বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে
পাঠ ও পাঠভেদ:
জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে,
বন্ধু হে আমার, রয়েছ দাঁড়ায়ে॥
এ মোর হৃদয়ের বিজন আকাশে
তোমার মহাসন আলোতে ঢাকা সে,
গভীর কী আশায় নিবিড় পুলকে
তাহার পানে চাই দু বাহু বাড়ায়ে॥
নীরব নিশি তব চরণ নিছায়ে
আঁধার-কেশভার দিয়েছে বিছায়ে।
আজি এ কোন্ গান নিখিল প্লাবিয়া
তোমার বীণা হতে আসিল নাবিয়া!
ভুবন মিলে যায় সুরের রণনে,
গানের বেদনায় যাই যে হারায়ে॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: RBVBMS 112 [ নমুনা ]
পাঠভেদ:
ভাবসন্ধান: রবীন্দ্রনাথ জীবনকে
মৃত্যুদ্বারা খণ্ডিত মনে করেননি কখনো। জীবন এবং মরণের ঈশ্বর তথা
সৃষ্টিকর্তা যেন কবির বন্ধুরূপে সর্বত্রব্যাপ্ত হয়ে রয়েছেন। তিনি
অনন্ত-অসীম। হূদয়ের একক পরিসরে ‘তাঁর’ জন্য আলোকদীপ্ত আসন পেতে ‘তাঁর’
অভিমুখে বাহু বিস্তার করে চেয়ে রয়েছেন পুলকিত কবি। চিত্তগহনে কোন্-এক আশা
পোষণ করে সেই আসনের দিকে তাঁর চেয়ে-থাকা। তিনি কি এ আসনে এসে বসবেন?
অন্ধকার নিশীথের কালো কেশ নীরবে স্রষ্টার চরণ মুছিয়ে চতুর্দিকে বিস্তৃত হয়ে
রয়েছে। ‘তাঁর’ বীণা থেকে আশ্চর্য এক সঙ্গীত নেমে এসে বিশ্ব চরাচরকে প্লাবিত
করছে। সে সুরের ঝঙ্কারে সমস্ত ভুবন মিলিয়ে যাচ্ছে আর, সে সুরের সংবেদনে কবি
হারিয়ে ফেলছেন নিজেকে।
মৃত্যুতে জীবনকে নিঃশেষে লীন করবার গভীর আনন্দ গানটিতে নিহিত। গানটিকে
মৃত্যুর গান বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে।
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান:
পলাতকা-র
পাণ্ডুলিপি
[RBVBMS 112
]-'র
সাথে
১৮টি গান পাওয়া যায়।
উক্ত পাণ্ডুলিপির ৯০ পৃষ্ঠায় এই গানটি রয়েছে। এর সাথে স্থান ও রচনাকালের উল্লেখ নেই।
প্রশান্তকুমার পাল তাঁর
রবিজীবনী সপ্তম খণ্ডে (আনন্দ
পাবলিশার্স, জুন ২০০৭,
পৃষ্ঠা ৩৭১)−
এই গানটিসহ আরও ১৫টি গানের রচনাকাল ১৩২৫ বঙ্গাব্দের ২৪ অগ্রহায়ণের পূর্বে (১৭
অগ্রহায়ণের পরে) রচিত বলে- অনুমান করেছেন।
২৪ই অগ্রহায়ণে
রবীন্দ্রনাথ
শান্তিনিকেতন থেকে রাণুকে লিখেছেলেন-
'..এ দিকে রোজ আমার একটা করে নতুন গান
বেড়েই চলেছে। ...প্রায় পনেরোটা গান শেষ হয়ে গেল। [চিঠিপত্র ১৮, বিশ্বভারতী, মাঘ
১৪২০, পৃষ্ঠা ১১৩]।
এই সময়
রবীন্দ্রনাথের
বয়স ছিল ৫৭ বৎসর ৭ মাস।
[দেখুন: ৫৭ বৎসর
অতিক্রান্ত বয়সে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ
গীতিবীথিকা (বৈশাখ ১৩২৬ বঙ্গাব্দ )। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরকৃত স্বরলিপিসহ মুদ্রিত হয়েছিল।
প্রবাহিনী (বিশ্বভারতী ১৩৩২ বঙ্গাব্দ)। পূজা ২। পৃষ্ঠা: ৫৪। [নমুনা]
স্বরবিতান চতুস্ত্রিংশ (৩৪, গীতিবীথিকা ) খণ্ডের (আষাঢ় ১৪১৩) ১৭ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৫৭-৫৮। [স্বরলিপি]
পত্রিকা:
তত্ত্ববোধিনী
(ফাল্গুন ১৮৪৫ শকাব্দ ১৩৩০ বঙ্গাব্দ)।
বেহাগ-রূপকড়া।
পৃষ্ঠা: ৩২৮।
[তত্ত্ববোধিনী
পত্রিকায় প্রকাশিত রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
প্রবাসী (আশ্বিন ১৩৩২), দ্বিতীয় অঙ্ক, হিমির গান। গানটির প্রথম পংক্তি 'জীবনমরণের সীমানা পারায়ে' উল্লেখ আছে। পৃষ্ঠা: ৭৮৪। [নমুনা]
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
স্বরলিপি [নমুনা]
স্বরলিপিকার:
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
[দিনেন্দ্রনাথ
ঠাকুর-কৃত রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্বরলিপির তালিকা]
রাগ: বেহাগ। তাল রূপকড়া [তত্ত্ববোধিনী (ফাল্গুন ১৮৪৫ শকাব্দ ১৩৩০ বঙ্গাব্দ)]।
রাগ: বেহাগ। তাল: রূপকড়া। [রবীন্দ্রসংগীতের ক্রমবিকাশ ও বিবর্তন। ডঃ দেবজ্যোতি দত্ত মজুমদার (সাহিত্যলোক, ডিসেম্বর ১৯৮৭)]
রাগ : বেহাগ। তাল : রূপকড়া। [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬।] পৃষ্ঠা: ৫২
রাগ
:
বেহাগ। তাল :
রূপকড়া।
[রাগরাগিণীর এলাকায়
রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, জুলাই ২০০১], পৃষ্ঠা:
৯৩।
[বেহাগ
রাগে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
গ্রহস্বর: মপা।
লয়: মধ্য।