স্বরবিতান-২০
 

এই স্বরবিতানের শুরুতে- এতে গৃহীত গানগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত পাঠ যুক্ত করা হয়েছে। নিচে এই তুলে ধরা হলো।

 

"স্বরবিতানের বর্তমান খণ্ডে রবীন্দ্রসংগীতের আদিসংকলন-গ্রন্থ রবিচ্ছায়া (বৈশাখ ১২৯২) হইতে ত্রিশটি গানের স্বরলিপি মুদ্রিত হইল।
 রবিচ্ছায়া গ্রন্থখানি কবি-সুহৃৎ যোগেন্দ্রনারায়ণ মিত্রের উদ্যোগে প্রকাশিত হয়; প্রকাশকের বক্তব্যে তিনি লিখিতেছেন, ‘এই সঙ্গীতগুলি এতদিন রচয়িতার উদাসীনতাবশতঃ নানাস্থানে বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়িয়াছিল কখনও আলোক দেখিত কি না জানি না। ...১২৯১ সনের শেষ দিন পর্য্যন্ত রবীন্দ্র বাবু যতগুলি সঙ্গীত রচনা করিয়াছেন প্রায় সেগুলি সমস্তই এই পুস্তকে দেওয়া গেল।‌‌’

   রবিচ্ছায়ার বহুসংখ্যক গান পরবর্তীকালীন রবীন্দ্রগীতিসংগ্রহের বহির্ভুত ছিল। গীতবিতানের তৃতীয় খণ্ডে (আশ্বিন ১৩৫৭) এই অপ্রচলিত গানগুলি পুনর্‌মুদ্রিত হইয়াছে।

   স্বরবিতানের অষ্টম খণ্ডে রবিচ্ছায়ার অনেকগুলি গানের স্বরলিপি প্রকাশিত হইয়াছে।

   বর্তমান খণ্ডের প্রারম্ভে ‘নীরব রজনী দেখো মগ্ন জোছনায়’ গানটি সন্নিবিষ্ট হইয়াছে; উহা ১২৮৫ (ইং ১৮৭৮) সালে সতেরো বৎসর বয়সে বিলাত যাত্রার প্রাক্‌কালে আমেদাবাদে বাস-কালে রচিত ‘আমার নিজের সুর দেওয়া সর্বপ্রথম গানগুলি’র মধ্যে আদিতম রচনার ‘পরিবর্তিত’ রূপ বলিয়া কবি-কর্তৃক বর্ণিত। তৃতীয়-খণ্ড গীতবিতানের (আশ্বিন ১৩৫৭) গ্রন্থপরিচয়ে (পৃ ১০১৪-১৬) এ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা দ্রষ্টব্য।
   এই আমেদাবাদ-বাস-কালে রচিত বলিয়া অন্য যে-কয়টি গান সম্বন্ধে কবির রচনায় স্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া গিয়াছে সেগুলির স্বরলিপিও এই খণ্ডে সন্নিবিষ্ট হইল –
                     বলি ও আমার গোলাপবালা
                     শুন নলিনী, খোলো গো আঁখি
                     আঁধার শাখা উজল করি।

    রবীন্দ্রনাথের উক্তি-অনুযায়ী, ‘আমার তেরো হইতে-আঠারো-বৎসর বয়সের কবিতা’র সংকলন-গ্রন্থ শৈশবসঙ্গীত (১২৯১)। ঐ গ্রন্থের নিম্নলিখিত গানগুলির স্বরলিপি বর্তমান খণ্ডে মুদ্রিত হইল –

                    গোলাপ ফুল ফুটিয়ে আছে
                   দেখে যা, দেখে যা, দেখে যা লো তোরা
                   কাছে তার যাই যদি

      ‘গোলাপ ফুল ফুটিয়ে আছে’ ও ‘দেখে যা, দেখে যা, দেখে যা লো তোরা’ ‘ফুলবালা গাথা’র অন্তর্গত। ফুলবালা ১২৮৫ কার্তিক-সংখ্যা ভারতী পত্রে প্রকাশিত হইয়াছিল।

      ভগ্নহৃদয় ( ১২৮৮) গীতিকাব্যের নিম্নলিখিত গানগুলির স্বরলিপি বর্তমান খণ্ডে প্রকাশিত হইল –
                   সখী, ভাবনা কাহারে বলে
                   কী হল আমার, বুঝি বা সজনী
                   বুঝেছি বুঝেছি সখা
                   তুই রে বসন্তসমীরণ

