বগুড়া
বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের একটি জেলা।

স্থানাঙ্ক :
৮৯.০০ ডিগ্রি পূর্ব থেকে ৮৯.৪০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ এবং ২৪.৩০ ডিগ্রি উত্তর থেকে ২৫.১০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশে বগুড়া জেলা অবস্থিত।

অবস্থান :
উত্তরে গাইবান্ধা
জয়পুরহাট জেলা পশ্চিমে নওগাঁ‎ জেলা, দক্ষিণে সিরাজগঞ্জ জেলা এবং পুর্বে যমুনা নদী।

এই জেলার উপজেলা সংখ্যা ১টি। এগুলো হলো- বগুড়া সদর, গাবতলী, শেরপুর, কাহালু, শিবগঞ্জ, ধুনট, শাহজাহানপুর, নন্দিগ্রাম, সোনাতলা, আদমদিঘি, দুপচাঁচিয়া ও সারিয়াকান্দি।

ইতিহাস:
সুলতান গিয়াস উদ্দিন বলবনের পুত্র সুলতান নাসরি উদ্দিন বগড়াগণ ১২৭৯ থেকে ১২৮২ পর্যন্ত এ অঞ্চলের শাসক ছিলেন। তার নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছে বগড়া বা বগুড়া। 

১৮২০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত উত্তর বঙ্গের এই অঞ্চলটি প্রশাসনিকভাবে রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলা হিসেবে পরিচিত ছিল। এই তিনটি জেলাই ছিল আয়তনে বিশাল। প্রশাসনিক সুবিধার জন্য ১৮২১ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী জেলা থেকে আদমদিঘি শেরপুর নৌখিলা ও বগুড়া থানা, রংপুর জেলা থেকে দেওয়ানগঞ্জও গোবিন্দগঞ্জ থানা দিনাজপুর জেলা থেকে লালবাজার, ক্ষেতলাল ও বদলগাছি থানা নিয়ে বগুড়া জেলা গঠিত। এই সময় এই জেলার প্রশাসক হিসেবে জন্য একজন জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়।

১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দে বগুড়া জেলার প্রায় অর্ধাংশের রাজস্ব সংগ্রহের জন্য এই জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে ক্ষমতা দেওয়া হয়।
১৮৩৯ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী জেলার রায়গঞ্জথানা বগুড়া জেলার অধীনে আনা হয়। এই পদ্ধতিতে বগুড়ার রাজস্ব আদায় সুসম্পন্ন করায় ব্যাঘাতের সৃষ্টি হয়। তৎকালীন বগুড়ার পূর্ব-প্রান্তের ব্রহ্মপুত্র নদের পার্শ্ববর্তী ৮০ মাইলের ভিতরের সকল জমিদারের খাজনা বোয়ালিয়ার সরকারী কোষাগারে জমা হতো। আবার তৎকালীন বগুড়া শহর থেকে ১২ মাইল দূরের দাওকোবার রাজস্ব জমা হতো ময়মনসিংহের সরকারি কোষাগারে। জমিদারদের রাজস্ব জমার অসুবিধার জন্য, কিছুদিনের জন্য নিয়ম করা হয়েছিল যে, জমিদাররা, বোয়ালিয়া, বগুড়া ও ময়মনসিংহের যে কোনো রাজস্ব অফিসে তাদের রাজস্ব জমা দিতে পারবে। এই নিয়ম প্রচিলত হওয়র পর দেখা গেল, স্থানীয় অধিকাংশ জমিদার বগুড়া কোষাগারে রাজস্ব জমা দিচ্ছে। রাজস্ব আদায়ের এই বিষয়টি বিবেচনা করে, ১৮৫০
খ্রিষ্টাব্দে রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, ময়মনিসংহ ও রাজশাহী জেলা থেকে ৫৪৯টি জমিদারি বগুড়া কালেক্টরের অধীনে আনা হয়। উল্লেখ্য এর আগে বগুড়ার অধীনে২৮৭টি জমিদারি ছিল। এরফলে বগুড়ার প্রশাসনিক আয়তন বৃদ্ধি পায়।

১৮৫০খ্রিষ্টাব্দে ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ পরিবর্তনের ফলে দাওকোবা নদীর বিশাল আকার ধারণ করে। এর ফলে রাজস্ব আদায়ে অসুবিধা সৃষ্টি হয়। ১৮৫৩ খ্রিষ্টাব্দে এ বিষয়ে তদন্তের জন্য দেওয়ানি আদালেতর মিলস নামক একজন জজকে পাঠানো হয়।

১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দের ১২ই জানুয়ারি তারিখে তৎকালীন ভারত সরকারের আদেশ অনুযায়ী দাওকোবা নদী বগুড়া জেলার পুর্বসীমা
নির্ধারিত হয়।
১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে বাউন্ডারি কমিশনারের নির্দেশানুসারে বগুড়া জেলার দক্ষিণ সীমানার কিছু অংশ রাজশাহী জেলার অন্তর্গত হয়। এই সময় ক্ষাদ্র ভাদাই বা ভাদ্রাবতী নদীকে বগুড়ার সীমানা নির্ধারিত। এই বৎসরের ১২ই আগষ্ট বগুড়ার গোবিন্দগঞ্জ থানাকে রংপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই সময় ১০২টি গ্রামকে গোবিন্দগঞ্জ থানার অধীনে নেওয়া হয় এবং এই থানার ৯টি গ্রামকে বগুড়া থানায় রাখা হয়। এছাড়া ৪৭টি গ্রামকে শিবগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত হয়।

১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই মার্চে লালবাজার থানাকে পাঁচবিবিতে স্থানান্তর করা হয়। ২০শে মার্চ মানাস নদী মজে যাওয়ায় কারণে নৌখিলা থানাকে সারিয়াকান্দির সাথে যুক্ত করা হয়। এরপর ৮ অক্টোবরে,  বগুড়া জেলার দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তের রায়গঞ্জথানাকে পাবনা জেলার সীমা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এক্ষেত্রে মধ্যবর্তী সীমানা হিসেবে ইছামিত নদীকে রাখা হয়।

১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই সেপ্টেম্বরে ৪৩৯টি গ্রাম ময়মনিসংহ জেলা থেকে নিয়ে বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি থানার সাথে যুক্ত করা হয়। এই বৎসর শিবগঞ্জথানা বগুড়া থানার আউট পোষ্টে পরিগণিত হয়। ১৮টি নতুন গ্রাম যুক্ত হওয়ায় শিবগঞ্জথানাকে পূর্ণাঙ্গ থানায় পরিণত করা হয়। ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে বগুড়া জেলার একজন ম্যাজিস্ট্রেট এবং একজন কালেক্টরের শাসনাধীনে আনা হয়। এই নিয়োগের ফলে বগুড়া একটি পূর্ণাঙ্গ জেলায় পরিণত হয়।

জেলার দর্শনীয় স্থান
মহাস্থানগড়


সূত্র :
http://www.bogra.gov.bd/