পাপিয়ো সাইনোসেফালেস
Papio cynocephalus

বেবুনের একটি প্রজাতি বিশেষ। জীববিজ্ঞানীরা বেবুনকে প্রাচীন পৃথিবীর বানর হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। ১৭৬৬ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রজাতির নামকরণ করেছিলেন সুইডিস জীববিজ্ঞানী
Carl Linnaeus । এদের দেহের রঙ হলুদ। এই কারণে একে অনেক সময় হলুদ বেবুন বলা হয়।

এদের তিনটি উপ প্রজাতি রয়েছে। এগুলো হলো-
এদের পাওয়া যায় আফ্রিকা মহাদেশের এ্যাঙ্গোলা, জাম্বিয়া, মালাউ, মোজাম্বিক, তাঞ্জানিয়া, কেনিয়া এবং সোমালিয়াতে।

পুরুষ-বেবুনের গড় দৈর্ঘ্য ১২০ সেন্টিমিটার এবং স্ত্রী-বেবুনের গড় দৈর্ঘ্য ৯৭ সেন্টিমিটার। পুরুষ-বেবুনের গড় ওজন ২৫.৮ কেজি, স্ত্রী-বেবুনের গড় ওজন ১১ কেজি। এদের পা ততটা স্থূল নয়। লেজ কিছু ঊর্ধবমুখি হয়ে নিচের দিকে সটান ঝুলে থাকে। প্রায় ১৮০ দিন গর্ভধারণের পরে সাধারণত স্ত্রী বেবুন একটি সন্তান প্রসব করে। এদের গড় আয়ু ২৭ বৎসর।

এরা সর্বভুক। খাদ্য তালিকায় রয়েছে শিকড়, পাতা, বাকল, ফল, ফুল। প্রাণিজ খাদ্যের মধ্যে রয়েছে কীটপতঙ্গ, পাখি, ছোটো ছোটো স্তন্যপায়ী প্রাণী।

এদের প্রধান শত্রু সিংহ, চিতা, হায়না, শিয়াল এবং পাইথন।

এরা দলবদ্ধভাবে বাস করে। এদের ছোটো ছোটো পরিবার গড়ে ওঠে একজন শক্তিশালী পুরষের নেতৃত্বে। প্রতিটি পুরুষে অধীনে থাকে প্রায় ১০ জন্ স্ত্রী। এই জাতীয় পরিবারকে বলা হয় হারেম। প্রতিটি হারেমে প্রাপ্তবয়স্কদের সাথে থাকে, শাবক এবং তরুণ-তরুণী।

একটি হারেমের কোনো পুরুষ শাবক যখন শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তখন সে কিছু স্ত্রী বেবুন নিয়ে পৃথক হয়ে যায় এবং পৃথক হারেম তৈরি হয়। তবে আত্ময়ীতার সূত্রে একাধিক হারেম শান্তিতে সহ-অবস্থান করে। এর ফলে কয়েকটি হারেম মিলে তৈরি হয় একটি বড় দল। এই বড় দলগুলোকে বলা হয় বংশীয় দল
। এরূপ দূর আত্মীয়ের সূত্রে অন্যান্য বংশীয় দলগুলো একত্রে আরও বড়দল তৈরি হয়। প্রতিটি বড়দলে প্রায় ২০০ পর্যন্ত বেবুন থাকে। এরা নির্বিবাদে মিলেমিশে থাকে। কিন্তু নিজেদের হারেম, বংশীয় দলের অস্তিত্ব বজায় রাখে। অনেক সময় বড়দলগুলো মিলে একটি বিশাল বেবুন রাজ্যের সৃষ্টি করে।

অনেক সময় কোনো হারেমের তরুণ শক্তিশালী পুরুষ নিজের হারেম পর্যাপ্ত স্ত্রী না পেলে, অন্য হারেমের নেতৃত্বদানকারী পুরুষ বেবুনকে আক্রমণ করে। জয়ী হলে ও ওই হারেমের সকল স্ত্রী তার অধীনস্ত হয়ে যায়।


সূত্র: