পার্সেয়ুস
ি Περσεύς >ইংরেজি Perseus >বাংলা পার্সেয়ুস
প্রখ্যাত গ্রিক পৌরাণিক বীর। দেবরাজ
জিউস এবং এ্যাক্রিসিয়ুসের কন্যা ড্যানের পুত্র

রাজা এ্যাক্রিসিয়ুসের কন্যা ড্যানের জন্মগ্রহণের পর, তিনি কোনো পুত্র সন্তান লাভ করতে পারবেন কিনা, তা জানার জন্য ডেলফির মন্দিরে যান। মন্দিরের ভবিষ্যৎবাণী থেকে জানতে পারেন যে, 'তাঁর কোন পুত্র সন্তান হবে না।
তবে তাঁর কন্যার একটি পুত্র সন্তান জন্মাবে এবং উক্ত সন্তানের হাতে তাঁর মৃত্যু হবে। এই দৈববাণী শোনার পর, রাজা প্রথমে কন্যাকে হত্যা করার চিন্তা করেন, কিন্তু অপত্য স্নেহে তা পারলেন না। এই কারণে ড্যানে যাতে কোন পুরুষ সংসর্গে আসতে না পারে, তার জন্য তিনি ড্যানেকে একটি ভূগর্ভস্থ কক্ষে বন্দী করে রাখলেন এবং দ্বার রক্ষার জন্য কিছু হিংস্র কুকুর নিয়োজিত করলেন।

ড্যানে এইভাবে কিছুদিন বন্দী থাকার পর, একদিন দেবরাজ জিউস গোপনে ড্যানের কক্ষে প্রবেশ করেন। জিউসের আগমনে এই কক্ষে প্রথমে স্বর্ণবৃষ্টি হয়, পরে 
জিউস স্বমূর্তিতে প্রকাশিত হন। এরপর  জিউসের সাথে ড্যনের দৈহিক মিলনের পর- ড্যানে গর্ভবতী হয়ে পড়েন।

যথাসময়ে ড্যানে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। এই পুত্র সন্তানটিই হলো পার্সিউস। এ্যাক্রিসিয়ুস এই সংবাদ জেনে অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে গেলেন। পরে ড্যানের কাছ জানতে পারেন যে, এই সন্তানের পিতার নাম জিউস। তিনি প্রথমে তিনি এ কথা বিশ্বাস করলেন না। ইনি ভাবলেন তাঁর ভাই প্রোয়েটুসর সাথে মিলনের ফলে এই সন্তানের জন্ম হয়েছে। এরপরেও এ্যাক্রিসিয়ুস ড্যানে বা তাঁর পুত্রকে হত্যা করতে পারলেন না। কিন্তু তার পরিবর্তে একটি কাঠের সিন্দুকে ভরে ড্যানে ও তার সন্তানকে সমুদ্রে ভাসিয়ে দিলেন।

http://www.johnwilliamwaterhouse.com/articles/danae-in-colour/

এই সময় জিউসের অনুরোধে সমুদ্র দেবতা পোসেইডন (Poseidon) সমুদ্রকে শান্ত রাখেন। এই সিন্দুকটি ভাসতে ভাসতে সেরিফোস (Seriphos) নামক দ্বীপে পৌঁছে। এই সিন্দুকটি প্রথম দেখতে পান, উক্ত দ্বীপের রাজা পলিডেক্টসের (Polydectes) ভাই ডিক্টিস (Dictys)। ইনি এই সিন্দুকের ডালা খুলে ড্যানে ও পার্সেয়ুসকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। ডিক্টিস এবং তাঁর স্ত্রী ছিলেন নিঃসন্তান। এঁরা পার্সেয়ুসকে অপত্য স্নেহে লালন-পালন করতে লাগলেন। সেই সাথে ড্যানেকেও উভয়ই নিজের বোনের মতো করে কাছে টেনে নিলেন। এই বাড়িতে পার্সেয়ুস বড় হয়ে উঠেন এবং ডিক্টিসের ব্যবসায়ে সাহায্য করতে থাকেন।

