৬৫ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স
২৫ বৈশাখ ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ থেকে ২৪ বৈশাখ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত (৭ মে ১৯২৬- ৬ মে ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দ)
রবীন্দ্রনাথ
১৯২৬
খ্রিষ্টাব্দের ১২ই মে বোম্বাই থেকে জাহাজ যোগে ইতালির
উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এবং ৩০ মে ইতালির
নেপলস বন্দরে পৌঁছান। পরে বিশেষ ট্রেনে তিনি রোম পৌঁছান। সেখানে তৎকালীন
ফ্যাসিস্ত নেতা মুসেলিনীর রাজকর্মচারীরা মুসেলিনীর পক্ষে তাঁকে সম্বর্ধনা দিয়ে
অতিথি হিসেবে গ্রহণ করেন। রোমের গ্রান্ড হোটেলে মুসেলিনী তাঁর থাকার ব্যবস্থা
করেছিলেন।
৩১শে মে
মুসেলিনীর সাথে
তাঁর
সাক্ষাৎ হয়। এরপর তিনি রোমের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। সে সময়ে
ইতালির রাজা তৃতীয় ভিক্টর ইমানুয়েলএর সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। এছাড়া মুসেলিনীর
বাধা দেওয়া সত্ত্বে দার্শনিক ক্রোচের সাথে দেখা
করিয়ে
দিয়েছেলেন একজন তরুন ক্যাপ্টেন।
১৬ই জুন তিনি রোম থেকে ফ্লোরেন্স আসেন। সেখানে চিত্র শিল্পী দ্যা ভিঞ্চির নামের
গঠিত একটি সংগঠন তাঁকে সম্বর্ধনা দেয়। ১৭ই জুন তিনি ফ্লোরেন্স বিশ্বিদ্যালয়ে
বক্তৃতা দেন। এরপর তিনি ফ্লোরেন্স থেকে তুরিন আসেন। ২০ জুন পর্যন্ত তুরিনে
মহিলা সমিতি তাঁকে সম্বর্ধনা দেয়। তিনি তুরিন বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেন। ২২শে
জুন তিনি তুরিন থেকে মন্ত্রো পর্যন্ত রেলগাড়িতে আসেন। পরে সেখান থেকে
মোটরগাড়িতে ভিলেনুতে আসেন। প্রখ্যাত দার্শনিক রোমা রোলাঁ রবীন্দ্রনাথের থাকার
ব্যবস্থা করেছিলেন হোটেল বাইরনে। এখানে রোমা রোলাঁর সাথে রবীন্দ্রনাথের
সাক্ষাৎ হয়।
৬ই জুলাই ভিলেনু থেকে আসেন ৎসুরিক নগরীতে আসেন। সেখানাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষকরা তাঁকে সম্বর্ধনা দেন। এরপর লুসার্নে একদিন বক্তৃতার জন্য থামেন।
লুসার্ন থেকে তিনি ভিয়েনা আসেন ১০ই জুলাই। জুলাই মাসের শেষের দিকে তিনি ভিয়েনা
থেকে প্যারিসে আসেন এবং পরে লণ্ডন যান। এরপর তিনি যান নরওয়েতে। সেখানে তিনি
কয়েকটি বক্তৃতা দেন। নরওয়ে থেকে সুইডেন ঘুরে তিনি ডেনমার্কের রাজধানী
কোপেনহেগেন আসেন ৬ সেপ্টেম্বর। পরে কোপেনহেগেন থেকে বাল্টিক সাগর পার হয়ে
জার্মানের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
ইউরোপের ভ্রমণের শুরু থেকে (১৬ জুন) বাল্টিক সাগর পাড়ির প্রাক্কালে রবীন্দ্রনাথ
কোনো গান লেখেন নি। এবারের ইউরোপ ভ্রমণের সময় প্রথম গানটি
লিখলেন
৮ই সেপ্টেম্বর
(২২ ভাদ্র ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)।
গানটি হলো-
সে কোন পাগল যায় [বিচিত্র-১০৮] [তথ্য]
