বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
তুমি একলা ঘরে ব'সে ব'সে কী সুর বাজালে
পাঠ ও পাঠভেদ:
তুমি একলা ঘরে বসে বসে কী সুর বাজালে
প্রভু, আমার জীবনে !
তোমার পরশরতন গেঁথে গেঁথে আমায় সাজালে
প্রভু, গভীর গোপনে ॥
দিনের আলোর আড়াল টানি কোথায় ছিলে নাহি জানি,
অস্তরবির তোরণ হতে চরণ বাড়ালে
আমার রাতের স্বপনে ॥
আমার হিয়ায় হিয়ায় বাজে আকুল আঁধার যামিনী,
সে যে তোমার বাঁশরি।
আমি শুনি তোমার আকাশপারের তারার রাগিণী,
আমার সকল পাশরি।
কানে আসে আশার বাণী― খোলা পাব দুয়ারখানি
রাতের শেষে শিশির-ধোওয়া প্রথম সকালে
তোমার করুণ কিরণে ॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: [RBVBMS 111] [পাণ্ডুলিপি]
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: এই গানটির
রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। এই গানটির মূল পাঠ
পাওয়া যায়, রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি
RBVBMS 111
-র ১৩০
পৃষ্ঠায়। কিন্তু এর সাথে রচনাকাল বা স্থানের উল্লেখ
নেই। এই পাণ্ডুলিপির ১২৭ পৃষ্ঠায়
'The
Lamp is trimmed'
কবিতাটির
সাথে তারিখ উল্লেখ আছে '৩১ জানুয়ারি [১৮ মাঘ]'। এই বিচারে ধারণা করা যায়
গানটি ১৮ই মাঘের পরে রচিত।
এই সময়
রবীন্দ্রনাথের
বয়স ছিল ৫৬ বৎসর ৯-১০ মাস।
আবার এই পাণ্ডুলিপির
১৩৪ পৃষ্ঠায় পাওয়া যায়, 'আজি
বিজন ঘরে নিশীথরাতে আসবে যদি শূন্যহাতে' গানটি। পাণ্ডুলিপি অনুসারে ধারণা
করা যায়, আলোচ্য গানটি 'আজি
বিজন ঘরে...' আগে রচিত। সীতাদেবী তাঁর পূণ্যস্মৃতি গ্রন্থে
(বিশ্বভারতী, অগ্রহায়ণ ১৪২২, পৃষ্ঠা ১২৭) এই গানটি সম্পর্কে লিখেছেন—
"শ্রীপঞ্চমীর দিন [৩ ফাল্গুন শুক্রবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি] ছেলেরা দল বাঁধিয়া সুরুলে বনভোজন করিতে চলিল। রবীন্দ্রনাথও বিকালে সেখানে যাইবেন শুনিয়া আমরা মেয়ের দলও উৎসাহ করিয়া চলিলাম।... তাহার পর কবি যেখানে বসিয়া ছিলেন সেইখানে গিয়া উপস্থিত হইলাম। তিনি আমাদের আকস্মিক আবির্ভাবে কিঞ্চিৎ বিস্মিত হইয়াছিলেন বোধ হয়, যাহা হউক, হাসিমুখেই বসিতে বলিলেন। নিজের দুই-একটি কবিতা পড়িয়া শুনাইলেন, তাহার পর শুরু হইল গানের পালা। পণ্ডিত ভীমরাও শাস্ত্রী কয়েকটি হিন্দী গান করিলেন, তাহার পর 'ফাল্গুনী' উজাড় করিয়া বসন্তের গান চলিল। 'আজি বিজন ঘরে নিশীথরাতে আসবে যদি শূন্যহাতে' গানটি কবি সেইদিনই রচনা করিয়াছিলেন বোধ হয়, সর্বশেষে সেই গানটি তিনি একলা গাহিয়া শুনাইলেন।"
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, তাঁর গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচী গ্রন্থে গানটির রচনাকাল উল্লেখ করেছেন- আশ্বিন ১৩২৫। এই বিচারে গানটির রচনাকালের সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৫৭ বৎসর ৫ মাস।
স্বরবিতান ষোড়শ (১৬, গীতপঞ্চাশিকা। আশ্বিন ১৪১৩) খণ্ডের ৩৩ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ১১৪-১৬।
রেকর্ড: ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে এএইচএমভি
বিভিন্ন শিল্পীর কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীতের রেকর্ড প্রকাশ করে। এই সময় এই
গানটি রেকর্ডে গেয়েছিলেন হরেন্দ্রনাথ দত্ত। রেকর্ড নম্বর ছিল
P 7058।
[সূত্র:
রেকর্ডে রবীন্দ্রসংগীত। সিদ্ধার্থ ঘোষ। ইন্দিরা সংগীত-শিক্ষায়তন।
নভেম্বর ১৯৮৯]
প্রকাশের
কালানুক্রম:
১৩২৫ বঙ্গাব্দের ১১ই আশ্বিন মাসে গানটি
গীতপঞ্চাশিকা -য়
অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর ১৩৩২ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত 'প্রবাহিনী'-তে গৃহীত
যুক্ত হয়।
১৩৩৮ বঙ্গাব্দের আশ্বিন
মাসে প্রকাশিত গীতবিতানের দ্বিতীয় খণ্ডের প্রথম
সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৩৪৮
খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় সংস্করণে এই গানটি
গৃহীত হয় পূজা পর্যায়ে।
পরবর্তীকালে
১৩৭১ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত অখণ্ড
গীতবিতান-এ
গানটি পূজা পর্যায়ের ৩৬ সংখ্যক গান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৩৮০ বঙ্গাব্দের পৌষ
মাসে প্রকাশিত অখণ্ড গীতবিতান
–এ
গানটি পূজা পর্যায়ের ৩৬ সংখ্যক গান হিসেবেই অন্তর্ভুক্ত হয়।
রাগ ও তাল:
স্বরবিতান ষোড়শ
(১৬,
গীতপঞ্চাশিকা।
আশ্বিন
১৪১৩)
খণ্ডে
গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই।
উক্ত স্বরলিপিটি ৪।৪।৪।৪
ছন্দে 'ত্রিতাল'-এ নিবদ্ধ।
মিশ্র কেদার। তাল 'ত্রিতাল'। [[রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬।। পৃষ্ঠা: ৫৪]।
রাগ: কীর্তন, কেদারা।
তাল:
'ত্রিতাল'।
[রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, জুলাই ২০০১],
পৃষ্ঠা: ৯৬।
[ত্রিতালে
নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
[কেদার
রাগে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
গ্রহস্বর: না।
লয়: মধ্য।