুমারী রত্নমালা সেনকৃত 'এইচ্.এম্.ভি রেকর্ডে গীত হইয়াছে।"
[নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
- নিতাই ঘটক।
ভারতবর্ষ। [২৭শ বর্ষ-২য় খণ্ড-২য় সংখ্যা। মাঘ ১৩৪৬ (নভেম্বর-ডিসেম্বর ১৩৩৯)
[নমুনা]
- নিতাই ঘটক। সঙ্গীতাঞ্জলি, প্রথম খণ্ড (জেনারেল প্রিন্টার্স য়্যান্ড
পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, ১৩৭৫। [নমুনা]
-
সুধীন দাশ।
[নজরুল-সঙ্গীত
স্বরলিপি, সপ্তম খণ্ড নজরুল ইন্সটিটিউট ১১
জ্যৈষ্ঠ,
১৩৯৯ বঙ্গাব্দ/ ২৫শে মে, ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ। ২২ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ১০৩-১০৭]
[নমুনা]
- সুরকার:
- কাজী নজরুল ইসলাম।
[ অর্জুন-বিজয়
(নাটক)। এই নাটকে ব্যবহৃত
নজরুল ইসলামের সুরটি হারিয়ে গেছে।
- নিতাই ঘটক। নিতাই ঘটক-কৃত গানটির প্রথম স্বরলিপি প্রকাশিত হয়েছিল
ভারতবর্ষ পত্রিকায়। পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা যায় গানটির
স্বরলিপিকার এবং সুরকার ছিলেন নিতাই ঘটক। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রাসঙ্গিক
তথ্য থেকে অনুমান করা যায়- এই স্বরলিপিটি নিতাই ঘটক তৈরি করেছিলেন, ১৯৩৯
খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে এইচএমভি থেকে প্রকাশিত রত্নমালা সেনের গাওয়া
রেকর্ড অনুসরণে।[নমুনা]
গানটির দ্বিতীয় রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল এইচমভি [ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ (মাঘ-ফাল্গুন ১৩৫৫)।
এক্ষেত্রে শিল্পী ছিলেন তুষারকণা পাল। এ গানটির সুরকারও ছিলেন নিতাই ঘটক।
তবে নিতাই ঘটকের করা স্বরলিপির সাথে তুষারকণা পালের গাওয়া সুরের প্রভেদ আছে।
- বিষয়াঙ্গ: নাট্যগীতি, প্রেম
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
- তাল:
-
কাহারবা
তুষার কণার গাওয়া গানের রেকর্ড অনুসরণে।
[নজরুল-সঙ্গীত
স্বরলিপি, সপ্তম খণ্ড, (নজরুল ইন্সটিটিউট, ফাল্গুন ১৪০৩। মার্চ ১৯৯৭)
-এর ২২ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ১০০-১০২।]
-
দাদরা। [ভারতবর্ষ পত্রিকায় প্রকাশিত স্বরলিপি অনুসরণে।
এছাড়া অন্যান্য সকল স্বরলিপিই দাদ্রা তালে গানটি নিবদ্ধ।
- গ্রহস্বর: