বিষয়: রবীন্দ্রসঙ্গীত।
শিরোনাম:
আনন্দধারা বহিছে ভুবনে
পাঠ ও পাঠভেদ:
- গীতবিতান (বিশ্বভারতী, কার্তিক
১৪১২)-এর পাঠ:
পূজা:
৩২৬
আনন্দধারা বহিছে ভুবনে,
দিনরজনী কত অমৃতরস
উথলি যায় অনন্ত গগনে
॥
পান
করে রবি শশী অঞ্জলী ভরিয়া-
সদা দীপ্ত রহে অক্ষয় জ্যোতি-
নিত্য পূর্ণ ধরা
জীবনে কিরণে
॥
বসিয়া আছ কেন আপন-মনে,
স্বার্থনিমগন কী কারণে
?
চারি
দিকে দেখো চাহি হৃদয়
প্রসারি,
ক্ষুদ্র দুঃখ সব তুচ্ছ মানি
প্রেম ভরিয়া লহো
শূন্য জীবনে
॥
-
পাণ্ডুলিপি পাঠ: রবীন্দ্র পাণ্ডুলিপির সন্ধান পাওয়া যায় নি।
- তথ্যানুসন্ধান
- ক. রচনাকাল ও স্থান: গানটি প্রথম পরিবেশিত হয়েছিল, ১৩০০ বঙ্গাব্দের ১১ই মাঘে [মঙ্গলবার ২৩ জানুয়ারি ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দ]
আদি ব্রাহ্মসমাজের চতুঃষষ্ঠীতম মাঘোৎসবে। এই অনুষ্ঠানের আগে এই গানটির আর কোথাও উল্লেখ পাওয়া যায় না। ধারণা করা এই অনুষ্ঠনা উপলক্ষে তিনি গানটি রচনা করেছিলেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৩২ বৎসর ৯ মাসা।
[৩২
বৎসর অতিক্রান্ত বয়সে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
-
খ.
প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
-
গ্রন্থ:
-
পত্রিকা:
-
তত্ত্ববোধিনী (ফাল্গুন ১৩০০
বঙ্গাব্দ)। রাগিণী মালকোষ-তাল কাওয়ালী। পৃষ্ঠা: ২২০।
[নমুনা]
-
বীণাবাদিনী
(১ম সংখ্যা
১ম ভাগ, শ্রাবণ ১৩০৪ বঙ্গাব্দ)।স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল,
তবে স্বরলিপিকারের নাম অনুল্লিখিত ছিল।
-
বিশ্বভারতী পত্রিকা (৭-৯ ১৪০৩)।
শ্রী.ভি. বালসারা।
-
রেকর্ডসূত্র: রেকর্ডসূত্র পাওয়া যায় নি।
-
প্রকাশের কালানুক্রম:১৩০০
বঙ্গাব্দের
১১ মাঘ,
৬৪তম মাঘোৎসবে গানটি গীত হয়েছিল।
এই সূত্রে গানটি
তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার #39;
ফাল্গুন
১৩০০ বঙ্গাব্দ#39; সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।
এরপর যে সকল পত্রিকা ও গ্রন্থাদিতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল,
সেগুলো হলো-
কাব্যগ্রন্থাবলী
(১৩০৩ বঙ্গাব্দ),
কাব্যগ্রন্থ অষ্টম খণ্ড
(১৩১০ বঙ্গাব্দ),
গান
প্রথম সংস্করণ
(১৩১৫ বঙ্গাব্দ),
গান দ্বিতীয় সংস্করণ
(১৩১৬
বঙ্গাব্দ),
ধর্ম্মসঙ্গীত(১৩২১ বঙ্গাব্দ),
কাব্যগ্রন্থ দশম খণ্ড
(১৩২৩ বঙ্গাব্দ) ও
বৈতালিক
(চৈত্র ১৩২৫ বঙ্গাব্দ)।
এ সকল
গ্রন্থাদির পরে
১৩৩৮ বঙ্গাব্দে গানটি
গীতবিতান
-এর
প্রথম খণ্ড, প্রথম সংস্করণ অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল।
১৩৪৮ বঙ্গাব্দের মাঘ মাসে প্রকাশিত
গীতবিতান
-এর
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল পূজা পর্যায়ের
উপবিভাগ
আনন্দ-এর
১৮
সংখ্যক গান হিসেবে। ১৩৭১ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত অখণ্ড গীতবিতানের
পূজা
পর্যায়ের
৩২৬।
-
