কাজী নজরুল ইসলামের
২৩ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স
নজরুল ইসলামের ২৩ বৎসর অতিক্রান্ত
বয়সের শুরু হয়েছিল - ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩২৯ বঙ্গাব্দ (২৫ মে ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দ) থেকে। শেষ
হয়েছিল ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩০ বঙ্গাব্দ (বৃহস্পতিবার ২৪শে মে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ)।
নজরুল ইসলামের ২৩তম জন্মদিন পালিত হয়েছিল
কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে। কান্দিরপাড়ে বীরেন্দ্র সেনগুপ্তের বাড়িতে অতিথি
থাকার সূত্রে নজরুলের সাথে
আশালতা'র ঘনিষ্টতা বৃদ্ধি পায়। এ নিয়ে স্থানীয় রক্ষণশীল হিন্দু সমাজ
ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এই অবস্থায় জুন মাসের শেষের দিকে নজরুল কুমিল্লা থেকে
কলকাতায় চলে আসেন।
কলকাতায় ফিরে
মাওলানা
আকরাম খাঁ-এর সম্পাদিত দৈনিক সেবক
পত্রিকায় যুক্ত হন এবং কিছুদিনের ভিতরে এই পত্রিকার চাকরি ছেড়ে
দেন। এছাড়া এই বছরেই নজরুল সম্পাদিত '
ধূমকেতু পত্রিকা' প্রকাশিত হয়। ব্রিটিশ বিরোধী রচনা প্রকাশের জন্য, পত্রিকা বাজেয়াপ্ত হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। নজরুল গ্রেফতার এড়ানোর জন্য
কুমিল্লা চলে যান। পরে সেখান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসের অর্ধেক সময় তিনি কারাগারে কাটান। কারাগারের নির্যাতনের প্রতিবাদ স্বরূপ তিনি অনশন শুরু করেন। এর ফলে তিনি প্রায় মরণাপন্ন দশায় চলে যান। পরে ১০ জ্যৈষ্ঠ (২৩শে মে) বিরজাসুন্দরী দেবী এসে নজরুলের অনশন ভঙ্গ করিয়েছিলেন। অবশিষ্ট সময়ে নজরুল হুগলি জেলেই ছিলেন। এই সময়ের ভিতরে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'অগ্নিবীণা' প্রকাশিত হয়েছিল।
২৩ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সে নজরুলের রচিত গানের সংখ্যা ছিল ৮টি। সব মিলিয়ে ২৩ বৎসর অধিক্রান্ত বয়সের শেষ,
তাঁর রচিত গানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৪৬টি।
রচনার স্থান ও কাল: কুমিল্লা/জ্যৈষ্ঠ ১৩২৯।
প্রথম প্রকাশ:
বঙ্গবাণী
[শ্রাবণ ১৩২৯ (জুলাই-আগষ্ট ১৯২২)। শিরোনাম: চির-চেনা (গান)।
নজরুলের বয়স: ২৩ বৎসর ১ মাস।
রচনার স্থান ও কাল:
কুমিল্লা। আষাঢ় ১৩২৯
প্রথম প্রকাশ:
ছায়ানট
। প্রথম প্রকাশ
২২ সেপ্টেম্বর ১৯২৫ (৬ আশ্বিন ১৩৩২ বঙ্গাব্দ)। শিরোনাম:
স্তব্ধ বাদল।
নজরুলের বয়স: ২৩ বৎসর ১ মাস।
রচনার স্থান ও কাল: কলকাতা।
১৯২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জুন (সোমবার ১২ আষাঢ় ১৩২৯ বঙ্গাব্দ) কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের
স্টুডেন্টস হলে
সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের স্মরণে একটি শোকসভার আয়োজন করা হয়। শোকসভায় নজরুল সদ্য রচিত এই গানটি
পরিবেশন করেছিলেন।
ফণি-মনসা
প্রথম সংস্করণ [শ্রাবণ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ (জুলাই ১৯২৭)
সত্যেন্দ্র-প্রয়াণ-গীতি'
শিরোনামে অন্তর্ভুক্ত গানটির সাথে রচনার স্থান ও কাল
উল্লেখ আছে 'কলিকাতা, শ্রাবণ ১৩২৯'। সম্ভবত
ফণি-মনসায় তারিখটি ভুলক্রেমে 'শ্রাবণ ১৩২৯' মুদ্রিত হয়েছিল।
প্রথম প্রকাশ: মাসিক
বসুমতী।
শ্রাবণ ১৩২৯ (জুলাই-আগষ্ট
১৯২৭) শিরোনাম: "সত্য"-প্রয়াণ-গীতি (বাউলের
সুর) পৃষ্ঠা: ৫০৮।[নমুনা]
