উকবেকিস্তান
মধ্য এশিয়ার একটি স্থলবেষ্টিত দেশ। আনুষ্ঠানিক নাম উজবেকিস্তান প্রজাতন্ত্র। এর রাজধানী তাশখন্দ।
এর উত্তরে কাজাখস্তান, উত্তরপূর্বে
কিরগিজস্তান,
দক্ষিণপূর্বে
তাজিকিস্তান, দক্ষিণে
আফগানিস্তান এবং দক্ষিণ পশ্চিমে
তুর্কমেনিস্তান।
সাংবিধানিকভাবে দেশটি ধর্মনিরপেক্ষ। এর মোট আয়তন ৪,৪৭,৪০০ বর্গকিলোমিটার (১,৭২,৭০০ বর্গমাইল)।
২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের জনগণনা মতে লোকসংখ্যা প্রায় ৩,২৯,৭৯,০০০।
১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের ৩১শে আগস্ট (শনিবার ১৪ ভাদ্র ১৩৯৮
বঙ্গাব্দ) সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনকালে উজবেকিস্তান স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ১ সেপ্টেম্বরকে
(রবিবার ১৫ ভাদ্র ১৩৯৮ বঙ্গাব্দ)উজবেকিস্তানের জাতীয় স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করা হয়।
ইতিহাস:
ধারণা করা হয়, খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীর দিকে ইরানের কিছু যাযাবর গোষ্ঠী বর্তমান উজবেকিস্তানের কিছু কিছু তৃণাঞ্চলে বসতি স্থাপন করে।
কালক্রমে এরা এই অঞ্চলে এরা এখানে চাষাবাদ করে কৃষিভিত্তিক জীবনযাপন করা শুরু করে। এর পাশাপাশি এদের একটি বড় অংশের পেশা
পশুপালন ছিল। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে চীন ও ইউরোপের বাণিজ্যের জন্য সৃষ্টি হয়েছিল 'সিল্ক রোড'। এই সূত্রে এই অঞ্চলের
বুখারা ও সমকরকন্দ ব্যবসায়ীদের মধ্যবর্তী আশ্রয়স্থল হিসেবে নগরকেন্দ্রিক জীবনযাপন শুরু হয়।
খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে এই ইরানিয়ান সোঘদিয়ান জনগোষ্ঠী এই অঞ্চলে রাজত্ব শুরু করে এবং বর্তমান
সমকরকন্দ নামক নগরীকে এই রাজ্যের রাজধানী করা হয়।
পরে পারশ্য সম্রাট এই রজ্যের অধিকার গ্রহণ করলে, শহরটি পারশ্যের সগদিয়ানা প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানীতে পরিণত হয়।
এই সময় গ্রিকদের কাছে এই শহরটির নাম ছিল মারাকান্দা। গ্রিক সম্রাট
আলেকজান্ডার, ৩২৯ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে শহরটি
জয় করেন। ফলে বর্তমান উজবেকিস্তানের সকল ভূখণ্ড গ্রিকদের অধীনে চলে যায়। এই সময় এই শহরটি চীন ও ভূমধ্যসাগরের মধ্যবর্তী
একটি বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়। খ্রিষ্টীয় ৮ম শতকের শুরুর দিকে শরহটি আরবদের মুসলিম শাসকদের অধিকারে আসে। ফলে এখানে ইসলামি
সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে এবং কালক্রমে একটি ইসলামি মধ্য এশিয়ার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পরিণত হয়।
১২২০ খ্রিষ্টাব্দে
চেঙ্গিশ খান শহরটি প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেন। ১৩৭০ খ্রিষ্টাব্দে
তৈমুর লং
সমরকন্দকে তাঁর সাম্রাজ্যের রাজধানী বানান। এই সময়ে শহরটির আবার উন্নতি শুরু হয়।
১৫শ শতক তৈমুরের সাম্রাজ্যের পতন শুরু হলে, উজবেকরা শক্তিশালী হয়ে উঠে এবং ১৪৯৯
খ্রিষ্টাব্দে উজবেকরা শহরটি দখল করে। এই সময় এটি উজবেক শাসকদের রাজধানীতে পরিণত হয়। উজবেক শাসকেরা ১৬শ শতকে
তাদের রাজধানী বোখারায় সরিয়ে নিলে সমরকন্দের গুরুত্ব কমে যায়। ১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দে
সমরকন্দকে বোখারা-শাসকের অধীনে চলে আসে। ১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দে রাশিয়া এই শহরটি দখল করে।
এই সময় থেকে নগরীটি আবার
গুরুত্ব পেতে শুরু করে।
সূত্র :