বিনোদিনী দাসী
১৮৬৬-১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ।
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রখ্যাত মঞ্চ-অভিনেত্রী। অন্য নাম- নটী
বিনোদিনী।
১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মা ছিলেন যৌনকর্মী। তিনি
আত্মজীবনীতে বলেছেন- '...আমি জগৎ মাঝে
কলঙ্কিণী, পতিতা। আমার আত্মীয় নাই সজন নাই, বন্ধু নাই, বান্ধব নাই, এই পৃথিবীতে
আমার বলিতে এমন কেহই নাই।'পাঁচ বৎসর বয়সে তাঁর বিবাহ
হয়েছিল। তবে এই স্বামীর সাথে তাঁর যোগাযোগ ছিল না। শৈশবে তিনি গান শিখেছিলেন স্টার
থিয়েটারে প্রখ্যাত অভিনেত্রী ও গায়িকা গঙ্গা বাইজীর কাছে।
১৮৭৫
খ্রিষ্টাব্দের ৬ ফেব্রুয়ারি
গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটার
শত্রুসংহার নাটক মঞ্চস্থ করে। নাটকটি ভট্টনারায়ণের বেণীসংহার অবলম্বনে হরলাল রায় রচনা করেন। এই নাটকে
বিনোদিনী
দ্রৌপদীর সখীর এক ছোট্ট ভূমিকায় অভিনয় করেন।
এটি ছিল তাঁর প্রথম মঞ্চাভিনয়।
তাঁর অভিনয় ক্ষমতা দেখে নাট্যশিক্ষকরা হরলাল রায়ের হেমলতা নাটকের 'হেমলতা' চরিত্রের
জন্য প্রশিক্ষণ দেন। তিনি নিজ প্রতিভায় অল্পদিনের মধ্যেই তাঁর চেয়ে বয়স্কা এবং
অভিজ্ঞা অভিনেত্রীদের সমকক্ষ হয়ে উঠেছিলেন।
১৮৭৫-এর মার্চ মাসে দিল্লি, আগ্রা, মিরাট, লক্ষ্ণৌ, লাহোর ইত্যাদি স্থানে অভিনয় করতে যায়।
এই দলে বিনোদিনী ছিলেন। এই সময় তাঁর বেতন পাঁচ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছিল। লক্ষ্ণৌ
নগরীর ছত্রমণ্ডিতে নীলদ্র্পণ অভিনয়ের সময়- ইংরেজ দর্শকরা হাঙ্গামা করেছিল।
বিনোদিনীর 'আমার কথা' গ্রন্থে এর বিবরণ পাওয়া যায়। এই গ্রন্থ থেকে জানা যায়- লক্ষ্ণৌ
থেকে এই নাট্যদল লাহোরে যায়। এই সময় তিনি 'সতী কি কলঙ্কিনী-তে রাধিকা, 'নবীন
তপস্বিনী'-তে জামিনী, সধবার একাদশীতে কাঞ্চন এবং 'বিয়ে পাগলা বুড়ো-তে ফতের চরিত্রে
অভিনয় করেছিলেন।
১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর
মাসে কুখ্যাত 'অভিনয় নিয়ন্ত্রণ' চালু হয়। এর ফলে
গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই সময় বিনোদিনী
বেঙ্গল থিয়েটারে
যোগদান করেন। বিনোদিনীর 'আমার কথা' গ্রন্থ থেকে জনা যায়-
বিনোদিনী-কে মাসিক ২৫ টাকা বেতনে আনা হয়েছিল। বিনোদিনীর অভিনেত্রী জীবনের সার্থকতার পর্ব শুরু হয়েছিল
বেঙ্গল থিয়েটারের
মাধ্যমে। বিশেষ করে
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
সৃষ্ট নারী চরিত্রগুলির
রূপায়ণের মাধ্যমে তিনি দর্শক ও সমালোচকদের মুগ্ধ করেছিলেন। এই সময় তাঁকে 'সাইনোরা',
'ফ্লাওয়ার অফ দি
নেটিভ থিয়েটার' ইত্যাদি উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিল।
মাইকেল মধুসূদন
দত্তের, 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের
নাট্যরূপে একাই সাতটি চরিত্র করতেন। এগুলো
ছিল- চিত্রাঙ্গদা, প্রমীলা, বারুণী, রতি, মায়া, মহামায়া এবং সীতা।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের
মৃণালিনী নাটকে মনোরমার ভূমিকায় এবং দুর্গেশনন্দিনীতে অভিনয় করতেন আয়েষা এবং
তিলোত্তমার ভূমিকায়।
১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে
ন্যাশনাল থিয়েটার
নিলামে ওঠে এবং প্রতাপ জহুরি নিলামে ২৫ হাজার টাকায় এই থিয়েটার কিনে নেন।
এই সময় তিনি গিরিশচন্দ্রকে তিনি
এই থিয়েটারের ম্যানেজার পদে নিয়োগ দেন। ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে
গিরিশচন্দ্র
এই থিয়েটারের জন্য নতুন নাট্যদল গঠনের উদ্যোগ নেন। এই সময় অন্যান্য নাট্যকর্মীদের সাথে
বিনোদিনী অনেকেই
গিরিশচন্দ্রের
দলে যোগ দিয়েছিলেন।
গিরিশচন্দ্র
প্রথম নাটক হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন মাইকেল টড-এর রাজস্থানের ইতিহাস বিষয়ক গ্রন্থ
অনুসরণে সুরেন্দ্রনাথ মজুমদারের রচিত 'হামীর'। এঁদের নিয়ে তিনি প্রথম মহড়া দেওয়া
শুরু করেছিলেন ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে। ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি মহাসমারোহে
নতুন
ন্যাশনাল থিয়েটার
উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষে 'হামীর' মঞ্চস্থ হয়েছিল। এতে অভিনয়ে করেছিলেন- হামীর
(গিরিশচন্দ্র), নায়িকা লীলা (বিনোদিনী)। দুর্ভাগ্যজনক হলো- এই নাটকটি
দর্শকদের ভিতরে তেমন সাড়া জাগাতে পারেন। ৩০ জুলাই
গিরিশচন্দ্রের রচিত
রাবণবধ নাটক মঞ্চস্থ হয়। এই নাটকে গিরিশচন্দ্র রামের ভূমিকায় এবং বিনোদিনী সীতার
ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।
এই সময়ের অধিকাংশ নাটক জনসমাদার পায় নি। কিন্তু
গিরিশচন্দ্র দর্শককে টানার জন্য
ক্রমাগত নাটক লিখে চলেছিলেন। এর ভিতরে যে সকল উল্লেখযোগ্য নাটকে বিনোদিনী অংশগ্রহণ
করেছিল, সেগুলো হলো-
- রাবণবধ (৩০ জুলাই)। পৌরাণিক নাটক। রামের ভূমিকায়
গিরিশচন্দ্র, সীতার ভূমিকায়
বিনোদিনী,
লক্ষ্মণের ভূমিকায় মহেন্দ্রলাল বসু এবং রাবণের ভূমিকায় অভিনয় করেন অমৃতলাল
মিত্র। এই নাটকটি বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল। এই নাটকে তিনি প্রথম নিজস্বরীতিতে ভাঙা
অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেছিলেন। যা পরবর্তী সময়ে গৈরিশ ছন্দ নামে পরিচিতি
