৪৯ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স

২৫ বৈশাখ ১৩১৭ বঙ্গাব্দ থেকে ২৪ বৈশাখ ১৩১৮ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত (৭ মে ১৯১০- ৬ মে ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দ)

১৩১৭ বঙ্গাব্দের ১৩ বৈশাখ, রবীন্দ্রনাথ পুরী যাওয়ার উদ্দেশ্যে শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতায় আসেন। কার্যকারণবশতঃ পুরী যাওয়ার আয়োজন বাতিল হয়ে যায়। ফলে ১৮ বৈশাখ তিনি শান্তিনিকেতনে ফিরে আসেন। ২৫শে বৈশাখ রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন পালিত হয় শান্তিনিকেতনে। ২৬শে বৈশাখ তিনি কলকাতায় আসেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের ৩ তারিখে একটি গান রচনা করেন। এই গানটি হলো

কলকাতা ৩ জ্যৈষ্ঠ। [মঙ্গলবার, ১৭ মে ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ] তোরা শুনিস নি কি শুনিস নি তার পায়ের ধ্বনি [পূজা-১৩০] [তথ্য]

্ঠ তারিখে রবীন্দ্রনাথ দার্জিলিং জেলার তিনধরিয়া যাত্রা করেন। তিনধরিয়া থাকাকলীন সময়ে রবীন্দ্রনাথ মোট ১২টি গান ও কবিতা রচনা করেন। এর ভিতরে গানগুলোর কালানুক্রমিক তালিকা দেওয়া হলো।

        ৯ জ্যৈষ্ঠ। [সোমবার, ২৩ মে ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] কবে আমি বাহির হলেম তোমারি গান গেয়ে [গীতাঞ্জলি ৬৫][পূজা-৩৩] [তথ্য]
        ১৭ জ্যৈষ্ঠ। [মঙ্গলবার, ৩১ মে ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ] আমার খেলা যখন ছিল তোমার সনে [পূজা-৬৪] [তথ্য]
      ১৮ জ্যৈষ্ঠ। [বুধবার, ১ জুন
১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।]ওই রে তরী দিল খুলে। গীতাঞ্জলি ৬৯।  [পূজা-৪৭৭] [তথ্য]
      ১৮ জ্যৈষ্ঠ।  [বুধবার, ১ জুন
১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] চিত্ত আমার হারালো। গীতাঞ্জলি ৭০। [প্রকৃতি-১০০] [তথ্য]
      
২১ জ্যৈষ্ঠ।  [শনিবার, ৪ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।]যতবার আলো জ্বালাতে চাই গীতাঞ্জলি ৭২। [পূজা-১৬৫] [তথ্য]
      ২১ জ্যৈষ্ঠ। [শনিবার, ৪ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ] বজ্রে তোমার বাজে বাঁশি,সেকি সহজ গান [গীতাঞ্জলি ৭৪][পূজা-২২২] [তথ্য]

২২ জ্যৈষ্ঠ তারিখে রবীন্দ্রনাথ কলকাতায় ফিরে আসেন। ২৮ জ্যৈষ্ঠ পর্যন্ত তিনি কলকাতায় অবস্থান করেন। এই সময়ে রবীন্দ্রনাথ তিনটি কবিতা ও ২টি গান রচনা করেন। গান ২টি হলো

২৪ জ্যৈষ্ঠ। [মঙ্গলবার, ৭ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ] দয়া দিয়ে হবে গো মোর জীবন ধুতে [পূজা-৪৮৮] [ তথ্য]
২৮ জ্যৈষ্ঠ। [মঙ্গলবার, ৭ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ ] ধায় যেন মোর সকল ভালোবাসা [পূজা-৯৪] [তথ্য]

২৮ জ্যৈষ্ঠ রবীন্দ্রনাথ কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতনে আসেন। ১৯ আষাঢ় পর্যন্ত তিনি মোট ১১টি গান রচনা করেন। গানগুলো হলো―

৩ আষাঢ়। [শুক্রবার, ১৭ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] আমারে যদি জাগালে আজি নাথ [প্রকৃতি-৯৭] [তথ্য]
৪ আষাঢ়। [শনিবার, ১৮ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ] আরো আঘাত সইবে আমার [পূজা-২২৪] [তথ্য]
৪ আষাঢ়। [শনিবার, ১৮ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ ] এই করেছ ভালো, নিঠুর হে [পূজা-২২৩] [তথ্য]
৫ আষাঢ়। [রবিবার, ১৯ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ] দেবতা জেনে দূরে রই দাঁড়ায় [পূজা-১৫৬] [তথ্য]
আষাঢ়। [মঙ্গলবার, ২১ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো [পূজা-৩৬৩] [তথ্য]
আষাঢ়। [বুধবার, ২২ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] যেথায় তোমার লুট হতেছে ভুবন [পূজা-৩৬২] [তথ্য]
১০ আষাঢ়। [শুক্রবার, ২৪ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] আবার এসেছে আষাঢ়
১১ আষাঢ়। [শনিবার, ২৫ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] আজ বরষার রূপ হেরি মানবের মাঝে
১৩ আষাঢ়। [সোমবার, ২৭ জুন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] হে মোর দেবতা, ভরিয়া এ 'দেহ প্রাণ [পূজা : ৮৫] [তথ্য]
১৮ আষাঢ়। [শনিবার, ২ জুলাই ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ ।] হে মোর চিত্ত, পূণ্য
১৯ আষাঢ়। [রবিবার, ৩ জুলাই ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] যেথায় থাকে সবার অধম

