বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
রাত্রি
এসে যেথায় মেশে দিনের পারাবারে
পাঠ ও পাঠভেদ:
রাত্রি এসে যেথায় মেশে দিনের পারাবারে
তোমায় আমায় দেখা হল সেই মোহানার ধারে॥
সেইখানেতে সাদায় কালোয় মিলে গেছে আঁধার আলোয়—
সেইখানেতে ঢেউ ছুটেছে এ পারে ওই পারে॥
নিতলনীল নীরব-মাঝে বাজল গভীর বাণী,
নিকষেতে উঠল ফুটে সোনার রেখাখানি।
মুখের পানে তাকাতে যাই, দেখি-দেখি দেখতে না পাই—
স্বপন-সাথে জড়িয়ে জাগা, কাঁদি আকুল ধারে॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: রবীন্দ্রনাথের দুটি পাণ্ডুলিপিতে গানটি পাওয়া যায়। এই পাণ্ডুলিপি দুটি হলো—
RBVBMS 478 [নমুনা]
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান:
গীতিমাল্যের পাণ্ডুলিপিতে রচনাকাল ও স্থানের উল্লেখ আছে, '১৯১০
শান্তিনিকেতন'।
MS. NO 478 পাণ্ডুলিপিতে
তারিখ উল্লেখ আছে, '১৫ আশ্বিন নিশীথে'।
গীতিমাল্যের প্রথম সংস্করণে গানটির রচনাকাল '১৩১৫' মুদ্রিত হয়েছিল।
বলাই বাহুল্য উল্লিখিত তারিখটি ভুলক্রমে মুদ্রিত হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে
রবীন্দ্ররচনাবলী ১১শ খণ্ডে (বিশ্বভারতী,
আশ্বিন ১৩৯৩, পৃষ্ঠা:
৪৯৯)
লিখিত হয়েছে, -
" 'রাত্রি এসে যেথায় মেশে দিনের পারাবারে' গানটি প্রথম
সংস্করণে আছে '১৩১৫'। এই গানটি গীতাঞ্জলি ও গীতিমাল্য দুই পাণ্ডুলিপিতেই
কবির স্বহস্তে লিখিত আছে। গীতাঞ্জলির পাণ্ডুলিপিতে তারিখের নির্দেশ আছে ‘১৫
আশ্বিন নিশীথে'। গীতিমাল্যের পাণ্ডুলিপিতে তারিখ উল্লিখিত আছে '১৯১০'। তদানুসারে
রচনার সাল ১৩১৭ হইবে।"
উল্লিখিত তথ্যানুসারে রচনাকাল দাঁড়ায়,
‘১৫
আশ্বিন ১৩১৭ বঙ্গাব্দ'।
উল্লেখ্য,
১৩১৭
বঙ্গাব্দের ৩১শে
শ্রাবণ,
কলকাতা থেকে শিলাইদহ যান। এরপর পতিসর ঘুরে তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন ১১ আষাঢ়। আর
শান্তিনিকেতনে ফিরে আসেন ভাদ্র মাসের ১৪ তারিখে। দীর্ঘ সময় পর, তিনি শ্রাবণ
মাসের ৪ তারিখ থেকে
১৫ই
আশ্বিনের ভিতর তিনি ৩টি গান রচনা করেন। এর
ভিতরে এই গানটি রচনা করেছিলেন ১৫ই আশ্বিন।
[সূত্র: রবিজীবনী ষষ্ঠ খণ্ড, প্রশান্তকুমার পাল, ফাল্গুন ১৪১৪। পৃষ্ঠা:
১৭৭]
উল্লিখিত আলোচনার সূত্রে বিবেচনা করা যায় যে,গানটি রবীন্দ্রনাথের ৪৯ বৎসর ৫
মাস বয়সের রচনা।
[৪৯ বৎসর
অতিক্রান্ত বয়সে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ (ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৩২৩ বঙ্গাব্দ)। গীতিমাল্য গান ১ । পৃষ্ঠা: ২৭৩-২৭৪। [নমুনা: ২৭৩, ২৭৪]
দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ (বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ)। ১৩২৬ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত 'গীতি-বীথিকা' থেকে গৃহীত হয়েছিল। পৃষ্ঠা: ৪০৮। [নমুনা: ৪০৮, ৪০৯]
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, মাঘ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)। গান সংখ্যা ৩১। পৃষ্ঠা: ২৮। [নমুনা]
অখণ্ড সংস্করণ, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দ)। পর্যায়: পূজা ৬৩। উপবিভাগ: বন্ধু ৩১। পৃষ্ঠা: ৩১-৩২। [নমুনা: ৩১, ৩২]
গীতলিপি ৬ষ্ঠ ভাগ (১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দ)। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।