     বর্তমান খণ্ডে প্রসঙ্গান্তরে মুদ্রিত নিম্নলিখিত গানগুলি ভগ্নহৃদয় গ্রন্থেরও অন্তর্গত –
                  আঁধার শাখা উজল করি
                  নীরব রজনী দেখো মগ্ন জোছনায়
                  কাছে তার যাই যদি

    ‘বিলাতে এই ভগ্নহৃদয় 'কাব্যের পত্তন' হইয়াছিল। কতকটা ফিরিবার পথে কতকটা দেশে ফিরিয়া আসিয়া [প্রত্যাবর্তন, ইং ১৮৮০,? ফেব্রুয়ারি] ইহা সমাধা করি।‌‌‌’ ইহার প্রথম ছয় সর্গ ভারতী পত্রে (১২৮৭ কার্তিক-ফাল্গুন) প্রকাশিত হয়।

   রুদ্রচণ্ড (১২৮৮) নাটিকায় দুইটি গান আছে; ‘বসন্তপ্রভাতে এক মালতীর ফুল’ ও ‘তরুতলে ছিন্নবৃন্ত মালতীর ফুল’। দুইটি পরস্পর-সম্বন্ধ, সুর একরূপ। বর্তমান গ্রন্থে ‘তরুতলে ছিন্নবৃন্ত মালতীর ফুল’ গানটির স্বরলিপি মুদ্রিত হইল। গান দুইটি প্রথমবার বিলাত-যাত্রার পূর্বে রচিত বলিয়া শ্রীপ্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় অনুমান করেন।

    বৌঠাকুরানীর হাট (১২৮৯। ভারতী ১২৮৮ কার্তিক-১২৮৯ আশ্বিন) উপন্যাসে প্রকাশিত নিম্নলিখিত গানগুলির স্বরলিপি বর্তমান খণ্ডে মুদ্রিত হইল –
                    ওরে যেতে হবে, আর দেরি নাই
                    আমার যাবার সময় হল
                    মা, আমি তোর কী করেছি

    বৌঠাকুরানীর হাট উপন্যাসই প্রায়শ্চিত্ত নাটকে রূপান্তরিত হয়। সেই সম্পর্কে বৌঠাকুরনীর হাটের নিম্নলিখিত গানগুলির স্বরলিপি নবম-খণ্ড স্বরবিতানে মুদ্রিত আছে –
                   বঁধুয়া, অসময়ে কেন হে প্রকাশ
                   আজ তোমারে দেখতে এলেম
                   সারা বরষ দেখি নে মা

     ‘আমিই শুধু রইনু বাকি’ গানটির স্বরলিপি অষ্টম-খণ্ড স্বরবিতানে মুদ্রিত হইয়াছে। ‘আর কি আমি ছাড়ব তোরে’ ও ‘আজ আমার আনন্দ দেখে কে’ গান দুইটির সুর জানা যায় নাই, উহার কথা গীতবিতানের তৃতীয় খণ্ডে (আশ্বিন ১৩৫৭) সংকলিত হইয়াছে।

ছবি ও গান (ফাল্গুন ১২৯০) হইতে নিম্নলিখিত গান দুইটি লওয়া হইয়াছে –
                  আমার প্রাণের ‘পরে চলে গেল কে
                  ওই জানালার কাছে বসে আছে
    রবীন্দ্রনাথের উক্তিতে জানিতে পারি, ‘এই গ্রন্থে প্রকাশিত ছোটো ছোটো কবিতাগুলি গত বৎসরে লিখিত হয়।'

    প্রকৃতির প্রতিশোধ নাট্যকাব্যে (১২৯১) প্রকাশিত নিম্নলিখিত গানগুলির স্বরলিপি স্বরবিতানের বর্তমান খণ্ডে মুদ্রিত হইয়াছে -

                  হেদে গো নন্দরানী
                  বুঝি বলা বহে যায়
                  কথা কোস্‌ নে লো রাই
                  প্রিয়ে, তোমার ঢেঁকি হলে
                  বনে এমন ফুল ফুটেছে
                  মরি লো মরি, আমার বাঁশিতে ডেকেছে কে
                  যোগী হে, কে তুমি হৃদি-আসনে


