বিষয়: নজরুল সঙ্গীত। 
শিরোনাম:
								বাবার হল বিয়ে
	
		
								বাবার হল বিয়ে
								ষাঁড়ের পিঠে চড়েরে ভাই – (সাপের) খোলস মাথায় দিয়ে॥
								বাবার জটায় ছিলেন গঙ্গা এবার কোঠায় এলেন সতী
								প্রাণের কোঠায় এলেন সতী
								আদ্যিকালের বদ্যিবুড়ি পেলেন পরম পতি ;
								মাকে দেখে রেগে মেগে পেত্নীরা সব গেল ভেগে
								(আজ) গৃহীর দীক্ষা নিলেন বাবা দাক্ষায়নী নিয়ে॥
								মোরা মা আসবার অনেক আগে জন্মে আছি ঘরে
								এই অগ্রপথিক ছেলেদের মা চিনবে কেমন করে;
								বাজা রে সব বগল বাজা, আর খাব না সিদ্ধি গাঁজা
								এই ভূতেরা সব মানুষ হবে (মায়ের) স্নেহ সুধা পিয়ে॥
	
	
	- 
	ভাবসন্ধান: এটি মন্মথ রায়ের রচিত 'সতী'  নাটকের 
	গান। সতীর সাথে
	
	মহাদেবের বিবাহের পর,
	
	মহাদেবের একান্ত অনুচর  নন্দী-ভৃঙ্গীর নেতৃত্বে ভুত, প্রেত, 
	প্রমথ, নারীপুরুষ শোভাযাত্রা করে এসে নৃত্যগীতের মাধ্যমে বিবাহোৎসব পালন শুরু 
	করে। এই গানটি উক্ত বিবাহোৎসবের জন্য নিবেদিত গান হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। 
 
 গানটির ভাষারীতিতে দেখা যায়, নিতান্তও সাধারণ জনপদের আটপৌড়ে কথনরীতি। গানটির 
	শুরু হয়েছে- একটি সাধারণ বিবৃতি 'বাবার হ'ল বিয়ে' বাক্য দিয়ে। এ গানের মূল কথা 
	হলো- 
	
	মহাদেবের বিয়ে হয়েছে, তিনি বর হিসেবে  এসেছিলেন ষাঁড়ের পিঠে চড়ে। 
	তাঁর মাথায় ছিল- সাপের খোলস দিয়ে বানানো মুকুট।
 
 মহাদেবের জটা বেয়ে স্বর্গ থেকে
	গঙ্গা 
	নদী মর্তে পতিত হয়েছিলেন, এমন পৌরাণিক কাহিনির প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়েছে- আগে 
	মহাদেবের মাথা ছিলেন
	গঙ্গা, 
	বিবাহের পর তাঁর প্রাণের ভবনে এলেন সতী।  আদ্যাশক্তি
	
	দুর্গাই হলেন সতী। তাই তাঁকে আদ্যিকাল্যের বদ্যি বুড়ি নামে বিশেষিত করা 
	হয়েছে। এই বুড়ি পেলেম পরম দেবতা
	
	মহাদেবকে স্বামী হিসেবে পেয়েছেন। এই বিয়ের মাধ্যমে
	
	মহাদেব দাক্ষায়ণীকে  (দক্ষের 
	কন্যা সতী) সাথে গৃহস্বামী হওয়ার দীক্ষা নিলেন।
 
 সঙ্গীত শিল্পীরা গানের ভাষায় বলেছেন- সতী এ ঘরে আসার বহু আগে থেকে তাঁরা 
	মহাদেবের ঘরে বাস করে আসছেন। তাই সতীর পক্ষে অগ্রপথিকরূপী এই গায়কদের চেনা 
	সম্ভব নয়। সতীর আগমনের আনন্দে
	
	মহাদেবের অনচররা নিজেদের উৎসাহে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বলছেন 'আনন্দে বগল বাজা'। 
	সতী এসেছেন বলে তাঁরা প্রতীজ্ঞা করছেন যে, তাঁরা আর সিদ্ধ গাঁজা খাবেন না।
	 তাঁরা বানছেন 
	বলছেন- সতীর স্নেহে ভুতেরা সব মানুষ হয়ে উঠবেন।
 
- 
	রচনাকাল ও স্থান: গানটির 
		রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ এপ্রিল (বুধবার, ১৫ বৈশাখ ১৩৪৪),
		মন্মথ রায়ের রচিত 'সতী
'  নাটক  
নাট্যনিকেতন 
	নামক রঙ্গালয়ে মঞ্চস্থ হয়।  এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৭ বৎসর 
	১১ মাস। 
 
- মঞ্চ নাটক: সতী (নাটক)। রচয়িতা 
মন্মথ 
রায় । 
[নাট্যনিকেতন।
১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ এপ্রিল (বুধবার, ১৫ বৈশাখ ১৩৪৪)। চরিত্র:  ভুত, প্রেত, 
	প্রমথ, নারীপুরুষ। শিল্পী: মণি ঘোষ ও পঞ্চানন বন্দ্যোপাধ্যায়। সুর: নজরুল ইসলাম]
- গ্রন্থ: 
	
	- সতী 
	। নাটক। প্রথম অঙ্ক। দ্বিতীয় দৃশ্য। সখীদের গান। মন্মথ রায়  নাট্য 
	গ্রন্থাবলী। ষষ্ঠ খণ্ড। মনমথন প্রকাশন। ১৩৬৫ বঙ্গাব্দ (১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দ)। 
	পৃষ্ঠা: ২৩০
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইন্সটিটিউট, 
	ফেব্রুয়ারি ২০১১। গান সংখ্যা ২০২৩। 
 
- সুরকার: 
	
	নজরুল ইসলাম
- পর্যায়:
		- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দধর্ম। শাক্ত। সতী-মহাদেবের 
		বিবাহোৎসব