বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
জাগ' জাগ'
রে জাগ' সঙ্গীত-
চিত্ত অম্বর কর তরঙ্গিত
পাঠ ও পাঠভেদ:
জাগ' জাগ' রে জাগ' সঙ্গীত― চিত্ত অম্বর কর তরঙ্গিত
নিবিড়নন্দিত প্রেমকম্পিত হৃদয়কুঞ্জবিতানে॥
মুক্তবন্ধন সপ্তসুর তব করুক বিশ্ববিহার,
সূর্যশশিনক্ষত্রলোকে করুক হর্ষ প্রচার।
তানে তানে প্রাণে প্রাণে গাঁথ' নন্দনহার।
পূর্ণ কর' রে গগন-অঙ্গন তাঁর বন্দনগানে ॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: RBVBMS 478। [নমুনা ১৮৭]
পাঠভেদ:
পাণ্ডুলিপির সঙ্গে গীতবিতানের কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
যেমন-
জাগ জাগরে জাগ সঙ্গীত,
চিত্ত অম্বর কর তরঙ্গিত
[পাণ্ডুলিপি
Ms.478]
জাগো জাগো রে জাগ, সঙ্গীত,
চিত্ত-অম্বর করো তরঙ্গিত,
গীতবিতান দ্বিতীয়
খণ্ড,
প্রথম সংস্করণ (বিশ্বভারতী, ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ)।
জাগ জাগ রে জাগো, সঙ্গীত,
চিত্ত-অম্বর কর তরঙ্গিত, :
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)।
জাগ' জাগ'
রে জাগ' সঙ্গীত―
চিত্ত অম্বর কর তরঙ্গিত
অখণ্ড সংস্করণ,
তৃতীয়
সংস্করণ
(বিশ্বভারতী,
পৌষ ১৩৮০
বঙ্গাব্দ)
সূর্যশশিনক্ষত্রলোকে করুক হর্ষ প্রচার
:পাণ্ডুলিপি
Ms.478
গীতবিতান দ্বিতীয়
খণ্ড,
প্রথম সংস্করণ (বিশ্বভারতী, ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ)।
অখণ্ড সংস্করণ,
তৃতীয়
সংস্করণ
(বিশ্বভারতী,
পৌষ ১৩৮০
বঙ্গাব্দ)
সূর্যশশী-নক্ষত্রলোকে করুক হর্ষ প্রচার
:
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)।
ভাবসন্ধান:
‘গান’ পর্যায়ের এই গীতখণ্ডটি স্রষ্টার বন্দনাগান হিসেবে রচিত হয়েছে।
ধ্রুপদভঙ্গিম গানটির ভাষা সহজ নয়, বেশ গুরুগম্ভীর। পরস্পর যুক্তধ্বনির
বিন্যাসে-চলনে মাঘোত্সবের এ গানের ভঙ্গিটি ধীর, পূজার অনুকূল সাধুভাবপূর্ণ।
“তানে তানে প্রাণে প্রাণে গাঁথ” বাক্যাংশে শুধু সহজতা এসেছে। প্রথম অন্তরায়
বারংবার ঙ ম ন ঞ নাসিক্য ধ্বনি যুক্তব্যঞ্জনের আরম্ভে বিন্যস্ত হয়ে
ধ্বনিসংঘাতের মাধুর্য বিস্তার করেছে।
হূদয়কুঞ্জ যখন নিবিড় প্রেমানন্দে আন্দোলিত, তখন চিত্ত-আকাশও সঙ্গীতধ্বনিতে
হিল্লোলিত হোক এই প্রার্থনা প্রথম অন্তরাতে। পরেই বলা হয়েছে—হে সঙ্গীত,
তোমার বন্ধমুক্ত সাতটি স্বর বিহঙ্গের মতো ঘুরে ফিরুক বিশ্বে,
রবিচন্দ্রতারকালোকে যেন আনন্দ-প্রবাহ বিস্তৃত হয়। গানের সুরে সুরে প্রাণের
সঙ্গে প্রাণের মাল্যবন্ধন হোক স্বর্গকাননের ফুলে। এতে সমগ্র আকাশপ্রাঙ্গণ
‘তাঁর’ বন্দনসঙ্গীতে পূর্ণ হয়ে উঠবে।
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান:
গানটির রচনাকাল
সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায় নাই। গানটি
১৩১৬ বঙ্গাব্দের ১১ মাঘ
[সোমবার, ২৪ জানুয়ারি ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দ],
৮০তম মাঘোৎসবের
সাংবৎসরিক মাঘোৎসব পরিবেশিত
হয়েছিল। সম্ভবত গানটি এই মাঘোৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথ গানটি রচনা করেছিলেন। এই
সূত্রে
ধারণা করা যায়, গানটি রবীন্দ্রনাথের ৪৮ বৎসর ৮-৯ মাস বয়সের রচনা।
[৪৮
বৎসর
অতিক্রান্ত বয়সে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
কাব্যগ্রন্থ, দশম খণ্ড [ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দ, ১৩২৩ বঙ্গাব্দ। ধর্ম্ম সঙ্গীত। পৃষ্ঠা: ২৭৩-২৭৪] [নমুনা: ২৭৩, ২৭৪]
দ্বিতীয় সংস্করণ [ইন্ডিয়ান প্রেস। ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ, ১৩১৬ বঙ্গাব্দ। ব্রহ্মসঙ্গীত। দেশ-ঝাঁপতাল পৃষ্ঠা: ৩৬৪] [নমুনা]
গীতলিপি ১ম ভাগ (মাঘ ১৩১৬ বঙ্গাব্দ, ১৬ জানুয়ারি ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ)। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কৃত স্বরলিপিসহ মুদ্রিত হয়েছিল।
গীতিচর্চ্চা (বিশ্বভারতী, পৌষ ১৩৩২ বঙ্গাব্দে)। ৮১ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৬১-৬২। [নমুনা: ৬১, ৬২]
ধর্ম্ম সঙ্গীত (ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস ১৩২১ বঙ্গাব্দ)। পৃষ্ঠা: ১৫৮ [নমুনা]
স্বরবিতান ষট্ত্রিংশ (৩৬) খণ্ডের (ফাল্গুন ১৪১৩) ১৯ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ৪৩-৪৪।
সঙ্গীত প্রকাশিকা
(মাঘ ১৩১৬ বঙ্গাব্দ)।
সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কৃত স্বরলিপিসহ মুদ্রিত হয়েছিল।
[সঙ্গীত
প্রকাশিকা পত্রিকায় প্রকাশিত রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
অনুষ্ঠান:
১৩১৬ খ্রিষ্টাব্দের মাঘোৎসবের সায়ংকালীন অধিবেশনে গানটি গীত হয়েছিল।
রেকর্ডসূত্র: এই গানটির রেকর্ড প্রকাশ করেছিল গ্রামোফোন রেকর্ড
কোম্পানি। রেকর্ড প্রকাশের তারিখ জানা যায় নি। গানটির শিল্পী ছিলেন
ব্রজেন্দ্রলাল গাঙ্গুলী। রেকর্ড নম্বর
12-12567/12-12566।
[সূত্র: রেকর্ডে
রবীন্দ্রসংগীত। সিদ্ধার্থ ঘোষ। ইন্দিরা সংগীত-শিক্ষায়তন। নভেম্বর ১৯৮৯।
পৃষ্ঠা ৪২]
পরিবেশনা: ১৩১৬ বঙ্গাব্দের মাঘোৎবের
সায়ংকালীন অধিবেশনে গানটি গীত হয়েছিল।
প্রকাশের
কালানুক্রম:
গানটি প্রকাশিত হয়েছিল
সঙ্গীত প্রকাশিকা
পত্রিকার মাঘ ১৩১৬ সংখ্যায়। একই মাসে
সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কৃত স্বরলিপিসহ 'গীতলিপি'
প্রথম ভাগ-এ গানটি অন্তর্ভুক্ত প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর
১৩১৬ বঙ্গাব্দ মাঘোৎসবের সায়ংকালীন অধিবেশনে গানটি গীত হয়েছিল।