লাভ করেছে।
- সীতার বনবাস (১৭ সেপ্টেম্বর)। এই নাটকে যাঁরা অভিনয়
করেছিলেন-
গিরিশচন্দ্র (রাম), কাদম্বিনী (সীতা), মহেন্দ্রলাল বসু (লক্ষ্মণ),
অমৃতলাল মিত্র (বাল্মীকি),
বিনোদিনী
(লব), কুসুমকুমারী (কুশ)। আগে নিষিদ্ধপল্লীর মেয়েদের
দ্বারা অভিনীত নাটক দেখার জন্য ভদ্রঘরের মেয়েরা নাটক
দেখতে আসতো না। সে অবস্থার নিরসন ঘটিয়ে
'সীতার বনবাস দেখার জন্য
ভদ্রঘরের মেয়েরা স্টার থিয়েটারে ভীড় জমিয়েছিল।
- অভিমন্যু
বধ। এই নাটকে যাঁরা অভিনয় করেছিলেন, তাঁরা হলেন-
গিরিশচন্দ্র (যুধিষ্ঠির ও দুর্যোধন), কেদার চৌধুরী (শ্রীকৃষ্ণ
ও দ্রোণাচার্য), অমৃত মিত্র (ভীম ও গর্গ), মহেন্দ্রলাল বসু (অর্জুন ও জয়দ্রথ),
অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় (অভিমন্যু) এবং
বিনোদিনী
(উত্তরা)।
এই সময়ের সকল নাটকই যে সাধারণ মানুষ পছন্দ করেছিল, তা নয়। কিন্তু
বিনোদিনী
ও কুসুমকুমারীর গান দর্শকদের মাতিয়ে দিয়েছিল। অনেকে এঁদের
গান শোনার জন্যই আসতেন। তাই
'অভিমন্যুবধ' দর্শক টানতে ব্যর্থ হলে প্রতাপচাঁদ
গিরিশচন্দ্রকে ডেকে বলেছিলেন- 'বাবু, যব দুসরা কিতাব
লিখগে তব ফির ওহি দুনো লেড়কা ছোড় দেও'- অর্থাৎ যে নাটকই লেখ না কেন, এ
দুনো লেড়কা লব-কুশকে মঞ্চে এনে ছেড়ে দাও।
১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দের শুরুতেই পাগুবের অজ্ঞাতবাস
নাটকের মাধ্যমে
গিরিশচন্দ্র সাফল্যের মুখ দেখেছিলেন। এই সময়
গিরিশচন্দ্র
অভিনেতাদের মাইনে ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। প্রতাপচাঁদ তা
নাকচ করে দেন। বরং থিয়েটারের নিয়মনীতির আরো কঠোর করেন।
বিনোদিনীর স্বাস্থ্যগত কারণে কাশীতে যান
ছুটি নিয়ে। প্রতাপচাঁদ এর জন্য বেতন কেটেছিলেন।
গিরিশচন্দ্র ঘোষ-সহ
অন্যান্য শিল্পীরা এর প্রতিবাদ করেছিলেন। এই সূত্রে
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
সদলবলে এই থিয়েটার থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। এই দলে যাঁরা ছিলেন তাঁরা হলেন- অমৃত মিত্র, অঘোরনাথ পাঠক,
উপেন্দ্র মিত্র, বিনোদিনী, কাদম্বিনী, ক্ষেত্রমণি, নীলমাধব চক্রবর্তী প্রমুখ।
গিরিশচন্দ্র এঁদের নিয়ে তৈরি করেছিলেন 'ক্যালকাটা স্টার কোম্পানী' নামে
একটি দল। ১৮৩৪ খ্রিষ্টাব্দের এঁরা ২৮ ও ৩১ মার্চ এবং ১৭ এপ্রিল
বেঙ্গল থিয়েটার মঞ্চ ভাড়া নিয়ে তাঁদের নিজস্ব নাট্ক মঞ্চস্থ
করেছিলেন। এঁরা তখন নিয়মিত নাট্যচর্চা করার জন্য একটি স্থায়ী মঞ্চের সন্ধানে ছিলেন।
এই দলের
বিনোদিনী
ন্যাশনাল থিয়েটারে
