বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
আমি তোমায় যত শুনিয়েছিলাম গান
পাঠ ও পাঠভেদ:
আমি তোমায় যত শুনিয়েছিলাম গান
তার বদলে আমি চাই নে কোনো দান॥
ভুলবে সে গান যদি নাহয় যেয়ো ভুলে
উঠবে যখন তারা সন্ধ্যাসাগরকুলে,
তোমার সভায় যবে করব অবসান
এই ক’দিনের শুধু এই ক’টি মোর তান॥
তোমার গান যে কত শুনিয়েছিলে মোরে
সেই কথাটি তুমি ভুলবে কেমন করে?
সেই কথাটি, কবি, পড়বে তোমার মনে
বর্ষামুখর রাতে, ফাগুন-সমীরণে—
এইটুকু মোর শুধু রইল অভিমান
ভুলতে সে কি পার ভুলিয়েছ মোর প্রাণ॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: RBVBMS 112 [ নমুনা]
পাঠভেদ:
চাই নে কোনো দান : কথার অংশ গীতিবীথিকা (বৈশাখ ১৩২৬ বঙ্গাব্দ)
গীতবিতান (আশ্বিন
১৩৩৮ বঙ্গাব্দ)
পাণ্ডুলিপি:
MS. NO
112। পৃষ্ঠা: ৯০]
চাইনি কোনো দান :
স্বরলিপি,
গীতিবীথিকা
(বৈশাখ ১৩২৬ বঙ্গাব্দ)
ভাবসন্ধান: শিল্পী-মানুষ স্রষ্টার
সভাগায়কের ভূমিকা নিয়ে আজীবন তাঁকে গান শোনান। কোনো প্রতিদানের প্রত্যাশা থাকে
না। মানুষের জীবনকাল সীমিত, তাই কালে গান শোনানোর সময়ও ফুরায়। দিনশেষ হলে
সন্ধ্যা-সমুদ্রতীরের আকাশে তারা ফুটে উঠবে একসময়। তার পরে সভাগায়কটির গান ভুলে
যেতে পারেন সভাপ্রধান। এই পরিস্থিতিতে শিল্পী অভিমানী সুরে বলতেই পারেন, “নাহয়
যেয়ো ভুলে”! সুরে সে বেদনাবোধ লুকানো থাকে না।
পৃথিবীর নানা নিসর্গদৃশ্যের ভিতর দিয়ে স্রষ্টাও দিনের পর দিন মোহন সঙ্গীত গেয়ে
শুনিয়েছেন শিল্পীকে তাঁর সারাজীবন। আজ প্রশ্ন, সে কথাই বা মহাগায়ক স্রষ্টা কেমন
করে ভুলবেন? বর্ষণমুখর রাত্রিতে কিংবা ফাগুন-বাতাসে সে-সব কথা ‘তাঁর’ মনে
পড়বেই। এই প্রতীতি বা বিশ্বাস থেকে শিল্পী বলছেন, তুমি যে গান শুনিয়ে আমার
মনোহরণ করেছ, সে-কথাটি কি ভুলতে পারো কখনো?
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান:
পলাতকা-র
পাণ্ডুলিপি'র
সাথে
[RBVBMS 112 ]
১৮টি গান পাওয়া যায়।
উক্ত পাণ্ডুলিপির ৯০ পৃষ্ঠায় এই গানটি রয়েছে। এর সাথে স্থান ও রচনাকালের উল্লেখ নেই।
প্রশান্তকুমার পাল তাঁর
রবিজীবনী সপ্তম খণ্ডে (আনন্দ
পাবলিশার্স, জুন ২০০৭,
পৃষ্ঠা ৩৭১)−
এই গানটিসহ আরও ১৫টি গানের রচনাকাল ১৩২৫ বঙ্গাব্দের ২৪ অগ্রহায়ণের পূর্বে (১৭
অগ্রহায়ণের পরে) রচিত বলে- অনুমান করেছেন।
২৪ই অগ্রহায়ণে
রবীন্দ্রনাথ
শান্তিনিকেতন থেকে রাণুকে লিখেছেলেন-
'..এ দিকে রোজ আমার একটা করে নতুন গান
বেড়েই চলেছে। ...প্রায় পনেরোটা গান শেষ হয়ে গেল। [চিঠিপত্র ১৮, বিশ্বভারতী, মাঘ
১৪২০, পৃষ্ঠা ১১৩]।
এই সময়
রবীন্দ্রনাথের
বয়স ছিল ৫৭ বৎসর ৭ মাস।
[দেখুন: ৫৭ বৎসর
অতিক্রান্ত বয়সে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
গীতিবীথিকা (বৈশাখ ১৩২৬ বঙ্গাব্দ)। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।
প্রবাহিনী (বিশ্বভারতী, অগ্রহায়ণ ১৩৩২ বঙ্গাব্দ)। গীতগান ২৬। পৃষ্ঠা: ২০। [নমুনা]
স্বরবিতান চতুস্ত্রিংশ (৩৪, গীতিবীথিকা) খণ্ডের (বিশ্বভারতী,আষাঢ় ১৪১৩) নবম গান। পৃষ্ঠা ৩১-৩৪। [স্বরলিপি]
রেকর্ডসূত্র: সিদ্ধার্থ ঘোষের রচিত রেকর্ডে রবীন্দ্রসংগীত (ইন্দিরা সংগীত-শিক্ষায়তন। নভেম্বর ১৯৮৯) গ্রন্থ থেকে আলোচ্য গানের দুটি রেকর্ডসূত্রের তথ্য পাওয়া যায়।
১৯৩৬ থেকে ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে হিন্দুস্থান রেকর্ড কোম্পানি থেকে বেশকিছু রবীন্দ্রসঙ্গীতের রেকর্ড প্রকাশিত হয়। এই সময়ের ভিতরে কোম্পানি হরিপদ চট্টোপাধ্যায়-এর কণ্ঠে এই গানটির রেকর্ড প্রকাশ করে। রেকর্ড নম্বর: H278। [পৃষ্ঠা: ৫৮]।
১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র 'জীবন মরণ'-এ
এই গানটি ব্যবহার করা হয়েছিল। শিল্পী ছিলেন কে.এল, সাইগল। গানটির রেকর্ড প্রকাশ
করেছিল হিন্দুস্থান রেকর্ড কোম্পানি। রেকর্ড নম্বর:
H 766।
[পৃষ্ঠা: ৬২]।
প্রকাশের
কালানুক্রম: ১৩২৬ বঙ্গাব্দের বৈশাখ মাসে, 'গীতিবীথিকা' নামক গ্রন্থে
গানটি স্বরলিপিসহ অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর ১৩৩২ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ মাসে
বিশ্বভারতী থেকে প্রকাশিত
প্রবাহিনী
'র গীতগান অংশে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৩৩৮ বঙ্গাব্দে
প্রকাশিত গীতিবীথিকার পাঠটিই
গীতবিতানের দ্বিতীয় খণ্ডের প্রথম
সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৩৪৮
খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় সংস্করণে এই গানটি
গৃহীত হয় পূজা পর্যায়ে।
১৩৭১
বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত গীতবিতানের অখণ্ড সংস্করণে
গানটি পূজা পর্যায়ের পঞ্চম গান হিসেবেই অন্তর্ভুক্ত হয়।
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
স্বরলিপিকার:
দিনেন্দ্রনাথ
ঠাকুর
[দিনেন্দ্রনাথ
ঠাকুরকৃত স্বরলিপির তালিকা]
রাগ ও তাল:
স্বরবিতান চতুস্ত্রিংশ
(৩৪,
গীতিবীথিকা)
খণ্ডে (আষাঢ় ১৪১৩)
গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই।
উক্ত
স্বরলিপিটি
৩।৩।৩।৩
মাত্রা ছন্দে
ত্রিমাত্রিক 'একতাল'-এ
নিবদ্ধ।
[একতালে
নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
[স্বরলিপি]
রাগ:
খাম্বাজ।
তাল:
একতাল
[রবীন্দ্রসংগীত:
রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬।
পৃষ্ঠা: ৩২।
[খাম্বাজ-এ
নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
রাগ:
খাম্বাজ।
তাল একতাল।
[রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, জুলাই
২০০১], পৃষ্ঠা: ৬১।
বিষয়াঙ্গ:
সুরাঙ্গ: রবীন্দ্রনাথের স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের সুর।
গ্রহস্বর: র্সা।
লয়: মধ্য