পলিডেক্টিস ছিলেন অত্যন্ত নির্দয় ও নারীলোলুপ। ইনি যখন ড্যানেকে দেখলেন, তখন তাঁকে বিবাহ করার জন্য প্রস্তাব দিলেন। কিন্তু পার্সেয়ুসকে সন্তান হিসাবে গ্রহণ করতে পারবেন না বলে ঘোষণা দিলেন। এদিকে পার্সেয়ুসও এই কারণে পলিডেক্টিসকে ঘৃণা করা শুরু করেন এবং তাঁর মায়ের সাথে এই বিয়ে হোক তা চাইতেন না।

পলিডেক্টিস ড্যানেকে বিয়ে করতে ব্যর্থ হয়ে ভাবলেন, এই বিবাহের একমাত্র প্রতিবন্ধকতা হলো- পার্সিয়ুস। তাই তিনি পার্সিয়ুসকে অন্যত্র সরিয়ে দেবার চেষ্টা করলেন। এ জন্য পলিডেক্টিস একটি কৌশল অবলম্বন করলেন। তিনি পার্সিয়ুসকে ডেকে বললেন যে, তিনি
ওয়েনোমায়ুস (Oenomaus)-এর কন্যা হিপ্পোডামিয়া (Hippodamia) বিয়ে করতে চান। কিন্তু ওয়েনোমায়ুস অত্যন্ত ধনী, সে কারণে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানোর মতো যথেষ্ঠ সম্পদ তাঁর নেই। সুতরাং পার্সিউস যদি তাঁকে একটি ঘোড়া সংগ্রহ করে দিতে পারে, তা হলে বড় সুবিধা হয়।

উত্তরে পার্সেয়ুস বলেন যে, ঘোড়া সংগ্রহ করে দেওয়ার মতো তার কোনো অর্থ বা সামর্থ নেই। তবে সে যদি তাঁর মায়ের পরিবর্তে  হিপ্পোডামিয়াকে বিবাহ করে, তবে তিনি এর জন্য প্রয়োজন হলে মেডুসার মাথাও এনে দিতে পারেন। পার্সেয়ুসের এই প্রস্তাব শুনে পলিডেক্টিস অত্যন্ত উৎসাহিত হয়ে উঠেন। তিনি মেডুসার মাথা এনে দেওয়ার জন্য পার্সেয়ুসকে উৎসাহ দিতে থাকেন এবং বলেন যে, এই মাথা এনে দিলে তিনি ড্যানেকে বিবাহ করবেন না।

কিন্তু পার্সেয়ুস তখনও পুরোপুরি জানতেন না যে, মেডুসার মাথা আনাট কতটা ভয়ঙ্কর কাজ। এমন কি মেডুসা কোথায় থাকে তাও জানতেন না। তাই তিনি মেডুসার সন্ধান পাওয়ার জন্য প্রথমে জাহাজে করে গ্রিসে এলেন। এখানে এসে ইনি বিভিন্ন সূত্র থেকে মেডুসার অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারলেন। তবে সকল ক্ষেত্রে সর্বাধিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন দেবী এথেনা এবং দেবতা হের্মেজ

এথেনার নির্দেশিত পথ ধরে তিনি
প্রথমে খুঁজে বের করলেন, অন্ধকারময় দেশে তিনজন বৃদ্ধাকে। মূলত এরা জানতো মেডুসা কোথায় থাকে। উল্লেখ্য,
ফোর্কিস-এর ঔরসে ও সেটোর গর্ভে জন্মগ্রহণকারিণী এই যাদুকন্যার সাধারণ নাম ছিল গ্রেয়ে পার্সেয়ুস যাদুর জুতা পড়ে এই তিন বৃদ্ধার আশ্রমে পৌঁছান। এই তিন বৃদ্ধার ছিল একটি মাত্র চোখ এবং একটি মাত্র দাঁত। তিনজন এই চোখ ও দাঁত ভাগাভাগী করে ব্যবহার করতো। পার্সেয়ুস প্রথমেই এঁদের চোখ কেড়ে নেন। এই বৃদ্ধারা তাঁদের চোখ ফিরিয়ে দেবার জন্য কাকুতি মিনতি করতে থাকলে, পার্সিউস শর্ত দিলেন যে, মেডুসার সন্ধান দিলে তিনি চোখ ফিরিয়ে দেবেন। এরপর এঁরা পার্সিয়ুসকে মেডুসার বাসস্থানের সন্ধান দিলে, তিনি তাদের চোখ ফিরিয়ে দিয়ে মেডুসার দেশে পৌঁছান।

মেডুসার কাছে পৌঁছার আগেই, জিউস তাঁকে দিলেন একটি সকল বর্মভেদকারী বাঁকা তলোয়ার। হের্মেজ দিয়েছিলেন উড়ে চলার উপযোগী একজোড়া যাদুকরী জুতা, অদৃশ্য হয়ে থাকা যায় এমন একটি কালো মুকুট দিয়েছিলেন যমদেবতা হেডস। এথেনা তাঁকে দিয়েছিলন আয়নার মতো একটি উজ্জ্বল ঢাল। যেহেতু মেডুসার মুখের দিকে যে কেউ তাকালে পাথরে পরিণত হয়ে যায়, তাই এই ঢালটি এথেনা প্রদান তাঁকে দিয়েছিলেন। যাতে পার্সেউস সরাসরি মেডুসার মুখের দিকে না তাকিয়ে, ঢালের উপর পতিত মেডুসার ছবি দেখে তাকে হত্যা করতে পারেন। আর পেয়েছিলেন নিরাপদে মেডুসার কর্তিত মাথা বহন করার উপযোগী একটি থলে।

http://en.wikipedia.org/wiki/Perseus

যাদুর জুতো পড়ে পার্সেয়ুস যখন মেডুসাদের আস্তানায় পৌঁছান তখন,  মেডুসা তাঁর অপর দুই বোনকে (স্থেনো, ইউরিয়াল) সাথে ঘুমাচ্ছিলেন। পার্সেউস তাঁর ঢালের উপর প্রতিভাত দৃশ্য দেখে অতিদ্রুত মেডুসার মাথা কেটে তাঁর থলিতে পুরে ফেলেন। এই সময় মেডুসার অপর দুই বোন জেগে উঠে পার্সেয়ুসকে ধরার চেষ্টা করলেও হেডস-এর দেওয়া কালো মুকুট পড়ে অদৃশ্য হয়ে যান। এরপর তিনি যাদুর জুতার সাহায্যে দ্রুত পালাতে সক্ষম হন। কোনো কোনো মতে এই সময় মেডুসার কর্তিত গলা থেকে উড়ন্ত ঘোরা পেগাসাস (Pegasus) এবং চ্রাইসায়োর (Chrysaor) জন্মগ্রহণ করেছিল। এই সময় মেডুসার মাথা থেকে রক্ত মাটিতে ঝরে পড়তে থাকে এবং প্রতি ফোটা রক্ত থেকে জন্ম নিচ্ছিল বিষধর সাপ ও কাঁকড়া বিছা।

পার্সিউস মেডুসার মাথা নিয়ে প্রথম উপস্থিত হন
এ্যাটলাস-এর প্রাসাদের কাছে। তিনি দেখতে পান যে এ্যাটলাস পৃথিবীকে মাথায় করে দাঁড়িয়ে আছেন। এ্যাটলাস পার্সিয়ুসের পরিচয় জানতে চাইলে, পার্সিয়ুস নিজেকে জিউসের পুত্র হিসাবে পরিচয় দেন। ইতোপূর্বে এ্যাটলাস এক ভবিষ্যৎ বাণীতে জেনেছিলেন যে, জিউসের এক পুত্র তাঁর বাগান নষ্ট করবে। এই কারণে জিউস-পুত্র হিসাবে পার্সিয়ুসের পরিচয় পেয়ে ইনি হুংকার দিয়ে উঠেন। এবার পার্সিয়ুস মেডুসার মাথা এ্যাটলাসের মুখের সামনে ধরলেন। ফলে এ্যাটলাস পর্বতে পরিণত হয়ে যান। তবে এই গল্পটি গ্রিক পৌরাণিক কাহিনীতে এক ধরনের বিভ্রান্তির জন্ম দেয়। কারণ, পার্সিয়ুসের উত্তর পুরুষ হার্কিউলিসও এ্যাটলাসকে জীবন্ত অবস্থায় পেয়েছিলেন।

এরপর এ্যাটলাসের বাগান থেকে পার্সিয়ুস সোজা চলে যান মিশরে। এখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন। এরপর ফিলিস্টিয়া উপকুল ঘুরে উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ইথিওপিয়ায় পৌঁছান। এখানে ইনি একটি পাথরের সাথে শৃঙ্খলিত অবস্থায় এক নগ্ন মেয়েকে দেখতে পেলেন।