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
-
ভাঙা গান:
এটি একটি ভাঙা গান। গানটি সদারঙ্গ-এর রচিত।
মূল গানটি মালকোষ রাগে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ এই গানে কোমল
ঋষভ ও কড়ি মধ্যম ব্যবহার করেছেন। এই বিচারে গানটি মিশ্র মালকোষে পরিণত হয়েছে।
মূল গান : মালকোষ। ত্রিতাল (মধ্যলয়)
স্থায়ী
লাগি
মোরে ঠুমক পলঙ্গনা
রি
ননদিয়া ঘর বিরণ মোহে
কহত
পাল বাজে ঘুঙ্গরিয়া॥
অন্তরা
তন মন ধন নিছাবর করহুঁ
সদারঙ্গ পিয়া লাগত নীক
গোরে গাত খুব জাত মন্দরিয়া॥
পাঠান্তর:
তন মন ধন নিছাবর করহুঁ
[রবীন্দ্রসঙ্গীতের ভাঙাগানের উৎস সন্ধানে/সুনির্মল]
তন মন ধন নিত চামর করহুঁ
[রবীন্দ্রসংগীতের ক্রমবিকাশ ও বিবর্তন। ডঃ দেবজ্যোতি দত্ত মজুমদার।]
-
স্বরলিপিকার:
এই গানটির তিনটি স্বরলিপি
স্বরবিতান ৬৪ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে।
১. এই গানটির প্রথম স্বরলিপি করেছিলেন
জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই স্বরলিপিটি বীণাবাদিনী (১ম সংখ্যা ১ম ভাগ, শ্রাবণ ১৩০৪
বঙ্গাব্দ) প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই গানটির স্বরলিপি স্বরবিতান-৬৪-র দ্বিতীয়
স্বরলিপি হিসাবে গৃহীত হয়েছে।
২.
স্বরবিতান ৪৫ (বৈশাখ ১৩৬৩ বঙ্গাব্দে) -ইন্দিরাদেবীকৃত
স্বরলিপি প্রকাশিত হয়েছিল। এই গানটির স্বরলিপি স্বরবিতান-৬৪-র তৃতীয় স্বরলিপি
হিসাবে গৃহীত হয়েছে।
৩. ১৯৫৬ সালের আগষ্ট মাসে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে গ্রামোফোন রেকর্ডে (N82711)
গানটি প্রথম রেকর্ড করা হয়। এই গানটির নির্দেশনা দিয়েছিলেন
বিষ্ণুপুর ঘরানার রমেশচন্দ্র
বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৭২ সালে বিগলিত করুণা জাহ্নবী যমুনা চলচ্চিত্রের জন্য শিল্পী
আবার রেকর্ড করেন। এই গানের স্বরলিপি করেন শ্রী.ভি.বালসার। এই স্বরলিপিটি
বিশ্বভারতী পত্রিকার ১৪০৩ বঙ্গাব্দ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। স্বরবিতান-৬৪-এ প্রথম
স্বরলিপি হিসাবে গৃহীত হয়েছে।
-
গানটির তিনটি স্বরলিপি অনুসারে
সুর, তাল, লয়, বিষয়াঙ্গ ও সুরাঙ্গের পরিচয় তুলে ধরা হলো।
-
১. রাগ মালকোষ।
তাল-
ত্রিতাল। গ্রহস্বর-ম। লয়-মধ্য। ব্রহ্মসঙ্গীত। খেয়ালাঙ্গ।
-
২.
মালকোষ-কাওয়ালি। গ্রহস্বর-মা। লয়-মধ্য। ব্রহ্মসঙ্গীত। খেয়ালাঙ্গ।
-
৩.
মালকোষ-কাওয়ালি। তাল- ত্রিতাল। গ্রহস্বর-সা। লয়-মধ্য। ব্রহ্মসঙ্গীত।
খেয়ালাঙ্গ।
-
রাগ:
মিশ্র মালকোষ। তাল:
ত্রিতাল।
[রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ।
প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬। পৃষ্ঠা: ২৭]
-
রাগ: মিশ্র মালকোষ। তাল: ত্রিতাল।
[রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত। প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১। পৃষ্ঠা: ৫২।]