২১ আষাঢ়ে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতায় আসেন। ২২ আষাঢ় ভোরে শিলাইদহের উদ্দেশে রওনা দিয়ে রাত্রি বেলায় পৌঁছান। ২৮ আষাঢ় পর্যন্ত  রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহ এবং এর আশপাশের এলাকায় ভ্রমণ করেন। এই সময়ের ভিতরে তিনি মোট ৪টি গান রচনা করেন।

এবারে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে ছিলেন শ্রাবণ মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত। শ্রাবণ মাসে তিনি দুটি পূজা পর্যায়ের গান রচনা করেছিলেন। গান দুটি হলো-

১৩১৭ বঙ্গাব্দের ২৫শে শ্রাবণ, রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতায় আসেন। ২৬শে শ্রাবণ রবীন্দ্রনাথ 'গীতাঞ্জলি' মুদ্রণের জন্য চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাণ্ডুলিপি প্রদান করেন। গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল। বেঙ্গল লাইব্রেরির ক্যাটালগ অনুযায়ী গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল ৫ সেপ্টেম্বর ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ (সোমবার, ২০ ভাদ্র ১৩১৭)। গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল, ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস (২২, কর্ণওয়ালিস স্ট্রীট কলিকাতা) থেকে। ছাপা হয়েছিল কান্তিক প্রেস (২০, কর্ণওয়ালিস স্ট্রীট, কলকাতা) থেকে। এই গ্রন্থের মূল্য রাখা হয়েছিল ১ টাকা। মুদ্রণ সংখ্যা ছিল ১০০০।

এই গ্রন্থের শুরুতে 'বিজ্ঞাপন' শিরোনামে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন

'এই গ্রন্থের প্রথম কয়েকটি গান পূর্ব্বে অন্য দুই একটি পুস্তকে প্রকাশিত হইয়াছে। কিন্তু আল্প সময়ের ব্যবধানে যে সমস্ত গান পরে পরে রচিত হইয়াছে তাহাদের পরস্পরের মধ্যে একটি ভাবের ঐক্য থাকা সম্ভবপর মনে করিয়া তাহাদের সকলগুলিই এই পুস্তকে একত্রে বাহির করা হইল।'

এই বিজ্ঞাপনের সাথে স্থান ও তারিখ উল্লেখ ছিল 'শান্তিনিকেতন বোলপুর। ৩১শে শ্রাবণ, ১৩১৭'।

গীতাঞ্জলির এই সংস্করণে গান ও কবিতা ছিল ১৫৭টি। এর ভিতরে পূর্বে প্রকাশিত শারদোৎসবের ৬টি ও প্রায়শ্চিত্ত-এর ১টি গান অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। বাকি ১৫০টি গান ও কবিতা ছিল নতুন। এই ১৫৭টি গান ও কবিতার ভিতরে বর্তমানে গান হিসেবে পাওয়া যায় ৮৫টি।  [দেখুন: সূচি ও নমুনা। গীতাঞ্জলি ১৩১৭।]

৪ আশ্বিন। [বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] জাগো নির্মল নেত্রে  রাত্রির পরপারে [পূজা-২৭৫] [তথ্য]
৫ আশ্বিন। [বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর
১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] প্রভু আমার প্রিয় আমার [পূজা-৬৮] []

১৩১৭ বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসে রবীন্দ্রনাথ তাঁর 'রাজা' নাটক শেষ করেন। এই নাটক উপলক্ষে তিনি ১টি গান রচনা করেন। RBVBMS 478 পাণ্ডুলিপিতে গানটির তারিখ উল্লেখ আছে '১১ই আশ্বিন'। এই গানটি হলো-

১১ই আশ্বিন। এ অন্ধকার ডুবাও [পূজা-৯৩] [তথ্য]

শান্তিনিকেতনে থাকাবস্থায় ১৫ শ্রাবণ থেকে ২৩ শ্রাবণ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ ৫টি গান রচনা করেন। এই গানগুলো হলো-

