রাজশাহী
বিভাগ
ইংরেজি :
Rajshahi
বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি
বিভাগ। এর আয়তন ১৮,১৫৪ বর্গকিমি। ৮টি জেলা, ৬৬টি উপজেলা
এবং ৫৬৪টি ইউনিয়নের নিয়ে এই বিভাগটি গঠিত গঠিত। এই বিভাগের জেলাগুলো হলো-
চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ,
নাটোর,
বগুড়া,
পাবনা,
রাজশাহী এবং
সিরাজগঞ্জ।
গঙ্গানদীর পূর্বভাগে ছিল প্রাচীন বাংলা
পুণ্ড্রবর্ধন
নামক জনপদ ছিল। এর রাজধানীর নাম
পুণ্ড্রনগর।
বর্তমানে এই স্থানটি
মহাস্থানগড়
নামে খ্যাত। এই জনপদের দক্ষিণে
পদ্মা,
পূর্বে
করতোয়া
(মতান্তরে
যমুনা) এবং পশ্চিমে
গঙ্গা নদী
ছিল। এই বিচারে সমগ্র উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ অঞ্চলই
পুণ্ড্রবর্ধনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। একই বিচারে রাজশাহী, প্রেসিডেন্সি, ঢাকা
ও চট্টগ্রাম- বাংলার ভূতপূর্ব এই চারিটি বিভাগ কোন না কোন সময়ে পুণ্ড্রবর্ধন
রাজ্যের অর্ন্তগত ছিল।
বরেন্দ্রী পুণ্ড্রবর্ধনের একটি সমৃদ্ধ অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সন্ধ্যাকর নন্দীর 'রামচরিত-কাব্য'-এ গঙ্গা ও করতোয়া নদীর মধ্যভাগকে বরেন্দ্রী নামে অভিহিত করা হয়েছে। বর্তমান রাজশাহী, বগুড়া ও দিনাজপুর জেলার অংশবিশেষকে বরেন্দ্র অঞ্চল নামে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। আ, কা, ম, যাকারিয়া কর্তৃক সম্পাদিত বরেন্দ্র অঞ্চলের ইতিহাস নামক পুস্তকে সমগ্র রাজশাহী বিভাগকেই বরেন্দ্র অঞ্চল নামে অভিহিত করা হয়েছে। এই বিচারে উভয় বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিচারে বৃহত্তর দিনাজপুর, মালদহ, রংপুর, বগুড়া পাবনা এবং বৃহত্তর রাজশাহী জেলা বরেন্দ্র ভূমির ভিতরে ধরা হয়ে থাকে। এই বিচারে এর আয়তন ১৩,৩৬৯ বর্গমাইল বা ৩৪,৬৫৪ বর্গ কিলো মিটার।
১৮২৯ খ্রিষ্টাব্দে উত্তর বঙ্গের বিশাল
অংশ নিয়ে গঠিত হয়েছিল একটি বিভাগ তৈরি করা হয়। সে সময় এই বিভাগের সদর দফতর ছিল
মুর্শিদাবাদ। সে সময় এই বিভাগের সদর দফতর ছিল
মুর্শিদাবাদ। এই বিভাগটি গঠিত হয়েছিল ৮টি জেলা নিয়ে। এই জেলাগুলো ছিল−
মুর্শিদাবাদ, মালদাহ, জলপাইগুড়ি, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া,
পাবনা ও রাজশাহী। কয়েক
বছর পর বিভাগীয় সদর দপ্তর বর্তমান রাজশাহী শহরের রামপুর-বোয়ালিয়া মৌজায়
স্থানান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে বিভাগীয় সদর দপ্তর স্থানান্তরিত
হয় জলপাইগুড়িতে। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাক-ভারত বিভাজনের পর তদানীন্তন
পূর্ব-পাকিস্তানের বিভাগে পরিণত করা হয় এবং এই বিভাগের সদর দফতর রাজশাহী শহরে
প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সময় রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলো ছিল−
কুষ্টিয়া, খুলনা, দিনাজপুর,
পাবনা, বগুড়া, যশোহর, রংপুর, রাজশাহী। ১৯৬০
খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী বিভাগের খুলনা, কুষ্টিয়া, যশোর এবং ঢাকা বিভাগের বরিশাল জেলা
কর্তন করে খুলনা বিভাগ গঠন করা হয়। ফলে রাজশাহী বিভাগের জেলার সংখ্যা দাঁড়ায়
পাঁচটি। এই জেলগুলো ছিল−
দিনাজপুর,
পাবনা, বগুড়া, রংপুর ও
রাজশাহী ।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর, পাঁচটি জেলা নিয়ে রাজশাহী বিভাগ
বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে এই বিভাগের প্রতিটি জেলার মহকুমাকে
জেলাতে পরিণত করা হয়। তখন রাজশাহী বিভাগের জেলার সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬টি। পুরানো পাঁচ
জেলা ভেঙে যে নতুন জেলাগুলো হয়, সেগুলো হলো−
দিনাজপুর (দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁ ও পঞ্চগড)
বগুড়া (বগুড়া ও জয়পুর হাট)
পাবনা (পাবনা ও সিরাজগঞ্জ )রংপুর (রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, লালমনিরহাট)
রাজশাহী (রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ )
২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ৯ মার্চ রংপুর অঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে রংপুর বিভাগ গঠন করা হয়। ফলে রাজশাহী অঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে বর্তমান রাজশাহী বিভাগ নতুন রূপ লাভ করে। এই বিভাগের জেলাগুলো হলো− চাঁপাই নবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, বগুড়া, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ।
এই বিভাগের উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান:
সূত্র :
http://www.rajshahidiv.gov.bd/