৯ই সেপ্টেম্বর কবি জার্মানীর হামবুর্গ শহরে পৌছান। এখানে তিনি স্থানীয়একটি হোটেলে উঠেন। ৯ এবং ১০ সেপ্টেম্বর তিনি বহু গুণী্জনদের সাথে কথা বলেন এবং একটি সম্বর্ধনা সভায় 'Culture and Prpgress' শিরোনামে একটি বক্তৃতা দেন। এই ব্যস্ততার মধ্যে তিনি দুটি গান রচনা করেন। এই গান দুটি হলো-
কার চোখের চাওয়ায় হাওয়ায় দোলায় মন
৯ সেপ্টেম্বর ১৯২৬ (২৩ ভাদ্র ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। হামবুর্গ, জার্মানী।রয় যে কাঙাল শূন্য হাতে
১০ সেপ্টেম্বর ১৯২৬ (২৪ ভাদ্র ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। হামবুর্গ, জার্মানী
কাইজা হফ নামক একটি হোটেলে উঠেন।
১৭
সেপ্টেম্বর
১৯২৬ (২৪ ভাদ্র
১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)।
মিউনিখ,
জার্মানী
ছুটির বাঁশি বাজল যে ওই
১৭
সেপ্টেম্বর
১৯২৬ (২৪ ভাদ্র
১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)।
মিউনিখ,
জার্মানী
আকাশ তোমায় কোন্ রূপে
১৮
সেপ্টেম্বর
১৯২৬ (১ আশ্বিন
১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)।
মিউনিখ,
জার্মানী
তোর ভিতরে জাগিয়া কে যে [পূজা-১৪৯] [তথ্য]
১৮
সেপ্টেম্বর
১৯২৬ (১ আশ্বিন
১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)।
মিউনিখ, জার্মানী।
নাই নাই ভয়, হবে হবে জয় [স্বদেশ-১২] [তথ্য]
১৯
সেপ্টেম্বর
১৯২৬ (২ আশ্বিন
১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)।
নুরেমবার্গ,
জার্মানী
আমায় মুক্তি যদি
দাও [পূজা-১৮৬] [তথ্য]
২০ সেপ্টেম্বর ১৯২৬ (৩ আশ্বিন ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। নুরেমবার্গ, জার্মানী সকালবেলার আলোয় বাজে
২১ সেপ্টেম্বর ১৯২৬ (৪ আশ্বিন ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। স্টুগার্ড, জার্মানী মধুর তোমার শেষ যে না পাই
২৪ সেপ্টেম্বর ১৯২৬ (৭ আশ্বিন ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। কলোন, জার্মানী চাহিয়া দেখো রসের স্রোত
২৪ সেপ্টেম্বর ১৯২৬ (৭ আশ্বিন ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। কলোন, জার্মানী তুমি ঊষার সোনার বিন্দু
২৫
সেপ্টেম্বর
১৯২৬ (৮ আশ্বিন
১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)।
ডুসেল্ডর্ফ জার্মানী।
গানে
গানে তব বন্ধন যাক টুটে [পূজা-১০] [তথ্য]
৬ অক্টোবর ১৯২৬ (১৯ আশ্বিন ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। বার্লিন জার্মানী আপনি আমার কোন্খানে
১১ অক্টোবর ১৯২৬ (২৪ আশ্বিন ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। প্রাগ ওগো সুন্দর, একদা কী জানি
১২ অক্টোবর ১৯২৬ (২৫ আশ্বিন ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। প্রাগ কোথায় ফিরিস পরম শেষের অন্বেষণে
২০ অক্টোবর ১৯২৬ (৩ কার্তিক ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। ভিয়েনা আকাশে তোর তেমনি ছুটি
২৭ অক্টোবর ১৯২৬ (১০ কার্তিক ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। বুদাপেস্ট পথ এখনো শেষ হল না
৩০ অক্টোবর ১৯২৬ (১৩ কার্তিক ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। বুদাপেস্ট দিনের বেলায় বাঁশি তোমার বাজিয়েছিলে
৯ নভেম্বর ১৯২৬ (২৩ কার্তিক ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। বালাটন ফ্যুরেড, হাঙ্গেরি পান্থ পাখির রিক্ত কুলায়
১৩ নভেম্বর ১৯২৬ (২৭ কার্তিক ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। জাগ্রেভ, চেকোশ্লাভাকিয়া। অরূপ তোমার বাণী। [প্রথম খসড়া, ৯ পংক্তি, ৫ অগ্রহায়ণ]। পূর্ণাঙ্গ রূপ দেন ২১ নভেম্বর ১৯২৬(৫ অগ্রহায়ণ ১৩৩৩)
২৪ নভেম্বর ১৯২৬ (৮ অগ্রহায়ণ ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)। ডার্ডানেলিস বাঁশি বাজাই নি কি পথের ধারে
২৫ নভেম্বর ১৯২৬
(৯ অগ্রহায়ণ
১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)।
পিরিউস
ক্ষত যত ক্ষতি যত মিছে হতে মিছে [পূজা-৩৩২]
[তথ্য]
২৫ নভেম্বর ১৯২৬
(৯ অগ্রহায়ণ
১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)।
পিরিউস
যা পেয়েছি প্রথম দিনে
[পূজা-৫৮৪] [তথ্য]
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় তাঁর 'গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচী' গ্রন্থে একটি গানের রচনাকাল উল্লেখ করেছেন 'মাঘ ১৩৩৩'। গানটি হলো-
ওরে, তোরা যারা শুনবি না [পূজা-৩৩৬] [তথ্য] উল্লেখ্য গানটির সুর পাওয়া যায় নি।
এছাড়া মাঘ মাসে রচিত গানগুলোর যে তালিকা পাওয়া যায়, তা হলো-
RBVBMS 027 পাণ্ডুলিপিতে
৪ মাঘ ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ।
ওরে, কী শুনেছিস ঘুমের ঘোরে [প্রেম-১৪৫]
[তথ্য]
৫ মাঘ ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ।
পূর্বগগনভাগে দীপ্ত হইল সুপ্রভাত[পূজা-২৬৫]
[তথ্য]
শান্তিনিকেতন থাকাকালে রবীন্দ্রনাথ
নিম্নোক্ত গানগুলো রচনা করেন।
৯ ফাল্গুন [২১ ফেব্রুয়ারি ১৯]
পুরানো জানিয়া চেয়ো না আমারে
১৪ ফাল্গুন [২৬ ফেব্রুয়ারি]
কেন পান্থ হে চঞ্চলতা
১৫ ফাল্গুন [২৭ ফেব্রুয়ারি]
গগনে গগনে আপনার মনে
১৬ ফাল্গুন [২৮ ফেব্রুয়ারি]
নির্মল কান্ত, নমো হে নমো
১৭ ফাল্গুন [১ মার্চ ] হায়
হেমন্তলক্ষ্মী, তোমার নয়ন
১৮ ফাল্গুন [২ মার্চ ] তোমার
আসন পাতব কোথায়
১৯ ফাল্গুন [৩ ফেব্রুয়ারি ]
মনে রবে কি না রবে আমারে
১৯ ফাল্গুন [৩ ফেব্রুয়ারি ]
চরণরেখা তব যে পথে দিলে দেখা।
নটরাজ-ঋতুরঙ্গশালা ১৩৩৩ বঙ্গাব্দের বসন্তকালে (ফাল্গুন-চৈত্র) রচিত হয়েছিল। এই গ্রন্থ উপলক্ষে তিনি যে গানগুলো রচনা করেছিলেন, তার তালিকা দেওয়া হলো।
১৪ ফাল্গুন। কেন পান্থ এ চঞ্চলতা [প্রকৃতি-৯৩] [তথ্য]
১৫ ফাল্গুন। গগনে গগনে আপনার মনে কী খেলা তব [প্রকৃতি ৯১] [তথ্য]
২ চৈত্র। মুখখানি কর মলিন [প্রেম-১৬৪] [তথ্য]
চৈত্র। তপের তাপের বাঁধন কাটুক [প্রকৃতি-৮৯] [তথ্য]
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় তাঁর 'গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচী' গ্রন্থে ১৩৩৩ বঙ্গাব্দের চৈত্র মাসে রচিত একটি গানের কথা উল্লেখ করেছেন। গানটি হলো-
আরাম-ভাঙা উদাস সুরে [পূজা-৩৮৬] [তথ্য]