পার্সিয়ুস এই মেয়েটিকে দেখে অত্যন্ত মুগ্ধ হন। ইনি এই মেয়েটির পাশে নেমে এসে- তাঁর এই দুরাবস্থার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। এর উত্তরে মেয়েটি নিজের পরিচয়ে বলেন যে, তিনি রাজা সেফেয়ুস-এর কন্যা। তাঁর নাম এ্যান্ড্রোমিডা। তাঁর মা ক্যাসিওপিয়া ভাবতেন যে, তিনি এবং তাঁর কন্যা উভয় নেরেইডদের চেয়ে সুন্দরী। ক্যাসিওপিয়ার এই মন্তব্যে অপমানিত হয়ে নেরেইডরা সমুদ্রদেবতা পোসাইডোনের কাছে নালিশ করেন। এর ফলে পোসাইডোন সমুদ্র থেকে একটি জলোচ্ছ্বাস এবং একটি সমুদ্র-দানবীকে প্রেরণ করেন। এর ফলে রাজ্যের ফিলিষ্টিয়া উপকুল প্লাবিত হয় এবং একই সাথে সমুদ্র-দানবীর অত্যাচারে স্থানীয় বাসিন্দারা অতীষ্ট হয়ে উঠে। ফলে রাজা সিফিউস এর প্রতিকারের জন্য আমনের মন্দিরে যান। সেখানে তিনি দৈববাণীতে জানতে পারেন যে- এ্যান্ড্রোমিডা-কে দানবীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করলে এই দুর্বিপাক থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এরপর রাজা তাঁকে পাথরের সাথে শৃঙ্খলিত করে দানবীর উদ্দেশ্যে রেখে যান। পুরো ঘটনা জানার পর, পার্সিয়ুস প্রথমে তরবারী দিয়ে শৃঙ্খল কেটে এ্যান্ড্রোমিডা-কে মুক্ত করলেন এবং দানবীর মুখোমুখি হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন। যথাসময়ে দানবী সমুদ্রের ভিতর থেকে উঠে এলে, পার্সিয়ুস মেডুসার মাথা জলজ আগাছার ভিতর লুকিয়ে রেখে, তরবারী হাতে লাফিয়ে আকাশে উঠে গেলেন এবং তার তরবারীর আঘাতে দানবীকে হত্যা করলেন।

এই ঘটনা
এ্যান্ড্রোমিডা'পিতামাতা দূর থেকে দেখছিলেন। কন্যার উদ্ধারের ঘটনা দেখার পর তাঁরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং পার্সিয়ুসকে ধন্যবাদ দিয়ে তাঁর পরিচয় জানতে চান। পার্সিয়ুস নিজেকে জিউসের পুত্র হিসাবে পরিচয় দিয়ে এ্যান্ড্রোমিডা-কে বিবাহ করা প্রস্তাব দেন। রাজা ও রাণী উভয়েই সন্তুষ্ট চিত্তে এই পার্সিয়ুস ও এ্যান্ড্রোমিড-কে প্রাসাদে নিয়ে যান।

অচিরেই
এ্যান্ড্রোমিডা ও পার্সিয়ুসের বিবাহের আয়োজন করা হলো। কিন্তু এই বিবাহে বাধা দিলেন- এজেনর । ইনি এ্যান্ড্রোমিড-কে বিবাহ করার জন্য প্রথমে স্থানীয় লোকদের কাছে বললেন, বিদেশী লোকের কাছে তাঁদের দেশের কন্যাকে বিবাহ দেবেন না। ফলে বিবাহ আসরের কোলাহল ক্রমে যুদ্ধে পরিণত হলো। তখন পার্সিয়ুস লুকানো মেডুসার মাথা বিদ্রোহীদের সামনে তুলে ধরলে, সবাই পাথরে পরিণত হয়ে যান। পরে ইনি এ্যান্ড্রোমিড-কে  বিবাহ করে- তাঁকে সাথে করে দেশে ফিরে আসেন।