১৫ আশ্বিন। [রবিবার, ২ অক্টোবর ] রাত্রি এসে যেথায় মেশে দিনের পারাবারে [পূজা-৬৩] [তথ্য]
১৮ শ্রাবণ। [বুধবার, ৩ আগষ্ট
১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] ওরে মাঝি ওরে আমার           
২২ শ্রাবণ। [রবিবার, ৭ আগষ্ট
১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] জড়ায়ে আছে বাধা
২৩ শ্রাবণ। [সোমবার, ৮ আগষ্ট
১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] জীবনে যত পূজা হল না সারা
২৩ শ্রাবণ। [সোমবার, ৮ আগষ্ট
১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ।] একটি নমস্কারে প্রভু

রবীন্দ্রনাথ কার্তিক মাসে শান্তিনিকেতনের অধ্যাপকদের অনুরোধে 'রাজা' নাটক লেখা শুরু করেছিলেন। ১২ই কার্তিক বালিকা-বিদ্যালয়ের ছাত্রী ইন্দুলেখাকে লেখা পত্র থেকে এই সংবাদটি জানা যায়। এরপর ২৫শে কার্তিক চারুচন্দ্রে কাছে পত্র মারফত জানান যে, 'আমার নাটকটা আজ শেষ করেছি'। উল্লেখ্য, 'রাজা' নাটকের প্রথম পাণ্ডুলিপিটি হলো- RBVBMS 143। এই বিচারে ধারণা করা যায় এই পাণ্ডুলিপির গানগুলো রচনা করেছিলেন  তিনি ১৭১৭ বঙ্গাব্দের ১২ কার্তিক থেকে ২৫ কার্তিকের মধ্যে রচনা করেছিলেন।

এই গানগুলো হলো

১. আমারে তুমি কিসের ছলে পাঠাবে দূরে [পূজা-৮৭] [তথ্য]
২. খোলো খোলো দ্বার
৩. এ যে মোর আবরণ [পূজা-১৬২] [তথ্য]
৪. কোথা বাইরে দূরে যায় রে উড়ে
৫. আজি দখিন দুয়ার খোলা
৬. যেখানে রূপের প্রভা
৭. আমরা সবাই রাজা
৮. আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে [পূজা-৫৪৯] [তথ্য]
৯. তোরা যে যা বলিস ভাই
১০. আজি কমলমুকুলদল খুলিল
১১. মোদের কিছু নাই রে নাই
১২. মম চিত্তে নিতি নৃত্যে
১৩. বসন্তে কি শুধু কেবল ফোটা
১৪. বিরহ মধুর হল আজি
১৫. যা ছিল কালো ধলো
১৬. আহা তোমার সঙ্গে প্রাণের খেলা
১৭. আমার সকল নিয়ে বসে
১৮. আমার ঘুর লেগেছে
১৯. আমি রূপে তোমায়
২০. ভয়েরে মোর আঘাত করো ভীষণ , হে ভীষণ [পূজা-২২১ ] [তথ্য]
২১. আমি তোমার প্রেমে
২২. আমি কেবল তোমার দাসী
২৩. অন্ধকারের মাঝে আমায় [পূজা-৮৪] [তথ্য]
২৪. ভোর হলো বিভাবরী
অগ্রহায়ণ মাসে শিলাইদহে রচিত একটি গান পাওয়া যায় গীতালি-র সংযোজন অংশে। এই গানটি হলো

আজি নির্ভয় নিদ্রিত ভুবনজাগে[পূজা-২৬৯] [তথ্য]

১৩১৭ বঙ্গাব্দ ১১ মাঘ [বুধবার, ২৫ জানুয়ারি ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দ]-এ অশীতিতম (৮১) সাংবৎসরিক মাঘোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই মাঘোৎসব উপলক্ষে ২২টি গান পরিবেশিত হয়েছিল। এর ভিতরে প্রাতঃকালীন অধিবেশনে পরিবেশিত হয়েছিল ৯টি গান। এর ভিতরে ৮টি গান ছিল রবীন্দ্রনাথের রচিত। এছাড়া সায়ংকালীন অধিবেশনে ১৩টি রবীন্দ্রনাথের রচিত গান পরিবেশিত হয়েছিল। এবারের উৎসবে রবীন্দ্রনাথের রচিত ২১টি গানের ভিতরে ৭টি গান ছিল নতুন। এই গানগুলো হলো-

১. প্রাণের প্রাণ জাগিছে তোমারি প্রাণ[পূজা-২৭৪] [তথ্য]
২. ঘোর দুঃখে জাগিনু, ঘনঘোরা যামিনী [পূজা-৪৩৪] [তথ্য]
৩. যদি আমায় তুমি বাঁচাও [পূজা-৮০] [তথ্য]
৪. প্রথম আদি তব শক্তি [পূজা-৪৭০] [তথ্য]
৫. হে নিখিলভারধারণ বিশ্ববিধাতা [পূজা ৫১০] [তথ্য]
৬. ডাকে বার বার ডাক [পূজা-৩৫৩] [তথ্য]
৭. তিমিরবিভাবরী কাটে কেমনে পূজা-৩২৬ [তথ্য]

এই বছরে রচিত তারিখ বিহীন গানের তালিকা