মাদ্রী
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { পৌরাণিক সত্তা | কাল্পনিকসত্তা | কল্পনা | সৃজনশীলতা | দক্ষতা | জ্ঞান | মনস্তাত্ত্বিক বিষয় | বিমূর্তন | বিমূর্ত-সত্ত | সত্তা |}

হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে
 পাণ্ডু'র দ্বিতীয়া স্ত্রী এবং চতুর্থ ও পঞ্চম পাণ্ডব নকুল-সহদেব-এর  মা ইনি ছিলেন মদ্রদেশের বহ্লীক বংশীয় শল্য-এর বোন উল্লেখ্য পাণ্ডু'র প্রথম স্ত্রী ছিলেন কুন্তী

একবার একটি বনে, কিন্দম মুনি হরিণের রূপ ধারণ করে একটি হরিণীর সাথে সঙ্গম করছিলেন। ওই বনে পাণ্ডু মৃগয়া গিয়ে সঙ্গমরত হরিণের উপর শর নিক্ষেপ করে হত্যা করেন। মৃত্যুর আগে মুনি স্বমূর্তি ধারণ করে, পাণ্ডুকে অভিশাপ দিয়ে বলেন

'মৃগভ্রমেই আমার উপর শরনিক্ষেপ করিয়াছ, এ নিমিত্ত তোমার ব্রহ্মহত্যার পাপ হইবে না, কিন্তু সঙ্গমসময়ে আমাকে বধ করাতে তোমার যে পাপ হইয়াছে, তাহার ফল অবশ্যই তোমাকে ভোগ করিতে হইবে। তুমি যে সময়ে স্ত্রীসংসর্গ করিবে, সেই সময়ে তোমার মৃত্যু হইবে। তুমি যে পত্নীর সইত সংসর্গ করিয়া কালগ্রাসে পতিত হইবে, তিনি ভক্তিভাবে তোমার সহগামিনী হইবেন। হে রাজন! তুমি যেমন সুখের সময়ে আমাকে দুঃখ দিলে, সেইরূপ তোমাকেও সুখকালে দুঃখ পাইতে হইবে।' [মহাভারত, আদিপর্ব: অষ্টাদশাধিকশততম অধ্যায়। পাণ্ডুর প্রতি মৃগরূপী মুনির শাপ]

 

এই অভিশাপের কারণে, মাদ্রী এবং কুন্তী উভয়ই স্বামী-সংসর্গ থেকে বঞ্চিত হন পরে কুন্তী সন্তান কামনায় পাণ্ডুর অনুরোধে তিন দেবতার সাথে মিলিত হন এবং তিনটি সন্তান লাভ করেন। মাদ্রীও অনুরূপভাবে সন্তান কামনা করে পাণ্ডুকে জানালে, কুন্তী এই মন্ত্রটি একবারের জন্য মাদ্রীকে দান করেনমাদ্রী একবার অশ্বিনীকুমার-দেবতাদ্বয়কে আহ্বান করে, নকুল সহদেব নামে দুটি সন্তান লাভ করে। 

এর কিছুদিন পর একদিন পাণ্ডু অত্যন্ত কামার্ত অবস্থায় মাদ্রীর সাথে মিলিত হন এবং সঙ্গমরত অবস্থায় ইনি মৃত্যুবরণ করেন পরে কুন্তী এসে সকল বিষয় অবগত হয়ে স্বামীর সাথে সহমৃতা হতে চান কিন্তু মাদ্রী সকল দোষ নিজের মনে করে নিজেই সহমৃতা হওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন ইনি তাঁর দুই পুত্র  নকুল সহদেবকে কুন্তীর হাতে সমর্পণ করে সহমৃতা হন পরে ধৃতরাষ্ট্রের আদেশে পাণ্ডু ও মাদ্রীর মৃতদেহ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য রাজধানীতে আনা হয় এবং সেখানেই উভয়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়