থাকাকালে অভিনয়ে, নাচে, গানে এবং রূপে কলকাতার নাট্য-অঙ্গনকে মোহিত করে রেখেছিলেন।
এই সময় রাজস্থানের গুর্মুখ রায় মুসাদ্দি (পিতা ছিলেন গণেশদাস মুসাদ্দি)
বিনোদিনী-কে রক্ষিতা হিসেবে পাওয়ার
কামনায় অধীর হয়ে উঠেছিলেন। এই কামনা থেকে গুর্মুখ রায়
গিরিশচন্দ্রের কাছে একটি
প্রস্তাব নিয়ে আসেন। প্রস্তাবটি হলো- যদি
বিনোদিনী তাঁর রক্ষিতা হতে রাজি থাকেন,
তাহলে
গিরিশচন্দ্র ঘোষের
দলের জন্য একটি স্থায়ী নাট্যমঞ্চ তৈরি করে দেবেন। প্রথমে গুর্মুখ রায়ের প্রস্তাবে
বিনোদিনী প্রথমে রাজি হন নি। কারণ তখন
তিনি অন্য বাবুর কাছে বাঁধা ছিলেন। এ নিয়ে আগের বাবুর সাথে গুর্মুখ রায়ের বিবাদের
বিষয় জানা যায় বিনোদিনীর 'আমার কথা' গ্রন্থ থেকে।
গিরিশচন্দ্র অনুরোধে এবং মঞ্চের নেশায় তিনি এই প্রস্তাবে
রাজি হয়েছিলেন। তাছাড়া সবাই কথা দিয়েছিলেন যে, বিনোদিনীর নামানুসারে এই নাট্যশালার
নাম হবে 'বি-থিয়েটার'।
এরপর
কলকাতার ৬৮ নম্বর
বিটন স্ট্রিটে গুর্মুখ রায় (গুর্মুখ
রায় মুসদ্দি) একটি খালি জায়গা ইজারা নিয়ে এই মঞ্চটি
তৈরি করেছিলেন। কাঠ-টিনের পরিবর্তে বাড়িটি তৈরি হয়েছিল ইট দিয়ে।
বিনোদিনীকে ছিলেন নিষিদ্ধ পল্লীর মেয়ে।
সে কারণ, নির্মাতার মনে করেছিলেন যে, নিষিদ্ধ পল্লীর মেয়ের নামে মঞ্চ তৈরি হলে,
সেখানে দর্শকরা আসবেন না। তাছাড়া
গিরিশচন্দ্র তাঁর 'ক্যালকাটা স্টার কোম্পানী' নামকে
পরিবর্তন করে স্টার থিয়েটার করার ক্ষেত্রে আগেই মনস্থির করে রেখেছিলেন। শেষ পর্যন্ত
বাড়িটি রেজিস্ট্রি করার সময় এর নাম পাল্টে রাখা হয়েছিল- স্টার থিয়েটার।
১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ২১ জুলাই এই স্টার থিয়েটারের যাত্রা শুরু হয়েছিল। প্রথম নাটক
ছিল-
গিরিশচন্দ্রের রচিত দক্ষযজ্ঞ। এই নাটকে যাঁরা অভিনয়
করেছিলেন, তাঁরা হলেন-
দক্ষ (গিরিশচন্দ্র), মহাদেব
(অমৃতলাল মিত্র), দধীচি (অমৃতলাল বসু), ব্রহ্মা (শীলমাধব
চক্রবর্তী), বিষ্ণু (উপেন্দ্রনাথ মিত্র), সতী (
বিনোদিনী), তপস্বিনী (ক্ষেত্রমণি), প্রসৃতি
(কাদস্বিনী)।
১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে গুর্মুখ রায় আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের লোকজনের
পীড়নে এবং ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে স্টারের স্বত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বিনোদিনীর
জন্য তৈরি
এই থিয়েটারের স্বত্ব দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু
গিরিশচন্দ্র ও অন্যান্যদের প্রতিবন্ধকতায় তা বিনোদিনী কোনো স্বত্ব
পান নি। এরপর
হতাশ হয়ে তিনি মাত্র
