বিষয়: 
		রবীন্দ্রসঙ্গীত। 
		গান সংখ্যা:
		শিরোনাম: 
		
      তোমারি 
      ঝরনাতলার নির্জনে
পাঠ ও পাঠভেদ:
তোমারি ঝরনাতলার নির্জনে
মাটির এই কলস আমার ছাপিয়ে গেল কোন্ ক্ষণে॥
রবি ঐ অস্তে নামে শৈলতলে,
বলাকা কোন্ গগনে উড়ে চলে—
আমি এই করুণ ধারার কলকলে
নীরবে কান পেতে রই আনমনে
তোমারি ঝরনাতলার নির্জনে॥
দিনে মোর যা প্রয়োজন বেড়াই তারি খোঁজ করে,
মেটে বা নাই মেটে তা ভাবব না আর তার তরে।
সারাদিন অনেক ঘুরে দিনের শেষে
এসেছি সকল চাওয়ার বাহির-দেশে,
নেব আজ অসীম ধারার তীরে এসে
প্রয়োজন ছাপিয়ে যা দাও সেই ধনে
তোমারি ঝরনাতলার নির্জনে॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: RBVBMS 112 [নমুনা]
পাঠভেদ: পাণ্ডুলিপিতে 'নির্জন' শব্দটির বানান 'নির্জ্জন' আছে।
		ভাবসন্ধান:
		“তোমার সুরের ধারা” গানে 
		যে-ঝরনার ইঙ্গিত রয়েছে, সেই সুরের বা গানের ঝরনাধারায় কবির মৃত্পাত্র ভরে 
		উপচে পড়ছে এই গানের শেষে। সূর্যাস্তবেলায় দূর গগনে যখন বলাকা পাঁতি উড়ে 
		যাচ্ছে, তখন কবি সেদিকে চেয়ে থেকে ঝরনাধারার করুণ কলধ্বনির সুর শুনছেন কান 
		পেতে।
		
		দিনের কাজের ব্যস্ততা-শেষে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির ভাবনা স্থগিত করে দিনশেষে 
		সকল আকাঙ্ক্ষা এবং প্রয়োজন ছাপিয়ে-যাওয়া সুরধারার ঐশ্বর্যময় প্রসাদ পেতে 
		চান কবি।
		
		গানের সুর-ছন্দ স্থায়ী-অন্তরা-আভোগে বেশ চঞ্চল আনন্দতানে ঝঙ্কৃত। সঞ্চারীর 
		সুর “মেটে বা নাই মেটে তা” বক্তব্যের অন্তিমে একটু বিষণষ-মন্থর হয়ে 
		পরক্ষণেই “ভাবব না আর তার তরে” সুরে বিষণষতাকে অস্বীকার করে। তার পরেই 
		সুরের কারুকার্যময় গতি যেন প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসেব অগ্রাহ্য করে প্রাণময় 
		ছন্দে মুখর হয়ে ওঠে।
 
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: পলাতকা- [RBVBMS 112]-র সাথে ১৮টি গান পাওয়া যায়। উক্ত পাণ্ডুলিপির ৯৮ পৃষ্ঠায় এই গানটি রয়েছে। এর সাথে স্থান ও রচনাকালের উল্লেখ নেই। প্রশান্তকুমার পাল তাঁর রবিজীবনী সপ্তম খণ্ডে (আনন্দ পাবলিশার্স, জুন ২০০৭, পৃষ্ঠা ৩৭১)− এই গানটিসহ আরও ১৫টি গানের রচনাকাল ১৩২৫ বঙ্গাব্দের ২৪ অগ্রহায়ণের পূর্বে (১৭ অগ্রহায়ণের পরে) রচিত বলে- অনুমান করেছেন। প্রশান্তকুমার পাল এই অনুমান করেছেন রানু (রানু অধিকারী)-কে লেখা একটি চিঠির সূত্রে। উল্লেখ্য, ২৪ই অগ্রহায়ণে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন থেকে রাণুকে লিখেছেলেন-
		        '২৪ 
		অগ্রহায়ণ-এ রাণু-কে লিখিত চিঠি থেকে জানা যায়- '...এ দিকে রোজ আমার একটা 
		করে নতুন গান বেড়েই চলেছে। ...প্রায় পনেরোটা গান শেষ হয়ে গেল। 
		[চিঠিপত্র ১৮, বিশ্বভারতী, মাঘ ১৪২০, পৃষ্ঠা ১১৩]।
		
এই সময় 
		রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৫৭ বৎসর 
		৭ মাস।
            [দেখুন:
		৫৭ বৎসর 
		অতিক্রান্ত বয়সে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গীতিবীথিকা (বৈশাখ ১৩২৬ বঙ্গাব্দ)। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।
প্রবাহিনী (বিশ্বভারতী ১৩৩২ বঙ্গাব্দ)। পূজা ১১। পৃষ্ঠা: ৬১। [নমুনা]
			
			
			স্বরবিতান চতুস্ত্রিংশ 
		(৩৪,
      		
		
গীতিবীথিকা 
			) খণ্ডের (আষাঢ় 
		১৪১৩) ১০ম গান।
      		
			পৃষ্ঠা ৩৫-৩৭। 
			[স্বরলিপি]
 
		
		
		প্রকাশের কালানুক্রম: 
		১৩২৬ 
		বঙ্গাব্দের বৈশাখ মাসে প্রকাশিত 'গীতিবীথিকা'য় এই গানটি অন্তর্ভুক্ত 
		হয়েছিল। এরপর ১৩৩২ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ মাসে প্রকাশিত 'প্রবাহিনী' গ্রন্থে 
		প্রকাশিত হয়। 
		
		১৩৩৮ বঙ্গাব্দে গীতবিতানের 
		দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম 
		সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে গানটি গীতবিতানের 
		প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় সংস্করণে 
		অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৩৮০ বঙ্গাব্দে গীতবিতানের অখণ্ড সংস্করণে গানটি 
		অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল।
 
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
		স্বরলিপিকার:
		
		
		দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
		
            
		 [দিনেন্দ্রনাথ 
			ঠাকুর-কৃত রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্বরলিপির তালিকা]      
রাগ ও তাল:
			
			
			স্বরবিতান চতুস্ত্রিংশ 
		(৩৪,
      		
			
			গীতিবীথিকা
			
			) খণ্ডের (আষাঢ় 
		১৪১৩)। 
			
			উক্ত 
স্বরলিপিটি ৩।৩ 
মাত্রা ছন্দে
			
			'দাদরা'
			
			তালে
			নিবদ্ধ।
                  
			
			[দাদরা 
তালে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
রাগ কেদারা-ছায়ানট। তাল দাদরা [রবীন্দ্রসংগীত : রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬], পৃষ্ঠা: ৫৭ ।
বিষয়াঙ্গ: ভক্তিগীতি
সুরাঙ্গ: কীর্তনাঙ্গ
গ্রহস্বর: নর্সা।
লয়: ঈষৎ দ্রুত।