     ‘ভিক্ষে দে গো ভিক্ষে দে’ ও ‘মেঘেরা চলে চলে যায়’ গান দুইটির সুর পাওয়া যায় নাই। রবিচ্ছায়া গ্রন্থে এই গান দুইটির যথাক্রমে এইরূপ সুর নির্দেশ করা হইয়াছে: ‘ছায়ানট-তাল কাওয়ালি ও ‘বেহাগ’।

     রবীন্দ্রনাথ জীবনস্মৃতিতে লিখিয়াছেন, ‘কারোয়ার হইতে ফিরিবার সময় [১২৯০] জাহাজে প্রকৃতির প্রতিশোধের কয়েকটি গান লিখিয়াছিলাম। বড়ো একটি আনন্দের সঙ্গে প্রথম গানটি জাহাজের ডেকে বসিয়া সুর দিয়া-দিয়া গাহিতে-গাহিতে রচনা করিয়াছিলাম-হেদে গো নন্দরানী’।

     নলিনী (১২৯১) নাট্যে মুদ্রিত নিম্নলিখিত গানগুলির স্বরলিপি বর্তমান খণ্ডে প্রকাশিত হইল-
                     হা, কে বলে দেবে মোরে
                     ও কেন ভালোবাসা জানাতে আসে
                     ভালোবাসিলে যদি সে ভালো না বাসে
                     মনে রয়ে গেল মনের কথা

     ‘আয় তবে সহচরী’ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত মানময়ী গীতিনাটিকায় (১৮০২ শক। বাংলা ১২৮৭?) প্রকাশিত হইয়াছিল। গানটি ঐ নাটিকার জন্যই বিশেষভাবে লিখিত এরূপ অনুমান করা হয়।

     ‘বুঝেছি বুঝেছি সখা’ গানটি যথাস্থানে, অর্থাৎ ভগ্নহৃদয়ের গীতিগুচ্ছ-পর্যায়ে মুদ্রিত হইতে পারে নাই।–‘তরুতলে ছিন্নবৃন্ত মালতীর ফুল’ ও ‘আয় তবে সহচরী’ গান দুইটিও রচনার অনুমিত অনুক্রম-অনুযায়ী পূর্বে সন্নিবেশিত করা যায় নাই।"
 
গীতবিতানের তৃতীয় খণ্ডে (আশ্বিন ১৩৫৭) সংকলিত। গ্রন্থশেষে, গীতবিতানের বিশেষ পৃষ্ঠা ও রচনার বিশেষ সংখ্যা উল্লেখ-পূর্বক প্রায় সবগুলি গানের সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য তথ্যাদি দেওয়া হইয়াছে।

এই গ্রন্থের ৯৩ পৃষ্ঠায় মুদ্রিত প্রজ্ঞাপনটি নিচে উল্লেখ করা হলো।স্বরবিতান বিংশ খণ্ড প্রকাশিত হয় শ্রাবণ ১৩৫৮ সালে। এই খণ্ডের সম্পাদনার দায়িত্ব বহন করেন ইন্দিরাদেবী চৌধুরানী।

  'এই গ্রন্থে ত্রিশটি গানের স্বরলিপি সংকলিত। ৪, ৬, ৮, ৯, ১১-১৫, ১৮, ২১ ও ২৯ –সংখ্যক গানগুলির স্বরলিপি ইন্দিরাদেবী চৌধুরানী –কৃত। ১, ৩, ৫, ৭, ১৬, ১৭, ১৯, ২০, ২২-২৮ ও ৩০ –সংখ্যক গানের স্বরলিপিগুলি জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর –কর্তৃক ‘সঙ্কলিত ও ব্যাখ্যাত স্বরলিপি-গীতি-মালা (১৩০৪) হইতে সংগৃহীত। ২ ও ১০ –সংখ্যক গানের স্বরলিপি যথাক্রমে প্রতিভাদেবী ও সরলাদেবী –কৃত এবং পূর্বে ‘বালক’ পত্রিকার ১২৯২ বৈশাখ সংখ্যায় ও ‘ভারতী’ পত্রিকার ১২৯৯ পৌষ সংখ্যায় প্রকাশিত।

   ১, ১৩, ১৫ ও ২৯ –সংখ্যক গানের গীতরীতি সম্পর্কে বিশেষ অবহিত হওয়া আবশ্যক।
   এই গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত গানগুলির সুরভেদ, ছন্দোভেদ, পাঠভেদ ও প্রকাশকাল সম্পর্কে এ যাবৎ সংগৃহীত তথ্য বর্তমান সংস্করণে (জ্যৈষ্ঠ ১৩৭৭) সন্নিবিষ্ট হইল। উল্লিখিত তথ্যাদি সংগ্রহ ও সংকলন করিয়াছেন শ্রীপ্রফুল্লকুমার দাস।

ভাদ্র ১৩৮৯

নিচে এই গ্রন্থে গানগুলির তালিকা তুলে ধরা হলো।


আঁধার শাখা উজল করি [নাট্যগীতি-১০] [তথ্য] [নমুনা]
আমার প্রাণের পরে চলে গেল [প্রেম-১৯২] [তথ্য] [নমুনা]
আমার যাবার সময় হল [বিচিত্র-১৩৩] [তথ্য]  [নমুনা]
আয় তবে সহচরী [প্রেম-৩৬৪] [তথ্য] [নমুনা]
ও কেন ভালোবাসা জানাতে আসে [নাট্যগীতি-৩৩] [তথ্য] [নমুনা]
ওই জানালার কাছে বসে আছে [নাট্যগীতি-২৭] [তথ্য] [নমুনা]
যেতে হবে ,আর দেরি নাই (ওরে ) [বিচিত্র-১৩৪] [তথ্য] [নমুনা]
কথা কোস্ নে লো রাই [নাট্যগীত-২৬] [তথ্য] [নমুনা]
কাছে তার যাই যদি [নাট্যগীতি ১২] [তথ্য] [নমুনা]
কী হল আমার [প্রেম-৩৪৯] [তথ্য] [নমুনা]
গোলাপ ফুল ফুটিয়ে আছে [প্রেম ও প্রকৃতি-৬] [তথ্য] [নমুনা]
তরুতলে ছিন্নবৃন্ত মালতীর ফুল [নাট্যগীতি-২১] [তথ্য] [নমুনা]
তুই রে বসন্তসমীরণ [নাট্যগীতি-১৯] [তথ্য] [নমুনা]
দেখে যা, দেখে যা [প্রেম-৩৭৭] [তথ্য] [নমুনা]
নীরব রজনী দেখো মগ্ন জোছনায় [নাট্যগীতি-৩] [তথ্য] [মূল স্বরলিপি, সুরান্তর-১]
প্রিয়ে, তোমার ঢেঁকি হলে [নাট্যগীতি-২৫] [তথ্য] [নমুনা]
[নমুনা]
বনে এমন ফুল ফুটেছে [প্রেম-৩৭২] [তথ্য] [নমুনা]
বল্, গোলাপ, মোরে বল [প্রেম-৩৯৪] [তথ্য] [নমুনা]
বলি, ও আমার গোলাপ-বালা [প্রেম ও প্রকৃতি-৫] [তথ্য] [নমুনা]
বুঝি বেলা বহে যায় [প্রেম-৩৭১] [তথ্য] [নমুনা]
বুঝেছি বুঝেছি সখা [নাট্যগীতি-১৮] [তথ্য] [নমুনা]
ভালোবাসিলে যদি সে ভালো না বাসে [নাট্যগীতি-৩৪] [তথ্য] [নমুনা]
মনে রয়ে গেল মনের কথা [প্রেম-১৯৩] [তথ্য] [নমুনা]
মরি লো মরি, আমায় [প্রেম-৫৯] [তথ্য] [নমুনা]
আমি তোর কী করেছি [পরিশিষ্ট-৩-এর ৪] [তথ্য] [নমুনা]
যোগী হে, কে তুমি [নাট্যগীতি-২২] [তথ্য] [নমুনা]
শুন নলিনী খোলো গো আঁখি [প্রেম ও প্রকৃতি ৯] [তথ্য] [নমুনা]
সখী, ভাবনা কাহারে বলে [নাট্যগীতি-১১] [তথ্য] [নমুনা]
হা, কে বলে দেবে সে [নাট্যগীতি-৩৫] [তথ্য] [নমুনা]
হ্যাদে গো নন্দরানী [বিচিত্র-৮৮] [তথ্য] [নমুনা]