গীতলেখা ১ম ভাগ (বৈশাখ ১৩২৪ বঙ্গাব্দ)। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।
প্রথম সংস্করণ (ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৯ আষাঢ় ১৩২১ বঙ্গাব্দ)। প্রথম গান। পৃষ্ঠা: ১-২। [নমুনা: প্রথমাংশ, দ্বিতীয়াংশ]
স্বরবিতান ঊনচত্বারিংশ (৩৯) খণ্ডের (ফাল্গুন ১৪১৩)
২৫ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা:
৬৮-৬৯।
সুরান্তর ও ভিন্নছন্দ : পৃষ্ঠা : ৭০-৭১।
পত্রিকা:
রেকর্ডসূত্র:
প্রকাশের
কালানুক্রম:
১৩২১ বঙ্গাব্দে 'গীতিমাল্য' নামক গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়ে
প্রকাশিত হয়েছিল। ১৩২৩ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত 'কাব্যগ্রন্থের ৯ম খণ্ডে
'গীতিমাল্য' অংশে গৃহীত হয়।
১৩৩৮ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত গীতবিতানের দ্বিতীয় খণ্ডের প্রথম
সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৩৪৮
খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় সংস্করণে এই গানটি
গৃহীত হয় পূজা পর্যায়ে। ১৩৮০ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত গীতবিতানের অখণ্ড সংস্করণে
পূজা পর্যায়ের ৬৩ সংখ্যক গান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
প্রথম স্বরলিপি: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।
গীতলিপি
৬ষ্ঠ ভাগ (১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দ) থেকে
স্বরবিতান ঊনচত্বারিংশ (৩৯) খণ্ডের (ফাল্গুন ১৪১৩)
১ম স্বরলিপি হিসাবে গৃহীত
হয়েছে।
[সুরেন্দ্রনাথ
বন্দ্যোপাধ্যায়-কৃত রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্বরলিপির তালিকা]
দ্বিতীয় স্বরলিপি:
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
গীতলেখা
১ম ভাগ (বৈশাখ ১৩২৪ বঙ্গাব্দ) থেকে
স্বরবিতান ঊনচত্বারিংশ (৩৯) খণ্ডের (ফাল্গুন ১৪১৩)
দ্বিতীয় স্বরলিপি হিসাবে গৃহীত হয়েছে।
[দিনেন্দ্রনাথ
ঠাকুর-কৃত রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্বরলিপির তালিকা]
স্বরবিতান ঊনচত্বারিংশ (৩৯) খণ্ডে (ফাল্গুন ১৪১৩) গৃহীত দুটি স্বরলিপির কোনোটিতেই রাগ-তালের উল্লেখ নেই। স্বরলিপি দুটি দুই ধরনের ছন্দে নিবদ্ধ-
প্রথম স্বরলিপি :৩।৩।৩।৩ ছন্দে ‘একতাল'-এ নিবদ্ধ। [নমুনা]
[একতালে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]দ্বিতীয় স্বরলিপি :৪।৪।৪।৪ ছন্দে ‘ত্রিতাল’-এ নিবদ্ধ। [নমুনা]
[ত্রিতালে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]রাগ: ভৈরব। তাল: ত্রিতাল/একতাল [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা, সুধীর চন্দ, প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬], পৃষ্ঠা: ৭৭।
মিশ্র ললিত-ত্রিতাল। [রবীন্দ্রসংগীতের ক্রমবিকাশ ও বিবর্তন/ডঃ দেবজ্যোতি দত্ত মজুমদার। পৃষ্ঠা ১০২।] উল্লেখ্য গানটিতে কড়ি মধ্যম ব্যবহৃত না হলেও, এর চলন ললিতের মতো। এই কারণে এই গানের সুর মিশ্র ললিত হিসেবেই বিবেচনা করা যেতে পারে।
রাগ: যোগিয়া, বিভাস। তাল: একতাল, ছন্দান্তরে ত্রিতাল। [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১], পৃষ্ঠা: ১৩৪।
বিষয়াঙ্গ:
সুরাঙ্গ:
গ্রহস্বর: সা। [উভয় স্বরলিপি]।
লয়: মধ্য। [উভয় স্বরলিপি]