এদিকে পার্সিয়ুসের অনুপস্থিতে পলিডেক্টিস তাঁর মাকে দাসীবৃত্তি করতে বাধ্য করান এবং বিবাহে সম্মতি পাওয়ার জন্য তাঁকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করতে থাকেন। ফলে শেষ পর্যন্ত ড্যানে
এথেনা'র মন্দিরে আশ্রয় নেন। দেশে ফিরে পার্সিয়ুস এসব জানতে পেরে প্রথমে ইনি পলিডেক্টিসের প্রাসাদে গিয়ে হাজির হন। মেডুসার মাথা আনতে গিয়ে কেউ স্বশরীরে ফিরে আসতে পারে, এ কথা পলিডেক্টিস বিশ্বাস করতে পারলেন না। তখন তিনি পার্সিয়ুসের কাছে প্রমাণ স্বরূপ মেডুসার মাথা দেখতে চাইলেন। তখন পার্সিয়ুস পলিডেক্টিসের সামনে মেডুসার মাথা তুলে ধরলেন। ফলে সভাসদের যাঁরা এই মাথার দিকে তাকালেন, তাঁরা সবাই পাথরে পরিণত হলেন। এরপর পার্সিয়ুস উক্ত রাজ্যের রাজা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হন এবং  ড্যানেকে নিজ রাজ্যে ফিরিয়ে আনেন।

এরপর ইনি তাঁর মাতামহ এ্যাক্রিসিয়ুসকে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এই কথা এ্যাক্রিসিয়ুস শুনে, ভবিষ্যৎ বাণী স্মরণ করে ভাবলেন যে, পার্সিয়ুস তাঁকেই হত্যা করতে আসছে। তাই তিনি নিজ রাজ্য ছেড়ে থেসালীয়দের রাজ্যের রাজধানী ল্যারিসায় আশ্রয় নেন। এই সময় ল্যারিসায় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে পার্সিয়ুস আমন্ত্রিত হন এবং ঘটনাক্রমে এই অনুষ্ঠানে এ্যাক্রিসিয়ুসও উপস্থিত ছিলেন। পার্সি
স এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শন করতে থাকেন। ডিসকাস নিক্ষেপ প্রতিযোগিতায় পার্সিয়ুসের নিক্ষেপিত ডিসকাস এ্যাক্রিসিউসকে আঘাত করলে-তাঁর মৃত্যু ঘটে। এ্যাক্রিসিয়ুসের মৃত্যুতে পার্সিয়ুস অন্ত্যন্ত দুঃখ পান। ইনি এথেনার মন্দিরের কাছে এ্যাক্রিসিয়ুস শেষকৃত্য করেন। পরে ইনি অনুশোচনায় আর্গসের সিংহাসন ত্যাগ করেন। এরপর ইনি টিরাইনস রাজ্যে যান। সেখানকার রাজা মেগাপেন্থেস-এর রাজ্যের সাথে আর্গস রাজ্যের বিনিময় করেন।

অন্য মতে ড্যানেকে পলিডেক্টিস বিবাহ করেছিলেন। এ্যাক্রিসিয়ুসও জানতে পারেন যে তাঁর কন্যা বেঁচে আছেন এবং পলিডেক্টিসকে বিবাহ করেছেন। এই বিষয়টি মীমাংশার জন্য তিনি পলিডেক্টিসের রাজ্যের দিকে আসতে থাকেন। ইতোমধ্যে পার্সিয়ুস ফিরে এসে পলিডেক্টিসকে হত্যা করেন। এরপর পার্সিয়ুস একটি ক্রীড়া-উৎসবের আয়োজন করেন। উক্ত অনুষ্ঠান চলাকালে পার্সিয়ুসের নিক্ষেপিত ডিসকাসের আঘাতে এ্যাক্রিসিউসের মৃত্যুর ঘটে।

মৃত্যুর পর পার্সিয়ুস,
এ্যান্ড্রোমিডা, সেফেয়ুস, ক্যাসিওপিয়া- নক্ষত্রলোকে স্থান পান।

পার্সিউসের ঔরসে
এ্যান্ড্রোমিডার গর্ভে মোট  
সাতটি পুত্র এবং দুটি কন্যা সন্তান জন্মলাভ করে। পুত্র সন্তানদের নাম ছিল পার্সেদেস (Perseides), পার্সেস (Perses), আল্কায়েয়াস, হেলেয়ুস (Heleus), মেস্টর (Mestor), স্থেনেলাস (Sthenelus) এবং ইলেক্ট্রাইয়োন (Electryon)। দুই কন্যার নাম ছিল- অটোক্‌থো (Electryon) এবং গোর্গোফোনে (Eurystheus)।