সার্থক কর’ সাধন,
সান্ত্বন কর’ ধরিত্রীর বিরহাতুর কাঁদন
প্রাণভরণ দৈন্যহরণ অক্ষয়করুণাধন॥
বিকশিত কর’ কলিকা,
চম্পকবন করুক রচন নব কুসুমাঞ্জলিকা।
কর’ সুন্দর গীতমুখর নীরব আরাধন
অক্ষয়করুণাধন॥
চরণপরশহরষে
লজ্জিত বনবীথিধূলি সজ্জিত তুমি কর’ সে।
মোচন কর’ অন্তরতর
হিমজড়িমা-বাঁধন
অক্ষয়করুণাধন॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: রবীন্দ্রনাথের মোট তিনটি পাণ্ডুলিপিতে গানটি পাওয়া যায়। যথা:
পাঠভেদ:
শান্তিদের ঘোষ তাঁর রবীন্দ্রসঙ্গীত
গ্রন্থে (পৃষ্ঠা ২০৮) লিখেছেন,
'সার্থক
কর সাধন'
গানটির কথা বিয়ের জন্য কিরকম পরিবর্তন করা হল,
তারও নমুনা দেখাই-
সার্থক হল সাধন।
তৃপ্তি লভিল তৃষিত চিত্ত শান্ত বিরহ-কাঁদন,
প্রাণভবন দৈন্যহরণ অক্ষয় করুণা-ধন।
বিকশিত হল কলিকা,
মম কানন করিল রচন নব কুসুমঞ্জলিকা,
হল সুন্দর গীত-মুখর নীরব আরাধন
চরণ-পরশ-হরষে
লজ্জিত বনবীথি ধূলি সজ্জিত কর কর হে,
মোচন কর অন্তরতর হিম-জড়িমা-বাঁধন
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: এই গানটির রচনাকাল সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। RBVBMS 008 পাণ্ডুলিপির ১১৫ পৃষ্ঠায় রয়েছে ' এ কি লীলা হে বসন্ত'। এই রচনার নিচে তারিখ উল্লেখ আছে '৩০ নভেম্বর ১৯২৭'। এই পাণ্ডুলিপির ১২৬ ও ১২৭ পৃষ্ঠায় পাওয়া যায় দুটি গান। গান দুটি হলো- 'রঙ লাগালে বনে বনে বনে' এবং 'সার্থক কর’ সাধন'। এই দুটি গানের সাথে কোনো তারিখ উল্লেখ নেই। কিন্তু এর পরেই রয়েছে কবিতা 'উত্তরে দুয়ার-রুদ্ধ হিমানীর...'। এর নিচে তারিখ লেখা হয়েছে ১৩ ডিসেম্বর ১৯২৭। এই বিচারে ধারণা করা যায়- এই গানটি ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ নভেম্বর থেকে ১৩ই ডিসেম্বরের ভিতরে রচিত। বঙ্গাব্দের হিসেবে দাঁড়ায় '১৪-২৭ অগ্রহায়ণ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ'। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৬৬ বৎসর ৭ মাস।
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
তৃতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ (বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৩৯), পৃষ্ঠা ৮২৬। [নমুনা]
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, মাঘ ১৩৪৮), পর্যায়: পূজা, উপবিভাগ: প্রার্থনা ৩৬, পৃষ্ঠা: ৫৪-৫৫। [নমুনা : প্রথমাংশ, শেষাংশ]
অখণ্ড, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, কার্তিক ১৪১২), পর্যায়: পূজা ১২৭, উপবিভাগ: প্রার্থনা ৩৬, পৃষ্ঠা: ৫৮-৫৯।
স্বরবিতান ত্রয়োদশ (১৩) (বিশ্বভারতী, জ্যৈষ্ঠ ১৪১৩) খণ্ড ২য় গান, পৃষ্ঠা ৬-৭।
প্রকাশের
কালানুক্রম:
১৩৩৯ বঙ্গাব্দের আশ্বিন
মাসে প্রকাশিত
গীতবিতান -এর
তৃতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ-এ
গানটি প্রথম
অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এরপর গীতবিতানের
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের মাঘ
মাসে। এই সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল
পূজা,
পর্যায়ের উপবিভাগ: প্রার্থনা হিসেবে।
১৩৭১ বঙ্গাব্দের
আশ্বিন মাসে প্রকাশিত অখণ্ড গীতবিতানের ১২৭ সংখ্যক গান হিসেবে
অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। অখণ্ড গীতাবিতানের তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত
হয়েছিল পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসে।
গ. সঙ্গীতবিষয়ক তথ্যাবলি:
স্বরলিপি: [স্বরলিপি]
স্বরলিপিকার:
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর। [পাণ্ডুলিপি থেকে স্বরবিতান-১৩’তে
গৃহীত হয়েছে।]
[দিনেন্দ্রনাথ
ঠাকুর -কৃত স্বরলিপির তালিকা]
সুর ও তাল:
স্বরবিতান ত্রয়োদশ (১৩) খণ্ডে (বিশ্বভারতী, ) গৃহীত গানটির স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিটি ৩।৩ মাত্রা ছন্দে 'দাদরা' তালে নিবদ্ধ।
রাগ : পিলু বারোয়াঁ। তাল : দাদরা। [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা, সুধীর চন্দ, প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬], পৃষ্ঠা: ৮১।
রাগ:
খাম্বাজ।
তাল:
দাদরা।
[রাগরাগিণীর
এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ
রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১],
পৃষ্ঠা:
১৪১।
[দাদরা
তালে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
[পিলু
বারোয়াঁ
সুরে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
[খাম্বাজ
সুরে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
বিষয়াঙ্গ:
সুরাঙ্গ:
গ্রহস্বর: সা।
লয়: মধ্য।