এগারো হাজার টাকায় স্টার থিয়েটারের স্বত্ব বিক্রি করে দেন চারজনের নামে। এঁরা
হলোন অমৃতলাল মিত্র. দাসচরণ নিয়োগী, হরিপ্রসাদ বস ও অমতলাল বসু।
১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে চৈতন্যলীলা (২ আগস্ট) নাটকে চৈতন্যের ভূমিকায় তিনি নৃত্যে গীতে ও অভিনয়ে সবাইকে মুগ্ধ
করে দিয়েছিলেন। এই নাটকে সুরকার ও নৃত্য শিক্ষক ছিলেন বেণীমাধব অধিকারী।
চৈতন্যলীলার ২১ সেপ্টেম্বরে অভিনয় দেখতে এসেছিলেন
রামকৃষ্ণ পরমহংস। তিনি এই নাটক
দেখে অভিভূত হন এবং সবাইকে আশীর্বাদ করেন। বিশেষ করে চৈতন্যের চরিত্রে
বিনোদিনী-কে বিশেষভাবে প্রশংসা ও
আশীর্বাদ করেন। এরপর থেকে ধীরে ধীরে তিনি রামকৃষ্ণদেব পরম ভক্তে পরিণত হন এবং
রামকৃষ্ণও তাঁকে পরমস্নেহে কাছে টেনে নিয়েছিলেন।
১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে বিনোদিনীর উল্লেখযোগ্য পরিবেশনা ছিল- বুদ্ধদেবচরিত (১৯ সেপ্টেম্বর)।
এই নাটকে তিনি অভিনয় করেছিলেন গোপার চরিত্র।
১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক ছিল বিল্বমঙ্গল ঠাকুর
(১২ জুন)। এই নাটকে তিনি চিন্তামণির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। এই বছরে ২৬ ডিসেম্বর 'বেল্লিকবাজার'
নাটকে অভিনয়ের পর তিনি অভিনয় ছেড়ে দেন। বাকি জীবন তিনি
কাটিয়েছিলেন ধর্মাচারের মধ্য দিয়ে। তাঁর আধ্যাত্মিক গুরু ছিলেন
রামকৃষ্ণদেব।
তিনি মোট ৫০টি নাটকে ৬০টিরও বেশি চরিত্রে
অভিনয় করেছিলেন। তাঁর রচিত গ্রন্থ- আমার কথা, কবিতাগ্রন্থ 'বাসনা ও 'কনক ও নলিনী।
১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র:
- আমার কথা। বিনোদিনী দাসী। কথাশুল্প প্রকাশ। কলকাতা। পৌষ
১৩৬১
- গিরিশ রচনাবলী। সাহিত্য সংসদ। কলিকাতা। ১৯৬৯।
- বঙ্গীয় নাট্যশঠালার
ইতিহাস। ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ মন্দির, ১৩৪৬
-
বাংলা থিয়েটারের ইতিহাস।
দর্শন চৌধুরী। পুস্তক বিপনী
কলকাতা ১৯৯৫।
- বাংলা থিয়েটারের গান। শ্রীরাজ্যেশ্বর মিত্র। ইন্দিরা সংগীত-শিক্ষায়তন।
১৯৮২।
- বাংলা থিয়েটারের পূর্বাপর। নৃপেন্দ্র সাহা। তূণ প্রকাশ। ১৯৯৯।
- বাংলা নাটকের ইতিবৃ্ত্ত। হেমেন্দ্র নাথ
দাশগুপ্ত
-
বাংলা নাটকের ইতিহাস। অজিতকুমার ঘোষ
- বাংলা নাট্য সাহিত্যের ইতিহাস। আশুতোষ ভট্টাচার্য
- বাংলা নাট্যসাহিত্যের পূর্ব্ব-কথা। শ্রীশরচ্চন্দ্র ঘোষাল। নারায়ণ [পৌষ ১৩২১ বঙ্গাব্দ]
- বাংলা নাটকের বিবর্তন। সুরেশচন্দ্র মৈত্র। মুক্তধারা। ১৯৭১
-
বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত।
সপ্তম খণ্ড। অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়