ওই বছরেই তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার ফাল্গুন সংখ্যায় গানটি প্রকাশিত হয়েছিল।
১৩১৬ বঙ্গাব্দে (১৯০৯
খ্রিষ্টাব্দ) 'গান' নামক গ্রন্থের 'ব্রহ্মসঙ্গীত' অংশে অন্তর্ভুক্ত হয়ে
গানটি প্রকাশিত হয়েছিল। ১৩২১ বঙ্গাব্দে ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস থেকে
'ধর্ম্ম সঙ্গীত' নামে পৃথক একটি গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়ে
প্রকাশিত হয়। ১৩২৩ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের দশম খণ্ডে
এই গানটি
ধর্ম্ম সঙ্গীত অংশে এই যুক্ত হয়। ১৩৩২ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসে
প্রকাশিত 'গীতিচর্চ্চা'-য় এই গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
১৩৩৮ বঙ্গাব্দে গীতবিতানের দ্বিতীয় খণ্ডের প্রথম সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত
হয়। এরপর ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে গানটি গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের, দ্বিতীয়
সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৩৮০ বঙ্গাব্দে গীতবিতানের অখণ্ড সংস্করণে গানটি
অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল।
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলি:
ভাঙা গান:
উত্তরভারতীয়
একটি ধ্রুপদের সুরাবলন্বনে রবীন্দ্রনাথ এই গানটি রচনা করেছিলেন।
এর মূল গানটি হলো―
তিলককামোদ
।
তেওরা
(দ্রুতগতি)
প্রথম পরবর দিগারহি নাদকো রচো
ওঙ্কাররূপ ভয়ো নিরঞ্জন কর কর বিস্তার
খটসুর করত ত্রিবিধ বিধান॥
খটরাগকী খটত্রিশ রাগিণী শুনত বেদ প্রমাণ
রট দেব নাগ গন্ধর্ব কিন্নর ঔর নর জান,
কর বীণ কর সুর সাধ বাণী সহিত রাগকী তান;
নিত গাবত শিব শঙ্কর হরনাথ করত বখান॥
[সূত্র: রবীন্দ্রসঙ্গীত-গবেষণা-গ্রন্থমালা তৃতীয় খণ্ড। ২৬ বৈশাখ ১৩৬৭ শ্রীপ্রফুল্লকুমার দাস।
সুরঙ্গমা।
পৃষ্ঠা: ৬৪-৬৫।]
[রবীন্দ্রনাথের
ভাঙা গানের তালিকা]
স্বরলিপিকার: [সুরেন্দ্রনাথ
বন্দ্যোপাধ্যায়]
[সুরেন্দ্রনাথ
বন্দ্যোপাধ্যায়-কৃত রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্বরলিপির তালিকা]
রাগ ও তাল:
রাগ-দেশ।
তাল-তেওরা।
[স্বরবিতান ষট্ত্রিংশ (৩৬)
খণ্ডের
(ফাল্গুন ১৪১৩)।
পৃষ্ঠা ৪৩-৪৪]
[দেশ রাগে নিবদ্ধ
রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
[তেওরা তালে
নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
রাগ: দেশ। তাল: তেওরা। [রবীন্দ্রসংগীত : রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। (প্যাপিরাস, জানুয়ারি ১৯৯৩)] পৃষ্ঠা: ৫২।
পর্যায়: ব্রহ্মসঙ্গীত। [রবীন্দ্রনাথের রচিত ব্রহ্মসঙ্গীতের তালিকা]