নজরুলের বয়স: ২৩ বৎসর ১ মাস।
রচনার স্থান ও কাল: কলকাতা। অজ্ঞাত
প্রথম প্রকাশ:
ধূমকেতু।
প্রথম বর্ষ, প্রথম সংখ্যায়
[১১ আগষ্ট ১৯২২ (শুক্রবার, ২৬ শ্রাবণ ১৩২৯)
নজরুলের বয়স: ২৩ বৎসর ২ মাস।
রচনার স্থান ও কাল: প্রেসিডেন্সি জেল। অজ্ঞাত
প্রথম প্রকাশ:
প্রবাসী [মাঘ ১৩২৯। শিরোনাম: 'পউষ'। পৃষ্ঠা ৫৩০]
[নমুনা
]
নজরুলের বয়স: ২৩ বৎসর ৭ মাস।
অগ্নিবীণা: নজরুলের রচিত এবং প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ
অগ্নি-বীণা প্রকাশিত হয়েছিল- ১৩২৯ বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসে (অক্টোবর ১৯২২
খ্রিষ্টাব্দ)। বেঙ্গল লাইব্রেরির ক্যাটালগ অনুসারে
জানা যায়, এই গ্রন্থটির প্রকাশকাল ছিল ২৫ অক্টোবর ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দ।
এই গ্রন্থে কোনো নূতন গান অন্তর্ভুক্ত ২টি গানই ছিল- পূর্বে
রচিত। গান দুটো হবল- 'অগ্নিঋষি! অগ্নিবীণা তোমায় সাজে', 'তোরা সব জয়ধ্বনি কর'।
রচনার স্থান ও কাল: আলিপুর জেল। অজ্ঞাত
প্রথম প্রকাশ:
প্রবাসী [ফাল্গুন ১৩২৯
(ফেব্রুয়ারি ১৯২৩)। শিরোনাম: 'পথহারা'। পৃষ্ঠা ৫৩০]
[নমুনা
]
নজরুলের বয়স: ২৩ বৎসর ৯ মাস।
রচনার স্থান ও কাল: হুগলি জেল। ১৪-২৫শে
এপ্রিল ১৯২৩। উল্লেখ্য, নজরুল '
ধূমকেতু' পত্রিকার মাধ্যমে ব্রিটিশ বিরোধী
রচনা প্রচার করেন। এই কারণে
২৩শে নভেম্বর
কুমিল্লা থেকে তাঁকে
গ্রেফতার করে,
কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে রাখা হয়। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই
জানুয়ারি নজরলকে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১৭ই জানুয়ারি নজরুলকে
প্রেসিডেন্সি জেল থেকে
আলিপুর কারাগারে রাখা হয়। এরপর ১৪ই এপ্রিল তাঁকে
পাঠানো হয়েছিল
হুগলী জেল এই জেলে নজরুল-সহ সকল রাজবন্দীদের
উপর অকথ্য অত্যাচার করা হয়েছিল।
এই অবস্থায় 'জেলের
সুপার'-কে ব্যঙ্গ করে নজরুল এই গানটি রচনা করেছিলেন। গানটি ছিল মূলত
রবীন্দ্রনাথে রচিত 'তোমারি গেহে পালিছ স্নেহে তুমি ধন্য ধন্য হে' গানের প্যারোডি।
ভাঙার গান।
প্রথম সংস্করণে
[শ্রাবণ মাসে (আগষ্ট ১৯২৪)] 'সুপার (জেলের) বন্দনা' শিরোনামে গানটি অন্তর্ভুক্ত
হয়েছিল। গানটির পাদটীকায় উল্লেখ ছিল- 'হুগলি জেলে থাকাকালীন জেলের
সকল প্রকার জুলুম আমাদের ওপর দিয়ে পরখ ক'রে নেওয়া হয়েছিল। সেই সময় জেলের মূর্ত্তিমান 'জুলুম' বড়-কর্তাকে দেখে এই
গান গেয়ে আমরা অভিনন্দন জানাতাম']
লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো-
অনশনের কারণে নজরুল ২৫ এপ্রিলের (১২ বৈশাখ ১৩২৯) দিকে খুব অসুস্থ হয়ে
পড়েন। তাই ধারণা করা যায় গানটি তিনি রচনা করেছিলেন ১৪-২৫শে এপ্রিলের (১-১২
বৈশাখ ১৩২৯) ভিতরে।
প্রথম প্রকাশ:
ভাঙার গান ।
প্রথম সংস্করণে
[শ্রাবণ মাসে (আগষ্ট ১৯২৪)]
নজরুলের বয়স: ২৩ বৎসর ১১ মাস।
রচনার স্থান ও কাল: হুগলি জেল। মে ১৯২৩ (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ)।
উল্লেখ্য, "ব্রহ্মমোহন ঠাকুর" -সম্পাদিত নজরুল-সঙ্গীত,
আদি স্বরলিপি সংগ্রহ' [নজরুল ইনস্টিটিউট, আশ্বিন ১৪০৬।
অক্টোবর ১৯৯৯)। পৃষ্ঠা: ৯-১০।] থেকে
জানা যায়- '১৯২৩ সালে হুগলী জেলে থাকাকালীন রচিত এই গানটির স্বরলিপি কবি স্বয়ং করেছিলেন।..'
প্রথম প্রকাশ:
ভারতী জ্যৈষ্ঠ ১৩৩১ (মে-জুন ১৯২৪)। কাজী নজরুল ইসলাম-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।
[নমুনা]
নজরুলের বয়স:২৩ বৎসর ১১
মাস।
সূত্র: